রংপুর সিটি করর্পোরেশন নির্বাচনে কামার পাড়া এলাকা থেকে ভোট না পাওয়ায় নিজের এলাকায় টিসিবির পয়েন্ট নেয়ার প্রতি বাদে দারিদ্র নারী পুরুষেরা বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে।সিটি করর্পোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ভোট না পাওয়ার অভিযোগ তুলে নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজু কর্তৃক টিসিবির পন্য বিক্রয় কেন্দ্র বন্ধ করে দেবার অভিযোগে টিসিবির কার্ডধারী শত শত বিক্ষুব্ধ হতদরিদ্র নারী পুরুষ নগরীর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সন্ধা পর্যন্ত অব্যাহত রেখেছে। ফলে নগরীর কামার পাড়া সড়কে ঢাকাগামি কোচ সহ সকল যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজু বলছেন, তার একক ক্ষমতায় তিনি ন্যায্য মুল্যে টিসিবির পন্য বিক্রির স্থান পরিবর্তন করেছেন এ ব্যাপারে কারও খবরদারি তিনি শুনবেননা বলে হুমকি দিয়েছেন। অন্যদিকে টিসিবি বলছে ন্যায্য মুল্যে হতদরিদ্র পরিবার গুলো যাতে পন্য পায় সে জন্য তাদের কার্ড দেয়া হয়েছে এটা পরিবর্তন বা না দেবার এখতিয়ার কাউন্সিলরের নেই।
এলাকাবকাসি ও প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন,সরকার টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্য মুল্যে তেল চিনি , মসুর ডাল সহ বিভিন্ন পন্য বিক্রির জন্য রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে বিক্রিয় কেন্দ্রের স্থান নির্ধারন করে দিয়েছেন। সেখান থেকে কার্ডধারীরাই শুধু মাত্র টিসিবি পন্য কিনতে পারবে। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য নগরীর কামারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একটি ও গনেশপুর মসজিদ সংলগ্ন মাঠে দুটি স্থানে টিসিবি পন্য বিক্রি করা হয়ে থাকে। করোনা কালিন সময় থেকে এ ভাবেই পন্য বিক্রি করছে টিসিবির ডিলার। তারা ট্রাকে করে এসব পন্য বিক্রি করে আসছিলো। কিন্তু গত ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং এবারেও কাউন্সিলর নির্বাচিত মিজহানুর রহমান মিজু কামারপাড়া এলাকায় নির্বাচনে ভোট পাননি এমন অভিযোগ এনে আজ বুধবার কামার পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বিক্রয় কেন্দ্রটি জোর করে বন্ধ করে দিয়ে তিনি তার বাড়ির সামনে গনেশপুর ও গনেশপুর মসজিদ সংলগ্ন স্থানে টিসিবি পন্য ডিলারকে বিক্রিয় করতে বাধ্য করেন বলে এলাকাবাসির অভিযোগ। এ ঘটনা জানাজানি হলে কামারপাড়া ও বাবুখার শত শত কার্ডদারী নারী -পুরুষ ৪ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত গনেশপুর মসজিদ সংলগ্ন স্থানে গেলে কাউন্সিলরের লেলিয়ে দেয়া লোকজন ঘোষনা দেন কামারপাড়্ াআর বাবু খা মহল্লার কার্ডধারীরা টিসিবির পন্য পাবেনা। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ কার্ডধারীরা আগের নির্ধারিত স্থানে দুপুর ১২টা থেকে টিসিবি পন্য বিক্রির দাবিতে বিক্ষোভ করতে শুরু করে। অব্যাহত বিক্ষোভ করলেও কাউন্সিলর মিজুর ক্ষমতার দাপট আর নিজের সিদ্ধান্তে অনঢ় থাকার কারনে কার্ডধারী শত শত হতদন্ত্রি নারী পুরুষ টিসিবি পন্য নিতে পারেনি। বিকেল ৪ টার দিকে আবারো তারা নগরীর কামারপাড়া শাপলা চত্বর সড়ক অবরোধ করে টিসিবির কার্ড প্রদর্শন করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
টিসিবির কার্ডদারী সালমা বেগম, আফসানা শারমিন অভিযোগ করেন, ন্যায্য মুল্যে ২ লিটার তেল ২ ডিলার ডাল ও এক কেজি করে চিনি তাদের দেবার কথা কিন্তু কাউন্সিলর মিজু তাদের এলাকারয় নাকি ভোট পায়নি এ কথা বলে টিসিবি পন্য বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। একই অভিযোগ করেন বাবু খাঁ মহল্লার রাহেলা বেগম , সালাম সহ অনেকেই।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম , কাউন্সিলর মাহবুবার রহমান মঞ্জু ও রংপুর মেট্রো কোতয়ালী থানার ওসি ঘটনা স্থলে এসে কাউন্সিলর মিজুর সেচ্ছাচারিতার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ঘোষনা দেয়।আগামী রোববার আগের স্থানেই টিসিবির কার্ডধারীরা টিসিবি পন্য পাবে আর এ ঘটনার জন্য কাউন্সিলর মিজুর বাড়াবাড়িকে দায়ি করেন তারা। পরে তাদের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষোভকারীরা।
এদিকে বিক্ষোভের খবর পেয়ে সিটি করর্পোরেশনের নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট নজরুল ইসলাম মৃধা ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন কিন্তু একজন কাউন্সিলরের একগুয়েমির কারনে আবারো বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে কার্ডদারীরা বলে জানান।
এ ব্যাপারে সিটি করর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা রুহুল আমিন মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জরুরী কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন জানিয়ে বলেন এটি অন্যায় হয়েছে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান। তবে অভিযুক্ত মিজু কাউন্সিলর ঘটনার পর থেকে ফোন বন্ধ রাখায় তার সাথে কথা বলা যায়নি।
