লালমনিরহাট বার্তা
ইরানের সঙ্গে গ্যাসলাইনের ব্যাপারে পাকিস্তান কোন চাপের কাছে নত হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভয়েস অফ আমেরিকা | ৮ মে, ২০২৪, ৯:৩৮ AM
ইরানের সঙ্গে গ্যাসলাইনের ব্যাপারে পাকিস্তান কোন চাপের কাছে নত হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার মঙ্গলবার বলেন ইরানের সঙ্গে বিলম্বিত গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণে তার দেশ পিছিয়ে আসবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করেই মঙ্গলবার দার এক প্রেস ব্রিফিং’এ বলেন, “আমরা কাউকে তাদের ভেটো ব্যবহার করতে দেবো না”।

পাকিস্তান ও ইরান ২০০৯ সালের জুন মাসে একটি গ্যাস ক্রয় ও বিক্রয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। চুক্তির আওতায় পাইপলাইনের মাধ্যমে ইরানের দক্ষিণ পার্স ফিল্ড থেকে জ্বালাানি শক্তিতে অভাবগ্রস্ত দেশ পাকিস্তান প্রতিদিন ৭৫ থেকে ১০০ কোটি কিউবিক ফুট গ্যস আমদানি করতে পারবে।

ইরান যদিও ২০১১ সালেই দাবি করে যে তারা তাদের অংশের পাইপলাইনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে,পাকিস্তানি দিক থেকে এ বিষয়ে বিলম্ব হতেই থাকে, মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের আশঙ্কায়।

বাইডেন প্রশাসন বার বার বলেছে তেহরান তার পরমাণু কর্মসূচীর কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে বলে তারা পাকিস্তান-েইরান পাইপলাইনকে সমর্থন করে না।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসলামাবাদে সংবাদদাতাদের বলেন, “পাকিস্তানের স্বার্থ বিচেনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে কি,কখন এবং কেমন করে কিছু করা হবে। এটি আমাদেরকে কারও বলতে হবে না”।

ফেব্রুয়ারি মাসে. পাকিস্তানের বিদায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই প্রকল্পের বিলম্বের জন্য কোটি কোটি ডলারের জরিমানা এড়াতে ইরানের সীমান্ত থেকে পাকিস্তানের অঞ্চল অবধি সামান্য পাইপলাইন নির্মাণ অনুমোদন করে।

মার্চ মাসে ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী শে হতবাজ শরিফের সরকার এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু করেননি।

এপ্রিলের শেসের দিকে ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পাকিস্তান সফরের শেষে দীর্ঘ যৌথ বিবৃতিতে পাইপলাইনের বিষয়টি প্রসঙ্গক্রমে সামান্যই উল্লেখ করা হয় এবং এতে এ রকম অনুমান করা হয় যে এই প্রকল্পটিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না।

তবে পাকিস্তান এই প্রকল্প বিলম্বিত করছে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কারণে,দার এই ধারণাকে নাকচ করে “।বলেন, “ আমাদের স্বার্থের প্রতি আমাদের নজর রাখতে হবে। আমাদের প্রতিশ্রুতিগুলি দেখতে হবে”। তবে তিনি স্বীকার করেন যে পাইপলাইনের “বিষয়টি বেশ জটিল”।

রাইসির সফরের সময়ে দু পক্ষই দ্বিপাক্ষিক বানিজ্যকে এক হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করতে সম্মত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর আরেকবার সতর্ক করে দেয় যে তেহরানের সঙ্গে ব্যবসা করলে ইসলামাবাদ সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।

গত মাসে এক প্রেস ব্রিফিং’এর সময় পররাষ্ট্র দপ্তরের উপ-মুখপাত্র বেদান্ত পাটেল বলেন, “সাধারণত যারা ইসরাইলের সঙ্গে বানিজ্যিক চুক্তির কথা বিবেচনা করছে তাদের যে কাউকে আমরা সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে দিই”।

জ্বালানি ও অর্থাভাবগ্রস্ত ২৪ কোটি জনসংখ্যা অধ্যূষিত দেশটির প্রয়োজন প্রতিবেশির কাছ থেকে সস্তায় জ্বালানি পাওয়া।

ইরানের ঘোর শত্রু সৌদি আরব যার আর্থিক সহায়তার উপর পাকিস্তান প্রচন্ড ভাবে নির্ভরশীল, মনে করা হয় তারাও এই পাইপলাইনের বিরোধী।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্রী মুমতাজ জাগরা বালোচ এপ্রিলের শেষের দিকে মিডিয়িাকে জানান যে এই পাইপলাইনকে কেন্দ্র করে যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সে বিষয়ে ইসলামাবাদ ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা করছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন জ্বালানি তেলের প্রবাহ শুরু হলেই নিষেধাজ্ঞাও শুরু হবে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র ও জ্বালানি শক্তি মন্ত্রনালয় জানায়নি যে নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় পাবার জন্য ইসলামাবাদ ওয়াশিংটনের কাছে কোন আবেদন জানিয়েছে কীনা।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য-এশিয়া বিষয়ক সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু মার্চ মাসে কংগ্রেসের এক শুনানিকালে বলেন যে ইরানি তেল কেনার জন্য পাকিস্তান কোন ছাড় পাবার আবেদন করেনি।

এই বিভাগের আরও খবর