লালমনিরহাট বার্তা
বাঁচাও তিস্তা বাঁচাও মানুষ'
বার্তা ডেস্কঃ | ২৯ সেপ, ২০২১, ২:১৮ PM
বাঁচাও তিস্তা বাঁচাও মানুষ'
২৭ সেপ্টেম্বর সোমবার রংপুরের গংগাচড়া ও লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদী পাড় লাগোয়া বিনবিনিয়ার চর তীরবর্তী আউলিয়ার বাজারে " বাঁচাও তিস্তা বাঁচাও মানুষ" প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ নদী দিবসের আলোচনা সভার আয়োজন করে।আলোচনা সভা জনসমাবেশে রূপ নিতে শুরু করে।ঝড়বৃষ্টিতে সভার কাজে কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও বৃষ্টি থেমে গেলে সন্ধা ৭.৩০ মিনেটে পাগলা তিস্তার পাগলা মানুষ আবারো ফিরে আসে সভাস্থলে।এ যেন প্রাণের সাথে প্রাণের মিলন। শ্লোগানে উদ্দীপ্ত মাঠ।' ঠেকাও ভাঙন বাঁচাও তিস্তা,বাঁচাও মানুষ, বাঁচাও কৃষি, বাঁচাও কৃষক।১৫ নভেম্বরের কাউনিয়া অভিমুখে ' তিস্তা লং মার্চ সফল কর,সফল কর। মহাসমাবেশ সফল কর।'
বিঙানসম্মতভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত
বাস্তবায়ন করার দাবিতে ভাঙন কবলিত এলাকার আলোচকরা ছিল ভয়ানক সোচ্চার।আমি খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম চরের মানুষের নদী ভাঙনের কথন। তিস্তা নদীর ইতিহাস ওরা গ্রন্থের ভাষায়
বলেন না ।তিস্তা পাড়ের মানুষ তিস্তা কী,তিস্তার রূপ কেমন- তা জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়েই বোঝেন।ভাঙনের কান্না আর পীড়ন দিয়েই বোঝেন তিস্তার গতিপ্রকৃতি।
ভাঙনপীড়িত তিস্তা পাড়ের মানুষ নিজেরাই একএকজন নদী বিশেষজ্ঞ,কবি- সাহিত্যিক।তিস্তা পাড়ের মানুষের মতামত নিয়ে একাবিংশ শতাব্দীর নদী শাসনের বিঙান- প্রযুক্তি প্রয়োগ করা গেলে পাগলা তিস্তাকে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।নদীর কলকলানি, পাল তোলা
নৌকা ,পাখির কিচিরমিচির ডাক ইত্যাদি
কাব্যিক কথন ওরা কাব্যের অনিদ্য সুন্দর বচনে শুনতেই চায় না। ওরা কথা বলে ওদের ভাষায়।ওদের
সোজা কথা, ' ওগলা কথা থামান।ভাঙন ঠেকান
মানুষ বাঁচান। হামরা রিলিফ চাই না।শেখের বেটিক
কন নদীটা খুড়ি দেউক।পদ্মা সেতু করা গেলে তিস্তা ঠিক করা যাবে না কেন!হামার একটাই শ্লোগান তিস্তার
ভাঙন ঠেকান হামাক বাঁচান।" বিনবিনিয়ার চরের
মকবুল হোসেন বলেন,চরের ভিতরত মিটিং করেন।লং মার্চে হামরা দলে দলে যামো।টাকা হামরাই দিমো।
তিস্তার ভাঙনে সর্বস্বহারা মফিজ উদ্দীনের ভাষণ শুনে
মনে হল, তিস্তার আসল রূপ জানতে হলে চরের ভাঙন কবলিত জনপদের মানুষের কাছেই যেতে হবে।তাহলেই সফল হবে তিস্তা বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের ৬ দফার
আন্দোলন এবং ১৫ নভেম্বরের কাউনিয়া রেল সেতু
অভিমুখের " তিস্তা লং মার্চ" কর্মসূচি। আলোচনা সভায় মকবুল হোসেন কামতাপুরি কথন শুনে সভার প্রধান অতিথির অলংকারিক খেতাব মকবুল হোসেনকে
উৎসর্গ করলাম।
তিস্তার সমস্যা দুটি, প্রথমত আন্ত:দেশীয় সমস্যা।আন্ত:দেশীয় সমস্যা নিরসনে তিস্তা চুক্তি সই করা সহ
অববাহিকাভিত্তিক ভারত-বাংলাদেশ মিলে যৌথ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার কথা ছিল।এ লক্ষে ২০১১ সালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় একটি চুক্তিও স্বাক্ষর করেছিলেন।কিন্তু শক্তিশালী প্রতিবেশি তার শক্তিমত্তা প্রদর্শনের কারণে সমাধানটি আটকে গেছে।তিস্তা চুক্তি না হলেও ২০১২ পর্যন্ত অল্প কিছু পানি হলেও ( তিন হাজার কিউসেক) ভারত পানি ছাড়ত।কিন্তু ২০১২ সালের পর ভারত সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে শুস্ক মৌসুমে গজলডোবা ব্যারাজ দিয়ে পুরো পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। ফলে, বাংলাদেশ অংশে প্রবাহিত ১১৫ কিলোমিটার তিস্তা নদী শুকনাকালে হয়েছে মরা কাঠ।তিস্তার মধ্যস্থলে পানির প্রবাহ থাকেনা।মধ্যস্থলের তিস্তার বুক সমতলসম উঁচু হয়েছে বালুর স্তুপে।
এনিয়ে বাংলাদেশের সরকার আন্তরিকতার সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তিতে খরাকালে তিস্তা চুক্তি সই করার নানামুখী প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলেও ভারতের কেন্দ্র ও প্রদেশ সরকারের টানাপোড়নে তা আটকে গেছে।দ্বিতীয়ত; বর্ষাকালে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি সেকেন্ডে ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ ঘনফুট পানি প্রবাহিত হয়(ড.আইনুন নিশাত,নদী গবেষক)।এই প্রবাহ স্বাভাবিক অবস্থা অতিক্রম করলে গজলডোবা ও তিস্তা ব্যারাজের সব কপাট খুলে দেয়া হয়।বাংলাদেশ অংশের তিস্তা বর্ষাকালে স্বাভাবিক অবস্থার পানিটুকুও ধরে রাখতে পারছেনা।আমাদের তিস্তার মধ্যস্থলে কোন গভীরতা নেই।নেই ব্রম্মপূত্র-যমুনা হয়ে সাগরে নামার স্বাভাবিক পানিপ্রবাহের গতিধারা।তিস্তার মধ্যস্থল দিয়ে পানি দ্রুত নামতে না পারায় পানি তিস্তার পাড়ের তীরঘেঁষা জনপদে প্রবল বেগে ছুটতে থাকে।মূল তিস্তা নদীর বুক চিড়ে সৃষ্টি হয় নানামুখী শাখা- প্রশাখা।তিস্তা অববাহিকার কিনারের জনপদের পানি উপচে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ বন্যা।শুকনাকালে মরা তিস্তার কিনার থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন,তিস্তার বুক এবং পাড় দখল করে নানা স্হাপনা তৈরি করায় ভাটিতে কেয়ামততূল্য ভাঙনের সৃষ্টি হয়।
বন্যা তো ভাল।বন্যায় চর ঢুবে গেলেও এতে চরের মানুষের ভয় থাকেনা।বন্যার পলিতে নদী তীরের জমি
ভরাট হতো, পড়তো পলি।জমি হতো উর্বর।এখন তা হচ্ছেনা।এখন তিস্তা অববাহিকার দুই পাড়ের বিস্তৃন্ন জনপদে চলছে নদীভাঙনের তান্ডব।প্রতি বছর তিস্তা
নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি-জমিজিরাত-নানা স্হাপনাসহ কয়েক হাজার কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ।
দুর্বিষহ ভাঙনের কারণে বর্ষা কালে তিস্তা নদীর প্রস্থ বেড়ে হয় ১০- ১২ কিলোমিটারে।অথচ বৃটিশ -পাকিস্তান আমলে বর্ষাকালে তিস্তার প্রস্থ থাকতো ২ কিলোমিটার। খরাকালে থাকতো এক থেকে দেড় কিলোমিটার।বর্তমানে তিস্তা পাড়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি আতঙ্কগ্রস্ত
হয়ে পড়েছেন ভাঙনের সমস্যা নিয়ে।কিভাবে এই সমস্যার সমাধান হবে!তা নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে ভাঙন কবলিত জনপদের মানুষ।
তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ ২০১৫ সালে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে তিস্তা পাড়ের দুই হাজার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহনে একটি " কনভেনশন"
অায়োজন করেছিল।কনভেশনে তিস্তা নদী সুরক্ষায় ৬
দফা কর্মসূচি অননুমোদিত হয়।কর্মসূচিতে ছিল আন্ত:দেশীয় ব্যবস্থাপনায় খরাকালে তিস্তা চুক্তি সই করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দেশীয় ব্যবস্থাপনায় তিস্তার মমধ্যস্থল গভীর খনন,দুই তীর সংরক্ষণ,জলাধার নির্মাণ,তিস্তার উপনদী- শাখা- প্রশাখার সঙ্গে তিস্তা নদীর পূর্বেকার সংযোগ পুনরুদ্ধার,কৃষি ও কৃষকের স্বার্থ সংরক্ষণ।পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার ও সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে " তিস্তা নদী সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার' শীর্ষক একটি পরিকল্পনা গ্রহনের নির্দেনা দেন।নির্দেশনার আলোকে সমীক্ষার কাজ পানিউন্নয়ন বোর্ড সমাপ্ত করে ২০১৮ সালে।যা "তিস্তা মহাপরিকল্পনা" নামে বহুল পরিচিত।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে পানিসম্পদমন্রী,সিনিয়ার সচিবসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই নানা সাক্ষাতকারে এই পরিকল্পনা
দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন।কথা ছিল ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করার।এ খবরে তিস্তা পাড়ের মানুষের ঘরেঘরে খুশির জোয়ার বইতে শুরু করে। বৈষম্যপীড়িত রংপুর বিভাগের দুই কোটি মানুষের প্রাণেও জাগে আশার আলো।তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনায় মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে " তিস্তা বাঁচাও,নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ" ২০২০ সালের ১ নভেম্বর তিস্তার দুই তীরে ২৩০ কিলোমিটার মানববন্ধন কর্মসূচি সফল করে।এ কর্মসূচীতে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ তিস্তা পাড়ে দাঁড়িয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে।দ্রুত বিঙান সম্মতভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন,তিস্তা চুক্তি সই জলাধার নির্মাণ করা সহ ৬ দফা দাবিতে।মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় সংগঠনটি ২০২১ সালের ২৪ মার্চ তিস্তার দুই তীরের হাট বাজার বন্দরে ১০ মিনিট "স্তব্ধ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে গণস্বাক্ষর প্রদান কর্মসূচি" পালন করে।
তিস্তা সুরক্ষায় মহাপরিকল্পনা কাজ শুরু না করায় জনমনে নানা সংশয়ের উদ্রেক ঘটেছে।এবছরও লালমনিরহাট জেলার হাতিবন্ধা,কালিগঞ্জ,আতীতমারি লালমনিরহাট সদর ,রংপুরের গংগাচড়া,কায়উনিয়া, পীরগাছা,কুড়িগ্রামের রাজারহাট,উলিপুর এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা তীরের অসংখ্য গ্রামের ঘরবাড়ি, ফসলের ক্ষেত, পাঁকা-কাচা নানা স্হাপনা,সড়ক ,সড়ক,সেতু,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,মসজিদ,
মন্দির ও সমৃদ্ধ জনপদ তিস্তার ভাঙনে বিলীহয়েছে।
উন্নয়নের রথযাত্রায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে- এটা অস্বীকার করার কোন জো নেই।দিব্যি চোখে দেখছি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু দৃশ্যমান।দেখছি ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলে রকমারি চোখধাঁধানো নানা মেগা প্রজেক্টের অগ্রগতি।দক্ষিণাঞ্চলে- ঢাকা মিলে ১০০টি
অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে ওঠেছে।২৮ টির অধিক হাই-টেক পার্ক,বঙ্গবন্ধু স্যাটালাইট -২,গভীর সমুদ্র বন্দর,এল,এনজি টার্মিনাল,পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র,মেট্রো রেল,কর্ণফুলী টার্নেল,কক্সবাজার সমুদ্রের
উপরে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসহ হাজার হাজার
কোটি টাকার বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।করোনাকালেও থেমে নেই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কর্মযজ্ঞ।ওসবে আমাদের আপত্তি নেই।আমাদের আপত্তি রংপুর বিভাগের সাথে কেন এতো বৈষম্য!(?)।পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৮- ২০১৯ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পে রংপুর বিভাগের প্রায় দুই
কোটি মানুষের জন্য বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের এক
শতাংশের কম (০.৯৮ শতাংশ)।গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশ,গেল ২০১২-২০১৩ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ প্রাপ্তীতে রংপুর বিভাগের অবস্থান তলানীতে।বরাদ্দ প্রাপ্তির চালচিত্রে
দেখা যায়,ঢাকা বিভাগের বরাদ্দ-৩৮.৫৪ শতাংশ,চট্রগ্রাম-২৭.৭৫ শতাংশ,রাজশাহী-১২.০৮ শতাংশ,খুলনা-০৮.২২ শতাংশ,সিলেট-০৪.৬০ শতাংশ,বরিশাল-০৪.১৮ শতাংশ,ময়মনসিংহ- ০৩.৫৩
শতাংশ এবং রংপুর- ০৩.১৩ শতাংশ।২০১২ সালের আগের হিসেব কষলে রংপুর বিভাগ থাকবে আরো নাজুক অবস্থানে।অতীতের কোন সরকারই রংপুর বিভাগের উন্নয়নে মনোযোগী ছিল না।এ কারণে সারা দেশের দারিদ্র্যের হার কমলেও রংপুর বিভাগে গড় দারিদ্র্যের হার ৪৬ শতাংশ।সারা দেশে গড় দারিদ্র ২০ শতাংশ হলেও তিস্তা তীরবর্তী কুড়িগ্রামে এই হার ৭১ শতাংশ,লালমনির হাটে ৪২ শতাংশ,গাইবান্ধায় ৪৭ শতাংশ,রংপুরে ৪৩ শতাংশ।বেকারত্বের হার রংপুর বিভাগে সবচেয়ে বেশি।করোনাকালে রংপুর বিভাগের
বেকারত্বের পরিস্থিতি নাজুক হয়ে ওঠছে।করোনার সংকটে সারা দেশে চাকুরি হারিয়েছেন অন্তত;১.৫ কোটি মানুষ।নতুন করে বেকার হয়েছেন ২ কোটি ৪৫
লক্ষ।যার একটি বড় অংশ রংপুর বিভাগের। রংপুর বিভাগের দারিদ্র্যের অন্যান্য অনেক কারণের মধ্যে তিস্তার উপর্যুপরি ভাঙন গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
মুক্তিযুদ্ধে তিস্তা,ব্রম্মপুত্র-যমুনা নদীই ছিল গেরিলা যোদ্ধাসম।মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল মানুষে-মানুষে,
অঞ্চলে বৈষম্য দূর করা।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
সারা জীবন বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়েছেন।বাংলাদেশের
সংবিধানের রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতির ১৯ এর (২)
অনুচ্ছেদে স্পষ্টত বলা আছে, " মানুষে মানুষে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্য বিলোপ করিবার জন্য, নাগরিকদের মধ্যে সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত
করিবার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমান স্তর অর্জনের উদ্দেশ্যে সুষম সুযোগ-সুবিধাদান নিশ্চিত করিবার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর
ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।"রংপুর বিভাগের দারিদ্র্য নিরসন ও বৈষম্য ঘোচাতে, সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে বিঙানসম্মতভাবে " তিস্তা মহাপরিকল্পনা" দ্রুত
বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নসহ ৬ দফা দাবিতে " তিস্তা বাঁচাও,নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ ১৫ নভেম্বর কাউনিয়া তিস্তা সেতু অভিমুখে " তিস্তা লং মার্চ"- এবং সেতুর তলার চরে মহাসমাবেশর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।এই কর্মসূচি সফল করতে দুই তীরের চরাঞ্চলে,জনপদে,
হাট বাজার বন্দরে চলছে নানামূখি জনসংযোগ।
আর বিলম্ব নয়-২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই পদ্মা সেতুর মতো নিজস্ব অর্থায়নে বৈঙানিক সহযোগীতায় দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করার দাবিতে সোচ্চার তিস্তা পাড় সহ রংপুর বিভাগের মানুষ।২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ নদী দিবসে " বাঁচাও তিস্তা বাঁচাও মানুষ" এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে তিস্তার দুই তীরে সংগঠনটি নানা আয়োজনে পালন করেছে নদী দিবসের বর্ণাঢ্য কর্মসূচি।

২৭ সেপ্টেম্বর রাতে তিস্তা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমানসহ ফিরে এলাম রংপুরের সুরক্ষিত ঘরে। মকবুল হোসেনদের রেখে এলাম ভাঙন
কবলিত বিনবিনিয়ার চরে।বাসায় ফিরে ওনলাইনে নদী দিবস উদযাপনের একটি রাজনৈতিক দলসহ নানা সামাজিক ও পরিবেশবাদী এনজিও সংগঠনগুলোর সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের খবর দেখছিলাম।'মানুষের জন্য নদী'- নদী দিবসের ঘোষিত প্রতিপাদ্য ধারণ করে অনেকেই নদী রক্ষায় সোচ্চার হয়েছে। তিস্তা পাড়ের ভাঙন কবলিত মানুষ ' নদী মানুষের জন্য' -ওই প্রতিপাদ্যকে আস্থায় নিতে পারছেন না।তিস্তা পাড়ের মানুষের কাছে,'তিস্তা নদী ভাঙনের -কান্নার- দু:খের মহাকাব্য। এক সময় চীনের দু:খ ছিল হোয়াংহো তেমনি তিস্তা বাংলাদেশের দু:খ।তিস্তা পাড়ের মানুষের কাছে নদী দিবসের প্রতিপাদ্য " ভাঙন ঠেকাও, তিস্তা বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও।"
এই বিভাগের আরও খবর