রংপুরের পীরগঞ্জের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বাড়িঘড়ে আগুন জ্বালাতে নিজ হাতে পেট্রোল ছিটানো শিবির নেতা মামুন(২৩) ও ওমর ফারুক (২৪)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রোববার রাতে ওই দুজন কে তাদের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। গত ২৫ অক্টোবর (সোমবার) দুপুরে রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব সরকার গ্রেফতারের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতার আবদুল্লাহ আল মামুন ও ওমর ফারুক জামায়াত-শিবিরের কর্মী। ঘটনার রাতে তাঁরা পেট্রল নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সাদুল্যাপুর থেকে পীরগঞ্জে এসে হামলায় অংশ নেয়। তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার বিষয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে। এজন্য তাদেরকে আদালতে তোলা হয়েছে।
পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র জানান, বড় করিমপুর মাঝিপাড়া গ্রামে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা তিনটি মামলা এবং হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনায় আরেকটি মামলা। রোববার সকাল পর্যন্ত এসব মামলায় ৬৬ জন গ্রেফতার হয়েছে।এদের মধ্যে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়া ও সহিংসতার ঘটনা উসকে দেওয়ার অন্যতম হোতা পরিতোষ সরকার, উজ্জ্বল হোসেন, বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা সৈকত মন্ডল ও মসজিদের ইমাম রবিউল ইসলাম সহ অনেকেই রয়েছেন। তারা আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নিজেদের জড়িত থাকার দায় স্বেচ্ছায় স্বীকার করেছেন।
উল্লেখ্য, গত রোববার (১৭ অক্টোবর) রাতে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের বড়করিমপুর মাঝিপাড়া গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে উগ্রবাদীরা। এ ঘটনায় গ্রামটির ১৫টি পরিবারের ২১টি বাড়ির সবকিছু আগুনে পুড়ে গেছে। সব মিলিয়ে অন্তত ৫০টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। হামলাকারীরা গরু-ছাগল, অলংকার, নগদ টাকাও নিয়ে গেছেন বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্থদের। খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশ ও পরে র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এ সময় ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আনতে ব্যবহার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পীরগঞ্জ থানায় দায়ের করা চারটি মামলায় ৬৬ জন গ্রেফতার হয়েছে।