লালমনিরহাট বার্তা
নেশা গ্রহণের সময় আপত্তিকর দৃশ্য দেখে ফেলায় বন্ধুর হাতে প্রাণ গেল
বার্তা অনলাইন ডেস্ক | ২৭ মার্চ, ২০২৩, ৪:২০ AM
নেশা গ্রহণের সময় আপত্তিকর দৃশ্য দেখে ফেলায় বন্ধুর হাতে প্রাণ গেল

আপত্তিকর দৃশ্য দেখে ফেলে মোবাইল ফোনে ভিডিও করায় প্রাণ দিতে হয়েছে জিয়াবুর রহমানকে। আরেক নেশাগ্রস্ত বন্ধু মাসুদ রানা বাটাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। 

 গত ২৬ মার্চ দুপুরে দিন্সজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এ এমনি তথ্য জানিয়েছেন,জেলা পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ।

পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের জানান, ঘাতক মাসুদ রানা দক্ষিণ কোতয়ালীর শিকদার হাটে জনৈক হাসমতের ফার্নিচারের দোকানে কাঠের আসবাবপত্রে নকশার কাজ করতেন। মাসুদ রানা শিকদার হাট চাউলিয়াপাড়া এলাকার মো. জুয়েল কসাইর ছেলে। নিহত ভিকটিম জিয়াবুর রহমান (২২) এবং ঘাতক  মাসুদ রানা (২২) উভয়ে নেশাগ্রস্ত। তারা উভয়ে এক সাথে ব্যাথা নাশক নেশা জাতীয় টেবলেট ট্যাপেন্টাডল সেবন করতেন। আর এই নেশা গ্রহণ করতে গিয়ে নিহত ভিকটিম জিয়াবুরের কাছে ঘাতক মাসুদ রানার ৪ হাজার ৭ শত টাকা দেনা হয়ে যায়। এই পাওনা টাকা জিয়াবুর ফেরত চাইলে মাসুদ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ধারকৃত টাকা দেয়ার কথা বলে জিয়াবুরকে ২৩ মার্চ সন্ধায় মুঠোফোন এ ডাকে মাসুদ রানা।

দিনাজপুরের দক্ষিণ কোতয়ালীর আউলিয়াপুর তাতিপাড়া এলাকার এলাকার পুকুরপাড়ে বিসুশা নামে জনৈক এক ব্যক্তি'র খড়ের পাশে জিয়াবুর আর মাসুদ এক সাথে সন্ধার পর ব্যাথা নাশক নেশা জাতীয় ৪ টি টেবলেট ট্যাপেন্টাডল সেবন করে। এ সময় ওই পুকুর ধারেই তারা দুজনেই এক যুবক এবং এক যুবতির অবৈধ মেলামেশার দৃশ্য দেখে ফেলে। জিয়াবুর তার মোবাইল ফোনে এ দৃশ্য ধারন করে ওই অসামাজিক কাজে লিপ্ত কথিত যুবকের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় ওই মোবাইল ফোনটি রেখে দেয়, জিয়াবুর। জিয়াবুর ওই ফোন বিক্রি করে দিবে বলে মাসুদ রানাকে জানায়।মাসুদ এতে রেগে যায়।কারণ অসামাজিক কাজে জড়িত যুবক-যুবতি তার পরিচিত আত্মীয়। একারণে মাসুদ মোবাইল ফোনটি নিয়ে বাড়ি থেকে টাকা আনার কথা বলে জিয়াবুরকে অপেক্ষা করতে বলে। বাড়িতে মাসুদ মোবাইল ফোনটি রেখে টাকার পরিবর্তে কাঠ কাটার বাটাল এনে পুকুর পাড়েই জিয়াবুরকে বাটাল দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যার পর খড়ের গাদায় লুকিয়ে রাখে।

এলাকার শিশুরা লুকোচুরি খেলতে গিয়ে পরদিন

গত ২৪'মার্চ বিকেলে সদর উপজেলার ৬ নং আউলিয়াপুর ইউপির ৫ নং ওয়ার্ডের তাতিপাড়া এলাকার বিসুশা নামে জনৈক এক ব্যক্তি'র খড়ের গাদার ভেতরে জিয়াবুরের মরদেহ আবিস্কার করে। পরে খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

জিয়াবুর রহমান(২৮) আউলিয়াপুর ইউপির হরিহরপুর কাউয়াপাড়া গ্রামের শামসুদ্দীন শাহা ড্রাইভারের ছেলে। পেশায় একজন কীটনাশক ব্যবসায়ী হলেও জিয়াবুর মুলত নেশা বিক্রির সাথে জড়িত ছিলেন।

এ ঘটনায় নিহত জিয়াবুরের বড় ভাই মো. সাগর আলী বাদি হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যা রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি শনিবার রাতে আসামি মাসুদ রাখাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

আসামি মাসুদ রানার স্বীকারোক্তি মতে, পুকুর থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বাটাল,নিহত জিয়াবুরের মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।

আসামি মাসুদ রানাকে আজ রবিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।(উত্তরবাংলা ডট কম)

এই বিভাগের আরও খবর