লালমনিরহাট বার্তা
পাটগ্রামে লোড শেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন চাহিদা ১৪ মেগাওয়াট পাওয়া যায় ৮
স্টাফ রিপোর্টার | ৭ জুন, ২০২৩, ৮:৫৮ AM
পাটগ্রামে লোড শেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন চাহিদা ১৪ মেগাওয়াট পাওয়া যায় ৮

লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলায় প্রতিদিন ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে মিলেছে গড়ে ৮ মেগাওয়াট। গত ২৪ ঘন্টায় গড়ে ১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহে লোড শেডিং চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, পাটগ্রাম উপজেলায় নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী লিমিটেডের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এরমধ্যে পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধায় নীলফামারী জেলার ১৩২/৩৩ কেভি জলঢাকা গ্রিড সাবস্টেশন থেকে সাপ্লাই দেওয়া হয়।

পাটগ্রাম উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ৫২ হাজার ৪০০ জনের অধিক গ্রাহকের প্রায় ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ মিলছে প্রায় ৭ থেকে ৮ মেগাওয়াট। এতে গড়ে প্রতিদিন ১০ ঘন্টা লোড শেডিং দিয়ে ঘাটতি মোকাবেলা করা হচ্ছে। এতে অত্যধিক গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। বেড়েছে হাত পাখা, আইপিএস ও সোলারের কদর। দাম বেড়েছে এসবের। গরমে বাজার-ঘাটে লোকজনের আনাগোনা কমে গেছে। বাসা-বাড়িতেও থাকতে পাচ্ছেন না মানুষ। পরিবার-পরিজন নিয়ে ভোগান্তিতে।

নেসকো পাটগ্রামের বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিক্রয় বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, ‘এ উপজেলায় ৮ টি বিভিন্ন লাইনের বিদ্যুৎ সরবরাহের ফিডার রয়েছে। এরমধ্যে পাটগ্রাম পৌরশহরে সরকারি বিভিন্ন সরকারি কার্যালয় ও হাসপাতাল থাকায় তুলনামূলক কম প্রতিদিন ৫-৬ ঘন্টা লোড শেডিং দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া অপর ৭ টি ফিডারে গড়ে ৮ ঘন্টা লোড শেডিং দেওয়া হয়। ফিডার গুলো হল- পাটগ্রাম পৌরসভা, বুড়িমারী স্থলবন্দর, শ্রীরামপুর, সরকারেরহাট, বাউরা বাজার, পানবাড়ি, রাজারহাট ও জগতবেড়।’

খোঁজ নিয়ে ও স্থানীয় জনসাধারণের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় সকাল ৭.০০-৭.৩০ হতে ৯ টা সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত, বেলা ১২ টা থেকে দুপুর ১টা, বিকেল সাড়ে ৪ টা থেকে সাড়ে ৫ থেকে সাড়ে ৬ টা, রাত ৮ টা থেকে ৯ টা ও সাড়ে ১০ টা থেকে সাড়ে ১১ টা ও দিবাগত রাত দেড়টা হতে ২ টা ৩০ মিনিট এবং ভোর রাতেও দেড় দুই ঘন্টা কম বেশি করে শহর ও গ্রামে লোড শেডিং হয়।

পাটগ্রাম পৌরশহরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী বাবু হোসেন বলেন, ‘বিদ্যুতের লোড শেডিংয়ে কাহিল অবস্থা। প্রচন্ড গরমে ব্যবসা করা যাচ্ছে না। দোকানে বসে থাকা কঠিন, গ্রাহকও আসছে না।’

দহগ্রাম ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ইসলামী আদর্শ বিদ্যানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান বলেন, ‘অধিক গরম আর ব্যাপক লোড শেডিংয়ে টিকে থাকা যাচ্ছে না। পড়া-লেখা হচ্ছে না। আমাদের এখানে ১ ঘন্টা পর পর বিদ্যুৎ চলে যায়। আসলেও ৩০-৪০ মিনিট থাকে।’

জগতবেড় ইউনিয়নের সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যুৎ তো পাওয়াই যায়না। ১ ঘন্টা থাকলে ২ থেকে ৩ ঘন্টা থাকে না। এভাবে দিনরাত চলছে। সন্তান ও বাড়িতে থাকা বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে খুব সমস্যা পোহাতে হচ্ছে।’

পাটগ্রামের বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিক্রয় বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, ‘আমরা গ্রিড থেকে যেভাবে সাপ্লাই পাই সেভাবে বিতরণ করার চেষ্টা করছি। চাহিদার তুলনায় ৬ মেগাওয়াট কখনও কম বেশি বিদ্যুতের বরাদ্দ পাই। গ্রাম, শহর, হাসপাতাল, থানা, অফিস-আদালত, স্থলবন্দর সবার কথা বিবেচনা করে দিনরাত কিছু কিছু সময়ে লোড শেডিং দিয়ে সমন্বয় করা হচ্ছে। উপায় নেই।’

এই বিভাগের আরও খবর