লালমনিরহাট বার্তা
অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে বিপর্যস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি: মির্জা ফখরুল
ভয়েস অফ আমেরিকা | ১৪ অক্টো, ২০২৩, ৪:৪৭ AM
অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে বিপর্যস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “ব্যাংকিং খাতের অব্যবস্থাপনা, ব্যাপক দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিপর্যস্ত।” শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকার গুলশানে, বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, “রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রতিষ্ঠিত অনেক স্থানীয় বেসরকারি ব্যাংক, ব্যাংকিং-এর দিকে মনোযোগ না দিয়ে, জনগণের অর্থ লুণ্ঠনে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।” তিনি বলেন, “এটি পুরোপুরি একটি ফাঁকা অর্থনীতি। অর্থনীতি বিপর্যস্ত। আসলে তারা (ক্ষমতাসীন দল) দেশের সম্পদ লুট করেছে এবং তাদের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে।”

সংবাদপত্র ও অন্যান্য উৎস থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে মির্জা ফখরুল দাবি করেন যে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর পর্যন্ত, ব্যাংকিং ও অন্যান্য খাত থেকে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে।

তিনি বলেন, “এই লোকদের (আওয়ামী লীগ নেতাদের) দেশে কোনো বিনিয়োগ নেই। সুতরাং, এখানে কোনো নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়নি। এর ফলে, দরিদ্র মানুষ দরিদ্র থেকে যাচ্ছে এবং আয় বৈষম্য ও অসমতা দিন দিন বাড়ছে।”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, “আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করার মূল চাবিকাঠি হলো জবাবদিহি। যেহেতু বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার-এর জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহি নেই; তাই, দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি ও বিচার বিভাগ তাদের হাতে নিরাপদ নয়।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “একটি গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক সরকারই পারে ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি ও ব্যাংকিং খাতকে উদ্ধার করে, টেকসই উন্নয়ন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে।

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, “বর্তমান অবৈধ সরকার শুধু রাজনীতি নয়, অর্থনীতিও পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা (সরকার) মিথ্যাচারের মাধ্যমে জনগণকে প্রতারিত করছে। শুধু জনগণকেই নয়, বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংস্থাকেও প্রতারিত করছে।”

তিনি বলেন, “ব্যাংকিং খাতে নজিরবিহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা খুবই কঠিন।সরকারের ভুল নীতি, রাজনৈতিক দুর্বলতা ও ব্যাপক লুটপাটের কারণে আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছে রাজনৈতিক স্বার্থে জনতা ব্যাংকের ২২ হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে একটি বিশেষ কোয়ার্টার বা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের দেয়া।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে ইসলামী ব্যাংকে। কারণ, একটি বৃহৎ শিল্প গ্রুপ একটি বেনামী কোম্পানির নামে ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। যদিও গ্রুপটি সর্বোচ্চ ২১৫ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারে। গণমাধ্যমে খবর এসেছে যে এই গোষ্ঠীটি কমপক্ষে ১০০ কোটি ডলার বিদেশে পাচার করেছে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ঋণের নামে ব্যাংক থেকে টাকা লুট করা এখন বাংলাদেশে সবচেয়ে সহজ কাজ। কারণ, কিছু লোক ব্যাংকিং ব্যবস্থার অপব্যবহার করে ঋণ নেয় এবং রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে বছরের পর বছর ধরে ঋণ পরিশোধ না করে বিদেশে অর্থ পাচার করে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে এবং ডলারের অভাবে প্রয়োজনীয় পণ্য, কাঁচামাল, মেশিন ও সরঞ্জাম আমদানি ব্যাহত হচ্ছে, যা অর্থনীতির গতিকে ধীর করে দিচ্ছে।” তিনি আরো বলেন, “সরকার ও তাদের অবৈধ সুবিধাভোগীরা দেশকে দুর্নীতি, লুণ্ঠন ও বিদেশে অর্থ পাচারের স্বর্গে পরিণত করায়, ডলার সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে।”

এই বিভাগের আরও খবর