লালমনিরহাট বার্তা
বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের বিশ্ব নদী দিবস পালন
বার্তা অনলাইন ডেস্কঃ | ২৮ সেপ, ২০২১, ৩:১৩ PM
বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের বিশ্ব নদী দিবস পালন
বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে বিশ্ব নদী দিবস উদযাপন-২০২১ ও নদী রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ শীর্ষক আলোচনা সভা গত ২৫ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১০ টায় ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব-তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এস এম আলী কবীর। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, নদী দখলকারীরা শক্তিশালী। আমার দূর্বল নই বরং তাদের থেকেও শক্তিশালী। কোন নদী দখলকারীকে ছাড় দেওয়া হবে না। সকল অবৈধ দখলকারীকে উচ্ছেদ করা হবে তালিকানুযায়ী। যারা নদী ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কার দেওয়া উচিত। নদী ও জলাশয় বিষয়ক আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা প্রয়োজন। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে আরো শক্তিশালী করার জন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষনা করা প্রয়োজন।
সভার বিশেষ অতিথি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সার্বক্ষনিক সদস্য কামরুন নাহার আহমেদ বলেন, নদীর তীরে সকল ধরনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। নদীর তথ্য পাঠ্যপুস্তকে অন্তভুক্ত করতে হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের অনুমোদন ছাড়া নদী এবং খালবিলে কোন প্রকল্প নেওয়া যাবে না। নদী দখলকারীদেরকে তাদের নিজ খর্চায় উচ্ছেদ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ার সাদত বলেন ৫৫ হাজার ৫৫০ বর্গমাইলের এ দেশে নদ নদীর প্রকৃত সংখ্যা কত সে ব্যাপারে সরকারি বেসরকারি সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা এখনো ঐক্যমত্যে পৌছুতে পারেননি। নদী মাতৃক আমাদের এ দেশের জন্য এটা চরম এক ব্যর্থতা। সরকারি সংস্থাগুলো বলছে ২৩০টি, উইকিপিডিয়ায় লেখা হয়েছে ৪০৫টি, শিশু একাডেমির শিশু বিশ^কোষে বলা হয়েছে ৭০০টি, লেখক সৈয়দ শামসুল হকের কবিতায় বলা হয়েছে ১৩০০টি, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলছি ১৫০০ টির ওপর, গবেষক ম. ইনামুল হক বলছেন প্রায় ২০০০ টি নদী রয়েছে। অন্যদিকে উজানের অভিন্ন স্বীকৃত নদী ৫৭ টি হলেও বাস্তবে রয়েছে ১০৭টি। বিভিন্ন সংখ্যার কারনে আমরা বিভ্রান্ত। তাই জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে অনুরোধ করবো নদ-নদী গুলো দখলমুক্ত, প্রবাহমান ও জীবন্ত রাখতে চাইলে এর প্রকৃত সংখ্যা জাতির সামনে তুলে ধরতে।

সাধারণ সম্পাদক এড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন ২০০৫ সাল থেকে ১৭ দফা দাবি নিয়ে নদী ভিত্তিক স্বতন্ত্র সংগঠন হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে। নদী এখন জীবন স্বত্তা হিসাবে আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে। নদীর লিগাল গার্ডিয়ান জাতীয় রক্ষা কমিশন। নদী আদালত গঠনের মাধ্যমে দখল ও দূষনকারীদের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী বিচারের আওতায় আনার দাবী জানান। নদী ভাঙ্গন রোধসহ নদী উন্নয়নের জন্য সরকারের বরাদ্ধকৃত টাকা যাতে কোন অসাধু চক্র লুটপাট করে খেতে না পারে সে জন্য নদী কমিশনকে মনিটরিং করতে হবে। তাছাড়া নদী রক্ষায় নদীর সীমানা নির্ধারণ করার জন্য জোর দাবী জানান।
নদী বাঁচাও আন্দোলনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট নদী গবেষক গেরিলা লিডার ড. এস এম শফিকুল ইসলাম কানু বলেন আমাদের তিস্তা নদী কে যেকোন মুল্যে রক্ষা করতে হবে। নতুবা আমাদের উত্তরঙ্গ অচিরেই মরুভূমিতে পরিনত হবে। তিনি বলেন, তিস্তা পানি চুক্তি না হওয়ায় রংপুর অঞ্চলেন তিস্তা পারের মানুষ শুষ্ক মৌসুমে পানি পাচ্ছেনা আবার বর্ষা মৌসুমে ভারত থেকে অতিরিক্ত পানি আসায় আবাদি ফসল বিনষ্টের পাশাপাশি র্তীব্র নদী ভাঙ্গনে প্রতি বছর হাজার হাজার পরিবার তাদের ঘরবাড়ী ভিটামাটি হারিয়ে নিঃশ্ব হচ্ছে। তিনি তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রæত বাস্তবায়ন, নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোকে ক্ষতিপূরন প্রদান সহ পুর্নবাসন এবং রংপুর অঞ্চলের বৈষম্য দূরিকরনে সরকারের প্রতি দাবি জানান।
সহ সভাপতি মাজেদা শওকত বলেন প্রতিনিয়ত আমরা নদী ভাঙ্গনের কারনে ভিটামাটি হারাচ্ছি ভাঙ্গনরোধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা দেখছি না।
আরো বক্তব্য রাখেন সহ সভাপতি এড. খন্দকার আমিনুল হক টুটুল, এ কে এম সিরাজুল ইসলাম, মনির মুননা, প্রকৌশলী ড. লুৎফর রহমান, ঢাকা বিভাগের সমন্বয়ক মোঃ বসির উদ্দিন, বরিশাল বিভাগের সমন্বয়ক রফিকুল আলম, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শামীম আহমেদ দেওয়ান, অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম (লিন্টু), কলিমুল্লাহ ইকবাল, মোঃ তাজুল ইসলাম, এড. মোঃ শহীদুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম আলম, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ হোসেন বুলবুল, জাহিদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক হাসিবুল হক পুনম, জীব বৈচিত্র বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার হাছিবুর রহমান, অর্থ সম্পাদক ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম অর্থ সম্পাদক এ কে এম নাজমুল হক, ঢাকা মহানগরের সভাপতি আনিছুর রহমান, সহ সভাপতি মো. মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মহসীনুল করীম লেবু, ঢাকা জেলার সভাপতি এড. মোঃ মজিবুর রহমান, গাজীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি জামান ভূইয়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা সেক্রেটারী মাসুদ খান, প্রিন্সিপাল হুমায়ুন কবির, শামীম মোহাম্মদ, ফেরদৌসী বেগম, এড. পরিতোষ প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ মোঃ বোরহান উদ্দিন অরন্য (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
এই বিভাগের আরও খবর