সুদানে যুদ্ধ শুরুর দুই সপ্তাহ পরে যুদ্ধ এড়ানোয় ব্যর্থতার দায় স্বীকার করেছেন জাতি সংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস৷ পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুমান করতে না পারার কারণেই এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি৷

জাতিসংঘের মহাসচিব এমন সময়ে তা স্বীকার করলেন যখন যুদ্ধ এবং খাদ্যাভাবে উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে দেখা দিয়েছে মানবিক সংকট৷

প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের দেশটির অভুক্তদের কাছে খাদ্য সহায়তা পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে৷ এ সপ্তাহে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি)-র খাদ্যের ছয়টি ট্রাক দারফুর থেকে লুট হয়েছে৷

দারফুরের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ট্রাকগুলো লুট হওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ৷ সংস্থাটির মানবিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথ জানান, সুদানের যুদ্ধরত দুই পক্ষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরই ওই খাদ্য সহায়তা পাঠানো হয়েছিল৷

খাদ্য সহায়তা পাঠানোর জন্য আবার সুদানের যুদ্ধরত দুই পক্ষের কাছে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছে জাতিসংঘ৷ আন্তর্জাতিক সংগঠনটির সহকারি মুখপাত্র ফারহান হক জানান, সুদানে এ মুহূর্তে ডাব্লিউএফপির মোট ৮০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যসহায়তা রয়েছে, যা থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৭ হাজার মেট্রিক টন দারফুর এবং রাজধানী খার্তুমসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে লুট হয়েছে৷

এ পরিস্থিতিতে দেশটির সরকারের প্রতি মানবিক সহায়ত পৌঁছানোর রাস্তা উন্মুক্ত এবং নিরাপদ রাখার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মানবিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথ বলেন, ‘‘এমন নয় যে আমরা চাঁদ হাতে তুলে দিতে বলছি৷ আমরা শুধু বলছি, মানুষ এবং মানবিক সহায়তাকে চলাচল করতে দেয়া হোক৷ সব দেশেই আমরা তা করে থাকি, এমনকি যুদ্ধবিরতি ছাড়াও করি৷''

সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর মধ্যে সশস্ত্র লড়াইয়ে বিরতি ঘোষণা করা হলেও কার্যত হামলা-পাল্টা হামলা এখনো চলছে৷ বুধবার সেনাপ্রধান আব্দেল ফাতা আল-বুরহান এবং আরএসএফ-এর প্রধানের শক্তি প্রদর্শনের এ লড়াই এড়ানোয় ব্যর্থতার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন আন্তনিও গুতেরেস৷ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সংঘর্ষ যে এমন পর্যায়ে যাবে তা আমরা তো বটেই, আসলে অনেকেই বুঝতে পারেনি৷ এ কথা বলতেই পারি যে, এটা (যুদ্ধ) এড়াতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি৷''