লালমনিরহাট পৌরসভার পক্ষ থেকে সাপটানা সড়কের নামকরণ করা হলো “বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড চিত্তরঞ্জন দেব সড়ক।” পৌর মেয়র রেজাউল করিম স্বপন এটি বাস্তবায়ন করেন।
গত বছর ৬ ডিসেম্বর কমরেড চিত্তরঞ্জন দেবের ৩৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণ সভায় লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম স্বপন এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। কমরেড চিত্তরঞ্জন দেবের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে সোমবার বিকেলে লালমনিরহাটের সাপটানা সড়কে নামফলক লাগিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা দিলেন পৌরপিতা রেজাউল করিম স্বপন।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, লালমনিরহাটকে মহকুমা ও জেলায় রুপান্তর করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন কমরেড চিত্তরঞ্জন দেব। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার পেছনে তাঁর অবদান ব্যাপক। এ কারণে দল-মত নির্বিশেষে লালমনিরহাটের জনগণ তাঁকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। কিছুদিন আগে লালমনিরহাটের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে কমরেড চিত্তরঞ্জন দেব স্মৃতি টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করে লালমনিরহাট ক্রিকেট একাডেমি।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম স্বপন বলেন, লালমনিরহাটের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম কমরেড চিত্তরঞ্জন দেব। আমাদের এই লালমনিরহাটকে মহকুমা এবং জেলা করার পেছনে উনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের উনি একজন অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর বাড়ির সামনের প্রধান সড়কটির নাম “বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড চিত্তরঞ্জন দেব সড়ক ” হিসেবে লালমনিরহাট পৌরসভার পক্ষ থেকে এ নামকরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও এ শহরের ৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছিলেন, তাদের নামে এবং সাবেক এমপি আলহাজ্ব আবুল হোসেন সাহেব, সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মকবুল হোসেন সাহেব সহ আমাদের জীবন্ত কিংবদন্তি বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন আজিজুল হক বীর প্রতীক এই দশ জনের নামে আমরা লালমনিরহাট পৌরসভার পক্ষ থেকে এই শহরের দশটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। আমি মনে করি আগামী প্রজন্ম এসব গুণী মানুষ সম্পর্কে জানতে পারবে এবং লালমনিরহাটের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের সাথে আরও বেশি পরিচিত হতে পারবে।
কমরেড চিত্তরঞ্জন দেবের কনিষ্ঠ পুত্র জয়ন্ত কুমার দেব তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, প্রথমেই আমি কৃতজ্ঞতা জানাই মাননীয় মেয়র মহোদয়কে। তিনি গত বছর ঘোষণা দিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহরের বিভিন্ন গুণী মানুষদের নামে শহরের প্রধান প্রধান সড়কের নামকরণ করবেন। তিনি তার প্রতিশ্রুতি রেখেছেন এজন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা। ৬ ডিসেম্বরের এই দিনটি লালমনিরহাট মুক্ত দিবস এবং আমার বাবারও মৃত্যুবার্ষিকীর দিন। আসলে আমার বাবা সারাজীবন লালমনিরহাটের খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কাজ করেছেন, চিন্তা করেছেন। তার সকল চিন্তা চেতনাতেই লালমনিরহাট ছিলো। এ কারনেই হয়তো লালমনিরহাটের এই বিজয়ের দিনেই তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। যার কারনে এই দিনটাকে আমরা তার মৃত্যু দিন হিসেবে পালন করি। আমার বাবাকে স্মরণ করে লালমনিরহাট ক্রিকেট একাডেমি মাসব্যাপী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। আমাদের পরিবার তাদের প্রতি ও লালমনিরহাটের সকল মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ।