লালমনিরহাট বার্তা
আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলীর কমিশন বাণিজ্য!
সুলতান হোসেন | ১২ অক্টো, ২০২১, ৬:৪৬ AM
আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলীর কমিশন বাণিজ্য!
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানার বিরুদ্ধে এবার কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদারর। শুধু প্রকৌশলী সোহেল রানা নয়,তার সাথে উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হকও জড়িত রয়েছেন বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন।

অভিযোগে জানাগেছে, আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে সোহেল রানা গত ১৩ আগস্ট ২০১৯ সালে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি একই অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হককে সাথে নিয়ে একটি সিণ্ডিকেট গড়ে তোলেন। তাদের নিয়নমাফিক কাজ করার পাশাপাশি নিদিষ্ট হারে হিসাব করে তাদেরকে কমিশন দিতে হয়। তাদের নিয়ন অনুযায়ী শতকরা এক টাকা হারে চুড়ান্ত বিল উত্তোলনের পর হিসেব করে তাদের দুজনকে এ কমিশনের টাকা দিতে হয়। পরে তারা দুজন এ টাকা ভাগবটোয়ারা করে নেন বলে সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদাররা দাবী করেন। শুধু তাই নয়,উন্নয়নমূলক কাজে তাদেরকে নানাভাবে হয়রানী করেন উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা। এমন অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

স্থানীয় ঠিকাদার ইকবাল হোসেন দাউদ দাবী করে বলেন,উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করার পর চুড়ান্ত বিল উত্তোলন করার পর হিসেব করে কমিশনের টাকা দিতে হয়েছে। তিনি আরো বলেন,এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ লক্ষ টাকা কমিশন হিসেবে নিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা। আর কমিশনের টাকার ভাগ উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হকও পেয়ে থাকেন।

এদিকে গত অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিবি) থেকে তদারকি বিল বাবদ ৮৪ হাজার টাকা উত্তোলন করে পুরো টাকাটাই উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা আত্নসাত করেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অফিসের কর্মচারীরা অভিযোগ করেন।

এদিকে উন্নয়নমূলক কাজের সাথে জড়িত ঠিকাদাররা নাম প্রকাশ না করে অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী বাহিরে কাজের তদারকি করার জন্য একটি প্রাইভেট কারে করে এলাকায় যান। কাজ তদারকি শেষে অফিসের ফেরার পূর্বে তার গাড়ির তেল খরচ ও চালকের সম্মানী দাবী করেন। তার চাহিদামত টাকা না দিলে নানাভাবে তাদেরকে হয়রানী করা হয় বলে তারা দাবী করেন। তারা আরো বলেন,এভাবে তিনি ঠিকাদারদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।

একটি সুত্র মতে, গত ১৫ আগস্ট আদিতমারীতে একটি কর্মসূচি পালন শেষে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের বড়ভিটা নামক স্থানে উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা ছিনতাইকারীর হাতে পরেন। পরে এ ঘটনায় তিনি ওই থানায় একটি জিডি করেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করে বলেন, তিনি ছিনতাইকারীর কবলে নয়, মেয়ে সংক্রান্ত ঝামেলায় পরেছিলেন।

এদিকে আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হক ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজ শেষে হিসেব করে কমিশন নেয়ার একটি ভিডিও এ প্রতিনিধির হাতে এসেছে। পরবর্তীতে ভিডিওটি প্রকাশ করা হবে।

আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হক তার বিরুদ্ধে আনীত কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাজ শুরু করার পর আমি শুধু ওইসব কাজের তদারকি করে থাকি মাত্র।

আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানাও তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের আনীত কমিশন বাণিজ্যের বিষয় অস্বীকার করেছেন। তিনি আরো বলেন, ভালভাবে কাজ বুঝে নিতে গেলে কিছুলোক এধরনের অভিযোগ করে থাকেন বলে তিনি দাবী করেন।
এই বিভাগের আরও খবর