লালমনিরহাট বার্তা
গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন ও আইনের শাসন বাধাগ্রস্ত করায় গুয়েতেমালার ১০০ এমপির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
বার্তা অনলাইন ডেস্ক | ১২ ডিসে, ২০২৩, ১১:০৭ AM
গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন ও আইনের শাসন বাধাগ্রস্ত করায় গুয়েতেমালার ১০০ এমপির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

গণতন্ত্রবিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ ও আইনের শাসন বাধাগ্রস্ত করায় মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়েতেমালার ৩০০ নাগরিকের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের মধ্যে দেশটির সংসদ কংগ্রেসের অন্তত ১০০ জন সদস্য রয়েছেন। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে গুয়েতেমালার বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্য আমেরিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশ গুয়েতেমালায় গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন করায় এককক্ষ বিশিষ্ট কংগ্রেসের ১৬০ সদস্যের মধ্যে ১০০ জনসহ প্রায় ৩০০ নাগরিকের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বেসরকারি খাতের কিছু প্রতিনিধি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদেরও লক্ষ্য করে এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তার বলেছেন, মার্কিন আইনের গোপনীয়তা বিধির কারণে ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় পড়া গুয়েতেমালানদের নাম প্রকাশ করা হবে না। তবে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়াদের ‘‘গণতন্ত্র বা আইনের শাসন ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা হয়।’’

গত সপ্তাহের শেষের দিকে গুয়েতেমালার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত বেরনার্ডো আরেভালোর নির্বাচনে বিজয় বাতিল চেয়ে আইনি পদক্ষেপ নেন দেশটির প্রসিকিউটররা। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল কনসুয়েলো পোরাস নির্বাচনী জয়কে বাতিল করার অপচেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ করেন আরেভালোর। একই সঙ্গে তার জয়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপকে ‘ন্যায়ভ্রষ্ট’ ও ‘অভ্যুত্থানচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেন তিনি।

গত আগস্টের রান-অব নির্বাচনে আরেভালোর নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর গুয়েতেমালার নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং দলীয় প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল কনসুয়েলো পোরাসের কার্যালয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘গুয়েতেমালার জনগণ তাদের কথা বলেছেন। তাদের বক্তব্যকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’’

দুর্নীতিবিরোধী যুদ্ধ ঘোষণা করা আরেভালো গত জুনে গুয়েতেমালার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম ধাপে ব্যাপক জনসমর্থন পান। এরপর গত আগস্টে দ্বিতীয় দফার রান-অব ভোটে সেনাবাহিনী-সমর্থিত বিরোধী প্রার্থীর বিপক্ষে জয় পেয়ে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হন তিনি। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা।

ওই নির্বাচনের পর আরেভালো ও তার মধ্য-বামপন্থী রাজনৈতিক দল সিড ম্যুভমেন্ট পার্টি অ্যাটর্নি জেনারেল পোরাসের কার্যালয়ের একাধিক তদন্তের মুখোমুখি হয়েছে। কয়েক বছর আগে দলটির নিবন্ধনে অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করেছে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়।

এদিকে, মার্কিন ভিসা বিধিনিষেধের বিষয়ে গুয়েতেমালার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আলেজান্দ্রো গিয়ামাত্তেই এবং কংগ্রেসের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

মার্কিন সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত ও অগণতান্ত্রিক নেতাদের করা তালিকায় ইতিমধ্যে গুয়েতেমালার অ্যাটর্নি জেনারেল পোরাস, তার জ্যেষ্ঠ সহযোগী রাফায়েল কুরুচিচে এবং ফ্রেডি ওরেলানার নামও যুক্ত করা হয়েছে। জুনের প্রথম দফার ভোটে ভালো ফল করার পর আগস্টের দ্বিতীয় দফার রান-অবের আগ মুহূর্তে আরেভালোর মধ্য-বামপন্থী রাজনৈতিক দল সিড ম্যুভমেন্ট পার্টির নিবন্ধন বাতিলের আদেশ দিয়েছিলেন পোরাসের সহযোগী আইনজীবী ফ্রেডি।

মিলার বলেছেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র গুয়েতেমালার গণতন্ত্রকে দুর্বল করে এমন যেকোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করার পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে।’’

লালমনিরহাট বার্তা/ এস. এফ

এই বিভাগের আরও খবর