লালমনিরহাট বার্তা
রংপুরে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় শ্যালোসেচ দিয়ে আমন রোপণ
রংপুর অফিস | ২৮ জুল, ২০২৩, ১১:১৩ AM
রংপুরে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় শ্যালোসেচ দিয়ে আমন রোপণ

আষাঢ়-শ্রাবণ দু‘মাস বর্ষাকাল হলেও ঋতুর বৈরী প্রবাহে শ্রাবণ মাসে রংপুরে তেমন বৃষ্টিপাত বর্সিত হচ্ছে না। বৃষ্টি নির্ভর আমন খেতের জমি তৈরি করতে পারছেন না কৃষকেরা। বাধ্য হয়ে শ্যালো মেসিনের সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে পানি দিয়ে আমন চারা রোপন করতে হচ্ছে। এতে খরচ বাড়ায় আমন মৌসুমে কৃষকেরা দারুন বিপাকে পড়ছেন।

রংপুরের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ রংপুর কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি বছর রংপুর জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে। গত ১৫ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে আমন চারা রোপণ। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রার শুধু ৩০ শতাংশ কৃষকেরা চারা রোপণ করতে পেরেছেন। পানির অভাবে ব্যাপক ভাবে আম চারা রোপন শুরু করতে পারছেনা প্রন্তিক কৃষকেরা। কৃষকেরা বাধ্য হয়ে সেচযন্ত্রের মাধ্যমে সর্ম্পূরক পদ্ধতিতে জমি তৈরি করে আমন চারা রোপণ করছেন।

রংপুর আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন, চলতি মাসে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) পর্যন্ত রংপুরে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৬৭ মিলিমিটার। টানা দুই সপ্তাহ ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা নামা করছে।সে সাথে বাতাশের আদ্রতা ছিল সর্বচ্চ ৯০ শতাংশ । ফলে ডোবা-খাল-বিলের আগের জমাহওয়া বৃষ্টির পানি দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে।

রংপুর জেলা সহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের পর গ্রাম জুড়ে কৃষকদের রোপণকৃত জমিতে পানি নেই। সেচযন্ত্রের মাধ্যমে জমি তৈরি করছেন কৃষকেরা। নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরদিঘর এলাকায় বিস্তীর্ণ আমন খেত জুড়ে সেচযন্ত্র দিয়ে পানি দিয়ে জমি কাঁদা করে সেখানে আমন চারা রোপণ করছেন কৃষকেরা।

নগরীর নাজিরদিঘর এলাকার কৃষক তবারক মিয়া তাঁর প্রায় পাঁচ একর জমিতে শ্যালো মেশিন দিয়ে ক্ষেতে পানি দিচ্ছেন এবং জমি প্রস্তুত করে সেখানে আমনচারা রোপণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষক তবারক মিয়া বলেন, আষাঢ় গেল, শ্রাবণ মাসের মাঝ সময় অতিবাহিত হচেছ রংপুরে বৃষ্টি নেই। শ্যালো যন্ত্র দিয়া পানি দিয়ে আমন চারা রোপন করছি। এই পানি টাকার বিনিময়ে কেনা লাগছে। এতে আমন ধান উৎপাদনে খরচ বেশি পড়বে।

জেলার কাউনিয়ার গঙ্গা নারায়ন গ্রামের কৃষক চান মিয়া, ফজর আলীসহ অনেকেই বলেন, জমিতে সেচযন্ত্রের মাধ্যমে পানি কিনে চারা রোপণ শুরু করেছেন। এক একর জমিতে প্রতি ঘণ্টায় পানি কিনতে খরচ পড়ছে ৯০০ টাকা। চারা রোপণের উপযুক্ত ক্ষেত তৈরি করতে পানি দিতে হয় কমপক্ষে তিন ঘণ্টা।

একই এলাকার আমিনুল ইসলাম নামের একজন কৃষক প্রায় আট একর জমিতে সেচ দিয়ে তৈরি করছেন আমন খেত। মাঝেমধ্যে আকাশে মেঘ করলেও বৃষ্টি হয় না। শ্যালো মেসিনের সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে পানি দিয়ে জমি তৈরি করে আমন চারা রোপণ করতে হচ্ছে।

রংপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ওবাইদুল রহমান মন্ডল বলেন, বৃষ্টির পানির অভাবে গোটা জেলায় সম্পুরক সেচের মাধ্যমে রোপা আমন ধান রোপনের কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩০ ভাগ রোপা আন ধানের চারা রোপন করা হয়েছে তবে বৃস্টিপাত হলে তা স্বাভাবিক হবে।

এই বিভাগের আরও খবর