লালমনিরহাট বার্তা
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বেশিরভাগ রাজ্যে ভোটদানের হার কম
ডয়চে ভেলে | ৮ মে, ২০২৪, ৫:১২ AM
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বেশিরভাগ রাজ্যে ভোটদানের হার কম

তৃতীয় পর্বেও পশ্চিমবঙ্গ বাদে অন্য রাজ্যে ভোটের হার কম। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সারা দেশে ভোটের হার ছিল প্রায় ৬০ শতাংশ।

ভারতে মোট সাত দফায় লোকসভা নির্বাচন হচ্ছে।। এর মধ্যে তৃতীয় দফায় দেশের ১০টি রাজ্য ও দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ৯৩টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ছিল পশ্চিমবঙ্গের চারটি কেন্দ্র।

ভোটদানের হার

গোটা দেশে ভোটদানের হারে এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গ। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রায় ৭৪ শতাংশ ভোট পড়েছে এ রাজ্যে। মুর্শিদাবাদে ভোট পড়েছে ৭৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। জঙ্গিপুরে ৭২ দশমিক ১৩, মালদহ উত্তরে ৭৩ দশমিক ৩০ এবং, মালদহ দক্ষিণে ৭৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ, গোয়া ও অসম ছাড়া দেশের অন্যান্য অংশে ভোটদানের হার ততটা আশানুরূপ নয়। তিনটে পর্যন্ত সারা দেশের ৯৩টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৫০ দশমিক ৭১ শতাংশ। গোয়ায় ৬১ দশমিক ৩৯ শতাংশ ও আসামে ৬৩ শতাংশ ভোট পড়েছে।

মহারাষ্ট্রে ভোটদানের হার ৪২ দশমিক ৬৩ শতাংশ। বিহারে ৪৬ দশমিক ৬৯, ছত্তিশগড়ে ৫৮ দশমিক ১৯, কর্নাটকে ৫৪ দশমিক ২০, মধ্যপ্রদেশে ৫৪ ও উত্তরপ্রদেশে ৪৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

এই দফার কেন্দ্রগুলির মধ্যে অধিকাংশ আসনে বিজেপি গতবার জয় পেয়েছিল, যে ফল গত লোকসভা নির্বাচনে মোদী ব্রিগেডকে ক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ ও কর্নাটক বাদে বাকি আটটি রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে। এখানে কম ভোটের হার দেখে বোঝা যাচ্ছে, ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ কম।

এটা শাসক না বিরোধী, কার পক্ষে চিন্তার কারণ? রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী বলেন, "যারা প্রতিবাদ করতে চান, তারা সবাই ভোট দিতে এলে ভোটদানের হার বাড়ে, এমন একটা ধারণা ছিল। এখন আর এমনটা ভাবা ঠিক নয়। ভোট দিয়েও যে মানুষের সমস্যা মিটছে, সেটা বলা যায় না। ভোটদানের হার কমে যাওয়ায় বিরাট পরিবর্তন এসে যাচ্ছে, এখনই এই ধরনের ভাবনা যুক্তিযুক্ত নয়। ভোটদানের হারের সঙ্গে ফলকে যুক্ত না করে গণনা পর্যন্ত অপেক্ষা করাই ভালো।"

পশ্চিমবঙ্গে গন্ডগোল

প্রথম দুই দফায় রাজ্যের ছটি আসনে ভোট নেয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে মালদহ উত্তর, মালদহ দক্ষিণ, মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর কেন্দ্রে। শেষ দুটি আসনে গতবার জিতেছিল তৃণমূল। মালদহ উত্তরে বিজেপি ও দক্ষিণে কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল।

সাত দফার নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আজকের দফায় মোট ৩৩৪ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করেছে নির্বাচন কমিশন।

মালদহে ১৪৪ কোম্পানি, মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলায় ১১৪ কোম্পানি, জঙ্গিপুর পুলিশ জেলায় ১১৪ কোম্পানি বাহিনী রয়েছে। প্রতি বুথে ওয়েবকাস্টিংয়ের মাধ্যমে নজরদারি করছে কমিশন।

তা সত্ত্বেও সকাল থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর মিলেছে চার কেন্দ্র থেকেই। মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের ডোমকলে বাম ও তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা বাম ভোটারদের বাধা দিয়েছে।

মালদহ দক্ষিণ লোকসভার বৈষ্ণবনগরে ভোটকেন্দ্রের কাছে জমায়েত করছিল কিছু মানুষ। ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ ভিড় সরিয়ে দেয়।

মালদহের রতুয়ায় বোমাবাজির ছবি সামনে এসেছে। গ্রামের পথে মুখে গামছা বাঁধা দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করে ভোটারদের ভয় দেখাতে। মালদহের মানিকচকে কংগ্রেসের এজেন্টকে বুথে বসতে না দেয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পরে কংগ্রেসের এজেন্ট বসানো হয়। তৃণমূলের দাবি, এজেন্ট না এনে মিথ্যা দাবি করেছে কংগ্রেস।

মালদহের ইংরেজবাজারের একটি বুথে রাজ্য পুলিশ ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। এমনটাই অভিযোগ তোলে বিজেপি। পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলেন এখানকার বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। তাঁর উদ্যোগে বিজেপি এজেন্ট বসানো হয়।

এদিন মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ভোট নেয়া হয়। সেখানে মোটের উপর ভোট চলছে নির্বিঘ্নে।

দেশের ভোট

তৃতীয় দফায় পশ্চিমবঙ্গ বাদে কয়েকটি বড় রাজ্যে ভোটগ্রহণ হলো। এর মধ্যে গুজরাটের ২৫, কর্নাটকের ১৪, মহারাষ্ট্রের ১১, উত্তরপ্রদেশের ১০ কেন্দ্রে ছিল

নজরকাড়া প্রার্থী রয়েছেন বেশ কয়েকজন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লড়ছেন গান্ধীনগর কেন্দ্র থেকে। এই কেন্দ্র থেকে জিতে লোকসভায় গিয়েছিলেন ভারতের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি। আসামের ধুবড়ি আসন থেকে লড়ছেন এইউডিএফ-এর নেতা বদরুদ্দিন আজমল।

মধ্যপ্রদেশের গুনা আসন থেকে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। এই রাজ্যের বিদিশা কেন্দ্রে লড়ছেন এখানকার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান।

মহারাষ্ট্রের বারামতীতে পাওয়ার পরিবারের মধ্যে লড়াই। এনসিপির দুই গোষ্ঠী মুখোমুখি। শারদ পাওয়ারের কন্যা সুপ্রিয়া সুলে বনাম শারদের ভ্রাতৃবধূ, অজিত পাওয়ারের স্ত্রী সুনেত্রা পাওয়ার। এনসিপি ভেঙে অজিত হাত মিলিয়েছেন বিজেপির সঙ্গে।

কর্নাটকের শিবমোগা কেন্দ্র থেকে লড়ছেন রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপি নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পার ছেলে বি ওয়াই রাঘবেন্দ্র। তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী গীতা শিবরাজ কুমার। ইনি কন্নড় ছবির সুপারস্টার শিবরাজ কুমারের সহধর্মিণী ও রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এস বঙ্গারাপ্পার কন্যা।

এই বিভাগের আরও খবর