লালমনিরহাট বার্তা
সবচেয়ে বেশি সম্পদ লিটন, রজব ও সামসুন নাহারের
বার্তা অনলাইন ডেস্ক | ১৭ জুন, ২০২৩, ১১:৩৫ AM
সবচেয়ে বেশি সম্পদ লিটন, রজব ও সামসুন নাহারের

আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিত রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, সম্পদ ও আয়ের তথ্য প্রকাশ করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন।

শনিবার (১৭ জুন) বেলা ১১টার দিকে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংগঠনের রাজশাহী জেলা ও মহানগর কমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। এ সময় রাজশাহী মহানগর সভাপতি পিয়ার বখশ, জেলা সভাপতি আহমেদ সফিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল আলম ও বিভাগীয় সমন্বয়কারী মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের জমা হলফনামায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, মেয়র প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুরশিদ আলম ও জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার স্নাতকোত্তর, আওয়ামী লীগের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন স্নাতক ও জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন। ৩০টি ওয়ার্ডের ১১২ কাউন্সিলর প্রার্থীর ৩৫ জন এসএসসির নিচে, ২২ জন এসএসসি, ২২ জন এইচএসসি, ২৩ জন স্নাতক ও ১০ জন স্নাতকোত্তর। ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ৪৬ প্রার্থীর মধ্যে ২০ জন এসএসসির নিচে, ৭ জন এসএসসি, ৭ জন এইচএসসি, ৪ জন স্নাতক ও ৮ জন স্নাতকোত্তর।

এদিকে চার মেয়র প্রার্থীর দু’জন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও লতিফ আনোয়ার আইনজীবী, সাইফুল ইসলাম স্বপন ব্যবসায়ী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুরশিদ আলম ধর্মীয় আলোচক। ১১২ সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর ৮৩ জন ব্যবসায়ী, ১২ জন কৃষিজীবী, ৮ জন চাকরিজীবী ও ২ জন আইনজীবী। সংরক্ষিত ৪৬ কাউন্সিলর প্রার্থীর ৩২ জন গৃহিণী, ১১ জন ব্যবসায়ী ও ১ জন চাকুরিজীবী।

এদিকে চার মেয়র প্রার্থীর মধ্যে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে অতীতে ২টি ফৌজদারি মামলা ছিল। যা রাষ্ট্র কর্তৃক প্রত্যাহার করা হয়েছে। সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর ৪২ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা চলমান। অতীতে মামলা ছিল ৪১ জনের বিরুদ্ধে। বর্তমানে ১৩ জনের বিরুদ্ধে এবং অতীতে ৬ জনের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় মামলা ছিল। বর্তমানে ৩০২ ধারায় মামলা রয়েছে ১ জনের। সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ২ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। অতীতে মামলা ছিল ২ জনের বিরুদ্ধে।

মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের বছরে আয় ৬ কোটি ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা, মুরশিদ আলমের আয় ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, সাইফুল ইসলাম স্বপনের ৩ লাখ ও লতিফ আনোয়ারের আয় ৩ লাখ টাকা। কাউন্সিলর প্রার্থী ৮২ জনের বছরে আয় ৫ লাখের কম। ৫ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা আয় করেন ২৬ জন, ২ জনের বছরে আয় ২৫ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা। ১ কোটির অধিক আয় ১নং ওয়ার্ডের প্রার্থী রজব আলী চার কোটি ৬৭ হাজার ৭৪৫ টাকা, সর্বনিম্ন আয় ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী সরিফুল ইসলাম বাবুর ১৮ লাখ ১৩ হাজার ৩৩৫ টাকা। সংরক্ষিত প্রার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ আয় সামসুন নাহারের ১৬ লাখ ৪৬ হাজজার ৬৫২ টাকা ও সর্বনিম্ন আয় মমতাজ মহলের ৬ লাখ ৬০ হাজার ৪৫০ টাকা। সংরক্ষিত ৪৬ প্রার্থীর ৩৯ জনের বার্ষিক আয় ৫ লাখের কম। ৫ লক্ষ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা আয় করেন ৭ জন।

৪ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ২ জনের সম্পদের পরিমাণ ৫ লক্ষ টাকার কম, ১ জনের ৫ লক্ষ থেকে ২৫ লাখ টাকার মধ্যে এবং ১ জনের ৫ কোটি টাকার ওপরে। মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে বেশি সম্পদ এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের (৭ কোটি ৯০ লক্ষ ৪৪ হাজার ৮৯ টাকা)। দ্বিতীয় অবস্থানে মুরশিদ আলমের (১২ লক্ষ টাকা)। সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ৪৫ জনের ৫ লাখের কম, ৪৫ জনের ৫ থেকে ২৫ লাখ, ৮ জনের ২৫ থেকে ৫০ লাখ, ৬ জনের ৫০ থেকে ১ কোটি, ৩ জনের ১ থেকে ৫ কোটি এবং ২ জনের ৫ কোটির অধিক টাকার সম্পদের মালিক। সংরক্ষিত প্রার্থীর ৩১ জনের সম্পদ ৫ লাখের কম। ১১ জনের ৫ থেকে ২৫ লাখ, ৩ জনের ২৫ থেকে ৫০ লাখ এবং ১ জনের ৫০ থেকে ১ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।

মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের দেনার পরিমাণ ২০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ১৪ কাউন্সিলর প্রার্থীর দেনা আছে। একজনের আছে কোটি টাকার অধিক দেনা। ৪৬ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৩ জনের দেনা আছে।

মেয়র প্রার্থীর দু’জন ৪ হাজার টাকা এবং এএইচএম খায়রুজজ্জজামান সর্বোচ্চ ৫১ লক্ষ টাকা আয়কর দিয়েছেন। কাউন্সিলর প্রার্থীর ৫৮ জন আয়কর দেন। ৩৬ জন ৫ হাজার বা কম। ৫ জন লক্ষাধিক টাকা, সংরক্ষিত প্রার্থীর ১৪ জন আয়কর দেন। ১২ জনের আয়কর ৫ হাজার টাকার কম।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের এসব তথ্য ভোটাররা জানবেন এবং ভালোভাবে জেনে, শুনে ও বুঝে সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থীদের ভোটাধিকার দিবেন। জনগণের সম্মতির শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সঠিক জনপ্রতিনিধি নির্বাচন তথা সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচন পরিচালনার মূল দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের হলেও এতে অনেক অংশীজন (স্টেক হোল্ডার) সংশ্লিষ্ট থাকে। আসন্ন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ তথা সুষ্ঠু করতে লেভেল প্লেইং ফিল্ড দৃশ্যমান প্রয়োজন। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন, সরকার, জনপ্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজন যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন সেটাই সকলের প্রত্যাশা।

এই বিভাগের আরও খবর