লালমনিরহাট বার্তা
সংস্কারের অভাবে রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে-সড়কে চলাচলে সীমাহীন জনদুর্ভোগ
স্টাফ রিপোর্টার | ২৪ জুন, ২০২৩, ৫:১০ AM
সংস্কারের অভাবে রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে-সড়কে চলাচলে সীমাহীন জনদুর্ভোগ

লালমনিরহাট আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদগামী পাকা রাস্তাটি দির্ঘদিন থেকে সংস্কারের অভাবে পুরো রাস্তাটি ভেঙ্গে ক্ষত বিক্ষত হয়ে নদীতে ধসে যাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন পাকা রাস্তা সংস্কার করা হলেও অত্র রাস্তাটি এখন অবহেলায় অযত্নে বেহাল এ দশা পড়ে আছে। ফলে চলাচলের জন্য একমাত্র প্রধান সড়কটি অত্র ইউনিয়নের হাজার,হাজার মানুষ দুর্ভোগের চরম পর্যায়ে পড়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, উপজেলা হতে কমলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ দুরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। কুমড়ীরহাট থেকে ইউনিয়ন পরিষদের দুরত্ব ৩ কিলোমিটার তারমধ্যে অনুমানিক ২০০২ সালে ২ কিলোমিটার রাস্তা পাকা হলেও বাকী ১ কিলোমিটার আজ প্রায় ২০ বছর থেকে কাচাঁ রাস্তায় রয়ে গেছে। পাকাকরনের কাজটিও করা হয়নি। দেখাগেছে ২ কিলোমিটার পাকা রাস্তাটি বছরের বছর ধরে সংস্কারের অভাবে প্রায় পুরো রাস্তাটি উঁচু নিচু গর্ত সৃষ্টি হয়ে অল্প বৃষ্টিতে পানি জমে কাদা ও ময়লাযুক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। বিশেষ করে এই রাস্তার পাশে একটি সুতি নদী প্রবাহিত হয়েছে সংস্কারের অভাবে বর্ষাকালে ভেঙ্গে নদীতে রাস্তা চলে যাচ্ছে। পুরো রাস্তাটির বেহাল দশা দুর্ভোগ দেখার মত কেউ নেই। জেলা ও উপজেলা যাতায়তের মাধ্যম একমাত্র প্রধান রাস্তাটি বিভিন্ন জায়গায় ভাংগা ও উঁচু নিচু থাকায় প্রতিদিন ট্রাক ,ভ্যান, রিক্সাসহ শত,শত বিভিন্ন জানবাহন ও স্কুল ও কলেজের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

অথচ স্থানীয় সরকারের একটি গুরুত্ব পুর্ন অফিস রয়েছে যা প্রতিদিন শত,শত মানুষ সেবা নিতে আসে। বর্ষাকালে কাঁচা রাস্তায় চলাচলে জনগনের ভিষন অসুবিধা সন্মুখীন হতে হয়। অত্র ইউনিয়নের বড় কমলাবাড়ী এলাকাটি জেলার মধ্যে সর্বাধিক সবজি উৎপাদন এলাকা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে আসছে। এই এলাকার কৃষক সবজি জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন ট্রাকে করে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের পাইকারী বাজার বিক্রি হয়। সবজি চাষবাদ কর সংসার নির্বাহ করে এ এলাকার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ। এদিকে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে উপজেলা থেকে ৭ টি ইউনিয়নের যোগাযোগের জন্য পাকা রাস্তা থাকলেও শুধুমাত্র একটি মাত্র কমলাবাড়ী ইউনিয়নে নেই। তাছাড়া পুরো ইউনিয়নে রয়েছে অনেক কাঁচা রাস্তা যা পাকাকরনের কেউ উদ্দোগ নিচ্ছে না।

ফলে বর্ষাকালের কর্দমাক্ত রাস্তা দিয়ে জনগন চলাচল করছে। বর্তমান সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করলেও অত্র ইউনিয়নটিতে তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেনি। একটি পাকা রাস্তার অভাব দুটি ইউনিয়নের হাজার,হাজার মানুষ জেলা ও উপজেলাগামী একমাত্র যোগাযোগের রাস্তাটি পাকা না করার কারনে যাতায়ত বিঘ্ন ঘটছ। একাধিকবার বিভিন মহল জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানোর পরও কোন কাজ হয়নি। নির্বাচন আসলে জনপ্রতিনিধিরা বার,বার বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নিয়ে চলে যায় আর আসে না। তাই অত্র এলাকার লোকজনের চলাচলের জন্য ইউনিয়ন পরিষদগামী রাস্তা সংস্কারের পাশাপাশি বাকী কাঁচা রাস্তা পাকাকরনের জোর দাবী করেছেন।

ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান বলেন,পাকা রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় জনগন চরম ভোগান্তিতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে তাছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত বিক্ষিতর কারনে বর্ষায় রাস্তা ধসে নদীতে চলে যাচ্ছে। অন্যান্য এলাকাগুলো ব্যাপক রাস্তার কাজ করা হলেও এই ইউনিয়নের প্রধান সড়ক সংস্কার ও বাকী কাঁচা রাস্তাটুকু দেড় যুগেও পাকাকরন করা কাজ স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে করা হয়নি বলে তিনি জানান।

কমলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যার মাহমুদ ওমর চিশতী বলেন,ইউনিয়ন পরিষদ হল জনগনের প্রাণ । যেখানে হাজার,হাজার মানুষ সেবা নিতে আসে সেখানে যোগাযোগ ব্যাবস্থাটাও খুবই গুরুত্বপুর্ন। কুমড়ীরহাট থেকে ইউনিয়ন পরিষদগামী রাস্তাটি সংস্কার করা খুবই জরুরী। অত্র এলাকাটি সবজি উৎপাদনে শ্রেষ্ঠ এলাকা হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করে থাকে। রাম্তাটি সংস্কারের অভাবে বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত বিক্ষত হয়ে ধসে যাচ্ছে। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় জনদুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছে। তাই রাস্তাটি এলাকবাসীর পক্ষ থেকে সংস্কার ও বাকী কাঁচা রাস্তা পাকাকরনের জন্য সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট দাবী করেন।

উপজেলা প্রকৌশলী মাঈদুল ইসলাম বলেন,কুমড়ীরহাট থেকে ইউনিয়ন পরিষদগামী রাস্তাটি সংস্কারের জন্য সামনে অর্থ বছরের সুপারিশ করা হবে এবং রিপায়ারিংয়ের জন্য জেলা নির্বাহী অফিস বাস্তবায়ন করা হবে। বাকী কাঁচা রাস্তা করতে হলে স্থানীয় সংসদের ডিও লেটার লাগবে।

এই বিভাগের আরও খবর