লালমনিরহাট বার্তা
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জনবল সংকটের কারনে চিকিৎসায় সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারছে না রোগীদের
রংপুর অফিস | ২৯ আগ, ২০২৩, ১০:২৯ AM
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জনবল সংকটের কারনে চিকিৎসায় সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারছে না রোগীদের

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ৫‘শ থেকে ১ হাজার শয্যায় উন্নীত হলেও জনবল আগের মতোই রয়েছে।হাসপাতালে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার রোগী ভর্তি থাকেন। একে তো জনবল সংকট, তার ওপর রোগী দ্বিগুণেরও বেশি।এ অবস্থায় চিকিৎসক-নার্স,স্টাফরা নির্ধারিত দায়িত্বের চেয়ে বেশি কাজ করছেন। এতেও রোগী ও স্বজনদের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারছেনা।প্রায়ই হাসপাতালের টয়লেট, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সহ নানা বিষয় নিয়ে অভিযোগ উঠছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ১৯৬৮ সালে ২৫০ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। পরে ১৯৭৬ সালে হাসপাতালটিকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর ১৯৯৩ সালে ১০০ শয্যা বর্ধিত করে ৬০০ শয্যায় রূপান্তরিত করা হয়। সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হয়। সেই সঙ্গে হাসপাতালে আধুনিক সিসিইউ, আইসিইউ, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটসহ বিভিন্ন বিভাগ চালু করা হয়।

এদিকে কাগজে-কলমে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল হলেও প্রতিদিন এ হাসপাতালে দুই থেকে আড়াই হাজার রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন।বহির্বিভাগে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪‘শ রোগী এবং জরুরি বিভাগে প্রায় ৫“শ রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন।শয্যা ও রোগীর চাপ বাড়লেও চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে ৫‘শ শয্যার জনবল দিয়েই। চিকিৎসক-নার্স সংকটের কারণে রোগীরা সময়মতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না।জনবল বাড়ানোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।তারা দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন।এ ছাড়া হাসপাতালে ১৮২টি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ শুন্য রয়েছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্য মতে, হাসপাতালের প্রথম শ্রেণির চিকিৎসক সহ অন্যান্যদের ৩২২টি পদ থাকলেও খালি রয়েছে ২২৭ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির নার্সসহ অন্যান্যদের ৯৯৩টি পদ থাকলেও রয়েছেন ৯৭০ জন। তৃতীয় শ্রেণির ১০৫ লোকবল থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ৬৬ জন, চতুর্থ শ্রেণির ৪৪৫ জনের স্থলে রয়েছেন ২৬৩ জন। শুধু তৃতীয় শ্রেণির সহকারী নার্সের ১০টি পদের বিপরীতে ১০ জনই রয়েছেন।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডাঃ জামাল উদ্দিন মিন্টু বলেন,রোগীদের বাড়তি চাপের সঙ্গে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় চিকিৎসাসেবা দিতে নানা সমস্যায় পড়তে হয়।আইসিইউ, সিসিইউ, বার্ন ইউনিটসহ বিশেষায়িত বিভাগ গুলোতে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবলের প্রয়োজন। হাসপাতালে এসব বিভাগে চিকিৎসক, নার্সসহ স্টাফদের সংকট রয়েছে। শূন্য পদগুলোতে জনবল দ্রæত নিয়োগ হলে রোগীরা তাদের কাঙ্খিত সেবা পাবেন।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহফুজার রহমান বলেন,রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ৫০০ থেকে ১ হাজার শয্যায় উন্নীত হলেও জনবল আগের মতোই রয়েছে।হাসপাতালে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার রোগী ভর্তি থাকেন। একে তো জনবল সংকট, তার ওপর রোগী দ্বিগুণেরও বেশি।এ অবস্থায় চিকিৎসক-নার্স, স্টাফরা নির্ধারি ত দায়িত্বের চেয়ে বেশি কাজ করেন। এরপরেও রোগী ও স্বজনদের সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না।প্রায়ই হাসপাতালের টয়লেট, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সহ নানা বিষয় নিয়ে অভিযোগ করে আসছেন। জনবল কাঠামো ও রোগী অনুযায়ী শয্যা বর্ধিত করা হলে চিকিৎসক ও স্টাফরা স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারবেন। এতে করে রোগীরাও তাদের কাঙ্খিত সেবা পাবেন।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ইউনুস আলী বলেন,রংপুর বিভাগের দুই কোটি মানুষের চিকিৎসার ভরসা স্থল এ হাসপাতাল।এখানে প্রতিদিনই আউটডোর, জরুরি বিভাগের রোগীদের ভিড় লেগেই থাকে। হাসপাতাল ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হলেও জনবল কাঠামো ৫‘শ শয্যারই রয়েছে। জনবল বাড়ানোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন।হাসপাতালে ১৮২টি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ শুন্য রয়েছে।এসব শূন্য পদের জন্য মাস্টাররোলে জনবল পদায়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর