লালমনিরহাট বার্তা
তিস্তা মহাপরিকল্পনার ঘোষণার প্রত্যাশা|| আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী রংপুর আসছেন
বার্তা ডেস্ক | ১ আগ, ২০২৩, ৮:১২ AM
তিস্তা মহাপরিকল্পনার ঘোষণার প্রত্যাশা|| আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী রংপুর আসছেন

আগামীকাল ২ আগস্ট বুধবার বঙ্গবন্ধুর কন্যা, রংপুরের পুত্রবধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর আসছেন। তিনি দুপুরে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় কমিটির আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। ইতোমধ্যে জনসভার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সারা রংপুরাঞ্চলে সাজ সাজ রব উঠেছে। মানুষজন অপেক্ষার প্রহর গুনছে।

রংপুরাঞ্চলের কোটি মানুষের প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরের জনসভায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ অর্ধশতাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা দিবেন। তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে লেখা হয়েছে ‘কোটি মানুষের স্বপ্ন তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ আস্থা শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। ২ আগস্ট রংপুর শুভাগমনে শুভেচ্ছা স্বাগতম। সংগঠনটি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ২৩০ কিলোমিটার ব্যাপী মানববন্ধন, রংপুরাঞ্চলে স্তব্ধ কর্মসূচী, তিস্তা কনভেনশন, প্রধানমন্ত্রীর নিকট ১ লাখ মানুষের স্বাক্ষরিত স্বারকলিপি পেশ, নৌকা সমাবেশ, রংপুরাঞ্চলের সকল স্থানে দোকানপাঠ ও সড়কে ৫ মিনিটের স্তব্ধ কর্মসূচী, সভা, সমাবেশ, সেমিনার, সাংবাদিক সম্মেলনসহ নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে।রংপুরাঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রী তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষণার মধ্যে দিয়ে তিস্তাপাড়ের তথা রংপুরাঞ্চলের কোটি মানুষের দাবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরব দীপ্ত রংপুরাঞ্চল অথচ রংপুরাঞ্চলের প্রায় ৪৭ ভাগ মানুষ দরিদ্র। দেশের ১০টি দরিদ্র জেলার মধ্যে রংপুর বিভাগের ৫টি জেলা, যা অনিভেপ্রেত। স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পেড়িয়ে গেলেও রংপুরাঞ্চলের মানুষ চরম বৈষম্যের শিকার। তাই রক্ত খচিত সংবিধান মোতবেক অন্যান্য অঞ্চলের সাথে বৈষম্য দূরীকরণে বিশেষ প্রকল্প নিতে হবে।

রংপুরে যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে স্বল্প সুদে কৃষি, মৎস্য, গবাদিপশু পালন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়সহ নানামুখী কার্যে নিয়োজিত হওয়ার জন্য ব্যাংকঋণ দিতে হবে। অত্রাঞ্চলের, বেকার যুবকেরা যাতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় বিদেশে কর্মসংস্থানে সুযোগ পায়, সেই লক্ষ্যে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে রংপুর মেডিকেল কলেজকে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা, প্রতিটি জেলার একটি করে মেডিকেল কলেজ স্থাপন, আধুনিক কৃষি ও সেচ ব্যবস্থা সম্প্রসারণে পদক্ষেপ গ্রহণ। সড়ক, রেলপথ ও আকাশ পথে যোগাযোগ সম্প্রসারন। বিজ্ঞান ভিত্তিক কর্মমুখী শিক্ষা সম্প্রসারণসহ নানাবিধ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণ।

রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলার দরিদ্র মানুষের সংখ্যা শতকরা ৭১ ভাগ। ১৯৭১ সালে হানাদার পাকিস্তান ও তাদের দোসর রাজনৈতিক দূর্বৃত্ত, দুর্নীতিবাজ আমলা কর্মচারী, পুজিপতি, শিল্পপতি, কর প্রতারক ব্যবসায়ী, প্রভু মনোভাবাপন্ন নরপশুরা পরাজিত হওয়ার পরেও কেন, রক্তস্নাত বাংলাদেশের একটি জেলার ৭১ ভাগ মানুষ দরিদ্র। এর কারণ ও ব্যর্থতা খুজে বের করতে হবে। স্বাধীনতা মূল চেতনা বৈষম্য দূরীকরণ, মৌলিক অধিকার, ন্যায় বিচার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশের কতিপয় রাজনৈতিক নেতা, আমলা, ব্যবসায়ী, পুজিপতি, শিল্পপতি, নব্য কোটিপতি, ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক ডাকাতি করে বিদেশে অর্থ পাচার ও নানাবিধ বেআইনি কার্যক্রমের কারণে স্বাধীনতার চেতনা ভ‚লুষ্ঠিত হতে পারে না, হতে দেয়া যাবে না।

তাই প্রধানমন্ত্রীর নিকট লালমনিরহাটবাসীর কয়েকটি প্রাণের দাবী তুলে ধরা হচ্ছে। ১. তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ২. প্রধানমন্ত্রী ও রেলওয়ে মন্ত্রীর ঘোষিত অন্তঃনগর তিনবিঘা এক্সপ্রেস চালু করণ, ৩. বহুল প্রত্যাশিত বৃটিশ আমলে নির্মিত, পাকিস্তান আমলে চালুকৃত লালমনিরহাট বিমান বন্দর সচল করণ, ৪. লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের সম্প্রসারণ, বন্ধ হয়ে যাওয়া লালমনিরহাট-মোগলহাট রেলপথ চালু করণ, ৫. মোগলহাটে ধরলা নদীর উপর নির্মিত রেলওয়ে সেতু পুনঃমেরামত পূর্বক লালমনিরহাট থেকে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে লাইন সম্প্রসারণ ও পূনরায় চালু করণ, ৬. বগুড়া হয়ে সিরাজগঞ্জের জামতলি পর্যন্ত রেলওয়ে লাইন সম্প্রসারণ এর বাস্তবায়ন, লালমনিরহাট বিভাগের রেলপথ আধুনিকরণ ও ট্রেনের সংখ্যা এবং বগিকরণ বৃদ্ধিসহ রেলওয়ে বিভাগের সার্বিক উন্নয়ন,

৭. ২০০২ সালে বন্ধ করে দেয়া মোগলহাট ইমেগ্রিয়েশনসহ প্রস্তাবিত মোগলহাট স্থল বন্দর চালুকরণ, ৮. মহেন্দ্রনগরে প্রস্তাবিত ইপিজেটের বাস্তবায়ন, ৯. বড়বাড়ি-বুড়িমারী মহাসড়ক ৮ লেনে উন্নতিকরণসহ জেলা ও উপজেলা সড়ক পাকাকরণ এবং সম্প্রসারণ, ১০. বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রস্তাবিত লালমনিরহাট এডুকেশন ভিলেজ এর মাধ্যমে বিমানবাহিনীর পরিত্যক্ত জায়গায় মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ কারিগরি বিষয়ে আধুনিক মান সম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উন্নয়ন বঞ্চিত ও অবহেলিত লালমনিরহাট জেলার সাথে জাতীয় ও আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণ এখন সময়ের দাবী। এই দাবী বাস্তবায়নে জেলাবাসী সোচ্ছার ও সংগঠিত।

কৃষক বিদ্রোহের নেতা নুরুল দীনের আহবান ‘কনঠে বাহে জাগো সবায়’ এই আহবানের সাথে একাত্মা ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধুর কন্যা, রংপুরের পুত্রবধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ও রংপুরাঞ্চলের বৈষম্য দূরীকরণে উন্থাপিত দাবীসমূহ বাস্তবায়ন পূর্বক রংপুরের কোটি মানুষের প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে আসবেন।

এই বিভাগের আরও খবর