লালমনিরহাট বার্তা
‘চোখ-মুখ ফুলে যাচ্ছে হাত-পা কালো হয়ে যাচ্ছে কেটে ফেলতে হচ্ছে একের পর এক হাতের আঙুল
স্টাফ রিপোর্টারঃ | ২৯ সেপ, ২০২১, ৭:০৫ AM
‘চোখ-মুখ ফুলে যাচ্ছে হাত-পা কালো হয়ে যাচ্ছে কেটে ফেলতে হচ্ছে একের পর এক হাতের আঙুল
তিন সন্তানের জননী শরিফা বেগম (৩৫)। প্রায় ৪ বছর আগে হঠাৎ হাতে একটি আঙুলে দেখা দেয় ফোঁড়া। এখন হঠাৎ করে‘‘চোখ-মুখ ফুলে যাচ্ছে হাত-পা কালো হয়ে যাচ্ছে কেটে ফেলতে হচ্ছে একের পর এক হাতের আঙুল
স্থানীয় চিকিৎসকের দ্বারায় অপারেশন করেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন যেতেই দেখা দেয় ভিন্ন রোগে। দুই হাতের আঙ্গুলে শক্ত হওয়া চামড়া টুকরো টুকরো হয়ে মাঝে মাঝে খসে পড়ে যায়। চিকিৎসকরা বলছেন, এ রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল এবং দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নিতে হবে। এমনকি এ রোগের চিকিৎসা নিতে ঢাকা অথবা ভারতে যেতে হতে পারে। টাকা খরচ হবে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা।
তিন সন্তানের জননী শরিফা বেগম (৩৫) লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা হলের বানীনগর গ্রামের শামছুল হক দুলুর স্ত্রী। তার স্বামী ভ্যান চালক।
পরিবারের কাছে জানাগেছে, প্রথমে লক্ষণ ছিল একটি আঙ্গুলে ঘাঁয়ের। স্থাণীয় চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিয়ে একটি আঙ্গুল কেঁটে ফেলেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন যেতেই আরেকটি আঙ্গুলে দেখা দেয় একটি রোগের।
রোগটি কি ওই চিকিৎসক জানতেন না। অথচ আঙ্গুল কেঁটে ফেলেন। ধীরে ধীরে চামড়া টুকরো টুকরো হয়ে মাঝে মাঝে খসে পড়ে যায়। এই রোগের চিকিৎসায় সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা প্রত্যাশা চেয়েছেন ভ্যান চালক স্বামী শামছুল হকের পরিবার।
প্রতিবেশী শহিন মিয়ার জানান, চিকিৎসার অভাবে তিন সন্তানের জননী শরিফা বেগমকে মাঝে মাঝে ওষুধ নিয়ে এসে খাওয়াতেন তার স্বামী। কিন্তু কোনভাবেই টুকরো টুকরো হয়ে মাংস খসে পড়ে যাওয়া বন্ধ হত না। এভাবে ভ্যান চালক বহু টাকা শেষ করেছেন। সমাজে অনেক মানুষ আছেন। যারা অসহায় পরিবারকে সাহায্য করতে পারেন। কিন্তু এই পরিবারটির পাশে কেউ নেই বলেও তিনি ওই প্রতিবেশি জানান।
শরিফা বেগমের স্বামী শামছুল হক দুলুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, স্ত্রী আগে স্বাস্থ্যবান ছিল। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তার চেহেরার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। চোখ-মুখ ফুলে গেছে, হাত-পা কালো হয়েছে। কয়কজন চিকিৎসক বলেছেন, এটি ব্লাডক্যান্সার। তাকে দ্রুত চিকিৎসা না করাতে পারলে নাকি বাঁচানো যাবে না।, একজন ভ্যান চালক হয়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা কোথায় পাবো, কে দিবে আমায়?, তাহলে কি আমার স্ত্রীকে বাঁচাতে পারবো না।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ৪ বছর থেকে তার চিকিৎসা করছি। ‘অজ্ঞাত’ এই রোগের চিকিৎসা ও ওষুধ কিনতে গিয়ে নিজের পুঁজিটুকুও শেষ হয়ে গেছে। এখন এলাকার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে কোন রকম দিন চলতে হচ্ছে। নিজ এলাকায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রয়েছেন। তিনি যদি স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য কিছু সাহায্য করেন তবুও কিছু জমি নষ্ট করে স্ত্রী চিকিৎসা করাতে পারবো। তিন সন্তানের মুখে হাসি ফুটাতে পারব।
স্ত্রী শরিফা বেগম বলেন, হাত-পায়ের অনেক স্থানে ঘা হয়েছে। যার ফলে অনেক প্রতিবেশীরা আমার কাছে আসতে চায় না। সন্তানদের ঠিকভাবে আদর করি না। যদি এ রোগ সন্তানদের শরীরে ছড়িয়ে গিয়ে তারা আক্রান্ত হয়। আমি আমার সন্তানদের আদর করতে চাই। সমাজের বিত্তবান অনেক মানুষ আছেন। চিকিৎসার জন্য হাত বাড়িয়ে দিতেন। তবে সুস্থ হয়ে পরিবারের কাছে ফিরে আসতে পারতাম।
তুষভানন্ডার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর ইসলাম বলেন, বিষয়টি স্থানীয় ভাবে জানতে পেরেছি। ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার)কে বলেছি। তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও সমাজ সেবায় আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন। পরিবারটি আবেদন করলে চিকিৎসার জন্য অর্থ পেয়ে যাবেন। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ সাহায্য করা হবে। তাই আমাদের পাশাপাশি সবাই এগিয়ে এসে পরিবারটিকে সাহায্য করার অনুরোধ করেন চেয়ারম্যান নুর ইসলাম।
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে শরিফা বেগমের ভ্যান চালক স্বামী শামছুল হক দুলু বিকাশ নাম্বার ঃ- ০১৭৯৭-৭০৩১৯৮
এই বিভাগের আরও খবর