লালমনিরহাট বার্তা
অন্ত্র কি শরীরের দ্বিতীয় মস্তিষ্ক?
ডয়চে ভেলে | ২৬ সেপ, ২০২৩, ১২:৪০ PM
অন্ত্র কি শরীরের দ্বিতীয় মস্তিষ্ক?

শরীরের ভেতর পাঁচ থেকে আট মিটার লম্বা একটি পেঁচানো নল আছে, যার নাম অন্ত্র৷ এর নিজস্ব স্নায়ুতন্ত্র আছে৷ অন্ত্রই মানুষের জীবনধারা, অভ্যাস ও আবেগ প্রতিফলিত করে৷কিছু বিশেষজ্ঞ অন্ত্রকে এমনকি এক ধরনের ‘দ্বিতীয় মস্তিষ্ক' হিসাবেও উল্লেখ করে থাকেন৷ কিন্তু কেন?

অন্ত্রের প্রাচীরে প্রায় ১০০ মিলিয়ন স্নায়ু কোষ আছে৷ তবে এই সংখ্যা মস্তিষ্কে যা থাকে তার চেয়ে অনেক কম৷ কিন্তু তথাকথিত এই ‘অ্যান্টেরিক স্নায়ুতন্ত্র' অন্ত্রকে হজমের সাথে জড়িত সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে দেয়৷ যেমন, আংশিক হজম হওয়া খাবার পরিবহন, অন্ত্রের দেয়াল দ্বারা পুষ্টির শোষণ, এবং হজমকারী এনজাইম নিঃসৃত করা৷

অন্ত্র আর মস্তিষ্কের মধ্যে ভালো যোগাযোগ হয়ে থাকে৷ সেটি ভ্যাগাস নার্ভ কিংবা রক্তের হরমোনের মাধ্যমে হয়৷ যেমন কখন খাবার দরকার, সেটি অন্ত্র মস্তিষ্ককে জানায়৷ আর মস্তিষ্ক হজম প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে পারে বা স্থবির করে দিতে পারে৷

তবে কিছু অণুজীবেরও প্রভাব আছে৷ এই অণুজীবদের কাছে অন্ত্র যেন জন্মদান করার একটি জায়গা৷ অন্ত্র আর মাইক্রোবায়োমের একটি লেনাদেনার সম্পর্ক রয়েছে৷ অন্ত্রের ইমিউন কোষগুলো নিরীহ জীবাণুকে একা ছেড়ে দেয়৷ বিনিময়ে তারা হজমে সহায়তা করে৷

অণুজীবগুলো জটিল কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার ভেঙে দেয়, যা অন্ত্র নিজে ফাটাতে পারে না৷ তারা ভিটামিন বি ও কে-র মতো পুষ্টিও তৈরি করে৷ অন্ত্রের মতো অণুজীবগুলোও নীরবে কাজ করে৷ তারা সিগন্যালিং মলিকিউলের মাধ্যমে অন্ত্র ও মস্তিষ্কের সাথে যোগাযোগ করে জানায়, তারা কিসের জন্য ক্ষুধার্ত৷

কিছু ব্যাকটেরিয়া আবার সেরোটোনিন সংশ্লেষণের সাথে জড়িত- যা মেজাজ এবং ঘুমের প্যাটার্নে বড় প্রভাব ফেলে৷ মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং রোগ এই ভারসাম্যপূর্ণ সিস্টেমে সমস্যা তৈরি করতে পারে৷

হজম প্রক্রিয়া তখন খুব দ্রুত বা খুব ধীরগতিতে চলে৷ মাইক্রোবায়োমের বৈচিত্র্য হারিয়ে যায়৷ এর ফলে অন্ত্রের প্রদাহ বা বিরক্তিকর পেটের পীড়া দেখা দিতে পারে৷ অনেকদিন ধরে বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ করছেন, অন্ত্রের ব্যাধি এবং বিষণ্নতা বা উদ্বেগের মতো মানসিক ব্যাধির মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে৷ তবে এই বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন৷

তবে যেটি নিশ্চিত তা হলো, অন্ত্র আর মস্তিষ্ক একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত৷ আপনার অন্ত্র আপনার আবেগ প্রতিফলিত করে, এবং ইতিবাচক বা নেতিবাচক অভিজ্ঞতা মনে রাখে৷ তাই মাঝেমধ্যে আপনার অন্ত্রের অনুভূতি শোনা ভালো৷ কারণ, ভেতরে কী হচ্ছে সে সম্পর্কে তার ভালো ধারণা আছে৷

এই বিভাগের আরও খবর