লালমনিরহাট বার্তা
দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরী কম্বাইন্ড হারভেষ্টার মেসিনে ধান কাটা মাড়াই রংপুরের কৃষকদের নতুন আশার আলো
রংপুর অফিস | ২৬ নভে, ২০২২, ১১:৫৮ AM
দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরী কম্বাইন্ড হারভেষ্টার মেসিনে ধান কাটা মাড়াই রংপুরের কৃষকদের নতুন আশার আলো

দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরী ব্রী হোলফিড কম্বাইন্ড হারভেষ্টার মেসিনে ধান কাটা মাড়াই রংপুরের কৃষকদের নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে। এই মেসিনে উচু-নিচু হেলেপড়া সহ যেকোন জমির ধান,গম কাটা ও মড়াই করা যাবে।অতি কম খরচে ফসল ঘড়ে তুলতে পারবেন কৃষকরা।কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষ আবাদের লক্ষে খামারে কৃষি যন্ত্রপাতির গবেষনা কার্যক্রম বৃদ্ধিকরন(এসএফএমআরএ) প্রকল্পের পরিচালক একেএম সাইফুল ইসলামের তত্বাবধানে বিজ্ঞানীরা ব্রী হোলফিড কম্বাইন্ড হারভেষ্টার মেসিনের প্রথম অবকাঠামো তৈরী করা হয়েছে।

রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার রশিদপুর গ্রামে প্রথম বারে ব্রি হোল ফিড কম্বাইন্ড হারভেস্টার এর মাঠ প্রদর্শনী শনিবার সকালে করা হয়েছে।মাঠ প্রদর্শনীতে উপস্তিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর এর অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শাহ আলম, এসএফএমআরএ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড.এ কে এম সাইফুল ইসলাম,ডিএই রংপুর জেলার বীজ প্রত্যয়ণ অফিসার মোঃ খোরশেদ আলম,ডিএই রংপুর জেলার প্রশিক্ষন অফিসার,ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় রংপুরের প্রধান ও সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার ড. রকিবুল হাসান, এফএমপিএইচটি বিভাগের সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার মোঃকামরুজ্জামান পিন্টু, ব্রি আঃ কাঃ রংপুরের সাইন্টিফিক অফিসার তপন কুমার রায় এবং সাইন্টিফিক অফিসার মোঃ আরাফাত উল্লাহ খান।

রংপুরে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদের লক্ষে খামার যন্ত্রপাতি গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম এর তত্বাবধানে বিভাগীয় বিজ্ঞানীরা নিরলসভাবে চেষ্টা করে জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং এ যন্ত্রের প্রথম প্রোটোটাইপ তৈরী করা হয়।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, আমদানীকৃত কম্বাইন হারভেস্টারগুলো আমাদের ছোট জমিতে ভালো কাজ করে না এবং এর মূল্য অনেক বেশী। ১৯টি বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে ব্রি হোল ফিড কম্বাইন হারভেস্টারটি দেশীয় উপযোগী করে প্রস্তুত করা হয়েছে। কৃষকের ছোট ও কর্দমাক্ত জমি বিশেষ করে হাওর এলাকার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। তবে অন্য এলাকাও সমানভাবে প্রযোজ্য। এর মূল্য আমদানীকৃত কম্বাইন হারভেস্টারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। বাংলাদেশের খন্ডিত ও কর্দমাক্ত জমির ধান কাটতে এটি অধিক কার্যকর। এই মেসিন দিয়ে গম কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াইয়ের কাজ করা যাবে। হারভেস্টিং ক্ষমতা ঘন্টায় এক একরের বেশী, জ্বালানি খরচ একর প্রতি ১০লিটার এবং হারভেস্টিং লস শতকরা এক ভাগেরও কম। উচু-নিচু ও কাঁদা জমিতে যন্ত্রটি সহজে চালনার জন্য ৩০০ মিমি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স রাখা হয়েছে। সাধারন ট্রাকে পরিবহন উপযোগী। স্থানীয় কাঁচামাল দিয়ে স্থানীয় কৃষি যন্ত্র প্রস্তুত কারকদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে।

ইঞ্জিন ছাড়া সকল পার্টস স্থানীয় ওয়ার্কশপে তৈরী করা সম্ভব। ব্রি হোলফিড কম্বাইন হারভেস্টারটি দেশে উৎপাাদনে সরকারী নীতি ও আর্থিক সহায়তায় পেলে কৃষি যন্ত্রপাতির অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাবে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করবে। বিদেশে রপ্তানী করা যাবে এবং খুচরা যন্ত্রাংশ প্রস্তুতের বাজার তৈরি হবে। মাঠ পরীক্ষণে উপস্থিত সকল সদস্য যন্ত্রটির কার্যকারিতা প্রত্যক্ষ্য করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।স্থানীয় কৃষিযন্ত্র প্রস্তুতকারীদের সক্ষমতা এবং ব্রি’র বিজ্ঞানীদের ডিজাইন ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা যদি যন্ত্রটি প্রস্তুত করি তবে এটি হবে আমাদের অসাধারণ সাফল্য। সরকারি এবং বেসরকারী উদ্যেগে এ দেশে এসেম্বলী লাইন তৈরি করতে পারলে স্বল্প মূল্য যন্ত্রটি প্রস্তুত করা সম্ভব হবে। ব্রি হোল ফিড কম্বাইন হারভেষ্টারটি বাংলাদেশের কৃষকের জন্য এক অনন্য উপহার। বাংলাদেশের কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ব্রি হোল ফিড কম্বাইন হারভেস্টার বিপ্লব ঘটাবে।

এই বিভাগের আরও খবর