লালমনিরহাট বার্তা
এক ব্যাক্তির হাতে সকল ক্ষমতা থাকলে গণতন্ত্র চর্চা সম্ভব নয় - গোলাম মোহাম্মদ কাদের
বার্তা ডেস্কঃ | ২৭ আগ, ২০২২, ১০:৪৯ AM
এক ব্যাক্তির হাতে সকল ক্ষমতা থাকলে গণতন্ত্র চর্চা সম্ভব নয় - গোলাম মোহাম্মদ কাদের

পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-কে যারা অন্যায়ভাবে স্বৈরাচার উপাধি দিয়েছেন, তারাই ১৯৯০ সালের পর সংবিধানে কাটাকাটি করে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার সংবিধান সংশোধন করে, দেশে সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এক ব্যাক্তি হাতে সকল ক্ষমতা, তিনি যা বলবেন সেটাই আইন। এটা কখনোই গণতন্ত্র হতে পারে না, এভাবে গণতান্ত্রিক চর্চা হতে পারে না। এক ব্যাক্তির হাতে সকল ক্ষমতা থাকলে গণতন্ত্র চর্চা সম্ভব নয়। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা অনেক মিথ্যাচার করেছে কিন্তু সফল হয়নি। দেশের সাধারণ মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায় পল্লীবন্ধু অক্ষয় হয়ে আছেন। এখন রাজনৈতিক বাস্তবতা হচ্ছে, গণতন্ত্র নিপাত যাক আর স্বৈরতন্ত্র চালু থাক।

আজ ২৭ আগস্ট দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর উপদেষ্টা এবং জাতীয় পার্টি রিচার্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট উইং এর আহবায়ক মনিরুল ইসলাম মিলন এর সভাপতিত্বে সুনীল শুভরায় প্রণীত “ছোটদের পল্লীবন্ধু” গ্রন্থের প্রকাশণা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের একথা বলেন। “ছোটদের পল্লীবন্ধু” বইয়ের মোড়ক উন্মোচণ করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহবায়ক শেরিফা কাদের এমপি।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-কে ছোট করতে অসংখ্য মিথ্যাচার করেছে প্রতিপক্ষরা। তারা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দুর্ণীতিবাজ বলে মিথ্যাচার করেছে। কিন্তু ক্লিনহার্ট আর ওয়ান ইলেভেনের এর সময় দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে পল্লীবন্ধু বা জাতীয় পার্টির কোন নেতার বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। আবার ১৯৯০ সালে যে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকার জন্য পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দন্ডিত করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে আদালতই রায় দিয়েছেন ঐ টাকা জাতীয় পার্টির দলীয় টাকা। সেই টাকা জাতীয় পার্টিকে ফেরত দিতে নির্দেশও দিয়েছে আদালত। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ৯০ সালের পর থেকে ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি করছে। ক্ষমতা হারালে প্রতিপক্ষ দুর্নীতির মামলা দেয়। পরবর্তীতে ক্ষমতায় গিয়ে সেই মামলা তুলে ফেলেন। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের নামে দুর্নীতির যে মামলাগুলো হয়েছিলো, ক্ষমতায় এসে তারা সেই মামলাগুলো তুলে ফেলেছে। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় যেতে না পেরে তাদের নামের মামলাগুলো তুলতে পারেনি। এখন দেশে এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে দুর্নীতি নেই। দুর্নীতি দেশের রন্দ্রে রন্দ্রে প্রবেশ করেছে। তিনি বলেন, পদ্মাসেতু অর্ধেকটা উদ্বোধন হয়েছে কিন্তু এখনো রেলসেতু চালু হয়নি। পদ্মাসেতুতে বিদেশী ঋণ আছে, এটি নিজস্ব অর্থায়নে তৈরী হয়নি। পদ্মায় রেলসেতু উদ্বোধন করতে আরো অনেক অতিরিক্ত টাকা ব্যায় করতে হবে।

এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন ইতিহাসের সব চেয়ে অসাম্প্রদায়িক নেতা। তিনি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণা করেছেন কিন্তু সকল ধর্মের অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন তিনি। হিন্দু, বৌদ্ধ ও খুষ্টানদের জন্য পৃথক কল্যাণ ট্রাষ্ট গঠন করেছিলেন, শুভ জন্মষ্টমিতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিলেন। চাকরি ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের বৈষম্য দূর করেছিলেন পল্লীবন্ধু। হিন্দু সম্প্রদায়সহ সকল সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠির সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিলেন পল্লীবন্ধু। তিনি বলেন, গবেষণায় উঠে এসেছে, আওয়ামী লীগের হাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সব চেয়ে বেশি জমিজমা দখল হয়েছে। আবার বিএনপির হাতের দখল হয়েছে সংখ্যালঘুদের জমিজমা। গ্রামাঞ্চলে এখনো সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্যাতিত হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের হাতে। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরো বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন একজন জননন্দিত নেতা। তাঁর মৃত্যুতে চারটি জনসভায় লাখো মানুষের সমাগম প্রমাণ করে তিনি কতোটা জনপ্রীয় ছিলেন। ১৯৯০ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছে।

এসময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ইতিহাস থেকে পল্লীবন্ধু এরশাদকে মুছে ফেলা যাবে না। ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যার্থ হয়েছে। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশের উন্নয়ণ, সংস্কার আর মানবিকতার ইতিহাসে উজ্জল তারকা হয়ে থাকবেন। এদেশের উন্নয়ণে পল্লীবন্ধুর কীর্তির মাঝে অসংখ্য ব্রীজ রয়েছে। তিনি যমুনা সেতু ও পদ্মাসেতু নির্মাণে উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি বলেন, দেশে ইতিহাস বিকৃতি চলছে। যারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি, বঙ্গবন্ধুকে দেখেনি তারাই ইচ্ছেমত এবং মনগড়া তথ্য দিয়ে ইতিহাস লিখছে। বর্তমান বাস্তবতায় “ছোটদের পল্লীবন্ধু” বইটি শুধু কোমলমতি শিশু নয়, বড়দের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এই বইটি পড়ে পল্লীবন্ধুর ঐতিহাসিক জীবনের কিছু ছবি দেখতে পাবে সবাই।

কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেছেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর উন্নয়ণ এখনো দেশের মানুষ মনে রেখেছে। দেশের মানুষ আবারো পল্লীবন্ধুর স্বর্নযুগে ফিরে যেতে চায়। তিনি বলেন, পল্লীবন্ধুর লাঙ্গল নিয়ে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে যাবো। আমরা সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করবে।

অনুষ্ঠানে লালমনিরহাটের বিশিষ্ট সমাজবেক ও শিক্ষানুরাগী আলহাজ এম.জি. গোলাম ও বিশিষ্ট সমাজসেবক ও ব্যাংকার এ এ এম ওয়াহেদুল ইসলাম জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম কাদের এমপি’র হাতে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য শাহীনারা সুলতানা রীমা-এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কো-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, ফখরুল ইমাম এমপি, সুনীল শুভ রায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সোলায়মান আলম শেঠ, আতিকুর রহমান আতিক, মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের এমপি, মনিরুল ইসলাম মিলন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিন্টু, কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ, লে: কর্ণেল (অব.) তসলিম উদ্দিন, রাকিন আহমেদ, মহিত হাওলাদার, ফারিন হাসান।

এসময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি‘র হাতে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন লালমনিরহাটের বিশিষ্ট সমাজসেবী ও ব্যবসায়ী আলহাজ্ব এম.জি. গোলাম মোস্তফা ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও ব্যাংকার এ এ এম ওয়াহেদুল ইসলাম

উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মমতাজ উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, আমির উদ্দিন আহমেদ ডালু, জসীম উদ্দিন ভূঁয়া, ফখরুল আহসান শাহজাদা, এডভোকেট আব্দুল হামিদ ভাষাণী, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন মুক্তি, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নাসির উদ্দিন সরকার, হুমায়ন খান, এনাম জয়নাল আবেদীন, এম এ রাজ্জাক খান, মাসুদুর রহমান মাসুম, গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আবু সাদেক বাদল, সুজন দে, ডা: সেলিমা খান, ডা: মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল ফাত্তাহ, দ্বীন ইসলাম শেখ। কেন্দ্রীয় নেতা মনিরুজ্জামান টিটু, মো: বাছেদ আলী টিপু, কাজী মামুন, মীর সামচ্ছুজ্জামান, মো: মিজানুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, জেসমিন নূর প্রিয়াংকা, আলাউদ্দিন আহমেদ, রিজিয়া বেগম, প্রিয়াংকা সকুল, মো: ইকরাম হোসেন বাবু।(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)

এই বিভাগের আরও খবর