লালমনিরহাট বার্তা
তিস্তানদী ভাঙন আতঙ্কে রাত কাটে দুই শতাধিক পরিবার
রংপুর অফিসঃ | ৬ অক্টো, ২০২১, ১০:২৪ AM
তিস্তানদী ভাঙন আতঙ্কে রাত কাটে দুই শতাধিক পরিবার
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের চরগনাই গ্রামের ভাঙন আতঙ্কে রাত কাটে দুই শতাধিক পরিবারের।তিস্তা নদী পাড়ের বাসিন্দারা জানান, উপজেলার বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নে নদী তীরের দশ গ্রামের একাংশ প্রায় বিলীন হতে চলেছে। ইতোমধ্যে নদীগর্ভে ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। ভাঙনের কবলে রয়েছে অনেক পরিবার।
উপজেলার চরগনাই গ্রামের বাসিন্দা আজিজার রহমান জানান, তিস্তা নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত কয়েকদিনে ভাঙনে বেশকিছু বসতবাড়ি, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে অনেক বসতবাড়ি, আবাদি জমি ও ফলদ-বনজ গাছ। চরগনাই গ্রামের বিধবা বুলবুলি বেগম (৫৫)। এক ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে একটি ঘর তুলে বসবাস করছেন তিনি। কিন্তু তিস্তা নদী ভাঙতে ভাঙতে ঘরের কাছে চলে এসেছে। হয়তো কয়েকদিনের মধ্যে বাবার বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে ধারনা করছেন।চর বিশ্বনাথ গ্রামের বাসিন্দা আয়েশা আক্তার বলেন, বাড়ির কাছে চলে এসেছে নদী। সবসময় আতঙ্কে থাকি, কোন সময় ভেঙে যায়। আগে তিনবার বসতবাড়ি সরিয়ে নিয়েছি। এখন আবার সরাতে হবে। ভাঙনের ভয়ে ঘুমাতে পারি না, স্বামী-সন্তান নিয়ে জেগে থাকি।চরগনাই গ্রামের আবু বক্কর বলেন, উপজেলার বালাপাড়ার তিস্ত নদীর ভাঙন রোধে তালুক সাহাবাজ গ্রামের নদী পাড়ে বালুর ব্যাগ ফেলা হলেও এখানে ফেলা হচ্ছে না। সবসময় আতঙ্কে থাকি কোন সময় সব নদীতে চলে যায়।
তালুক শাহাবাজের ক্ষীরোদ চন্দ্র শীল বলেন, এখানকার অধিকাংশ পরিবার একাধিকবার তিস্তা নদীর ভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব অবস্থায় অন্যের জমিতে ও বাঁধের ওপর বসবাস করছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে ভাঙন না ঠেকালে আজীবন রাস্তায় বাড়ি তুলে থাকতে হবে আমাদের।
টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, ভাঙনে অনেকের বসতভিটা ও আবাদি জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। প্রতিদিনই নদীর পাড় ভাঙছে। এতে করে তীরবর্তী গ্রামের কয়েকশ ঘরবাড়ি ভাঙনের মুখে রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে নদী শাসন ও ভাঙ্গন রোধে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন।
বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত তহবিল ও টিআর প্রকল্পের অর্থায়নে বাঁশ দিয়ে নদীর তীর ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, উপজেলার নদীর তীরবর্তী গ্রামে ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা খালি জিও ব্যাগ সরবরাহ করেছি। স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছা শ্রমে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে।
এই বিভাগের আরও খবর