লালমনিরহাট বার্তা
জনবন্ধুর নেতৃত্বে উজ্জীবিত জাতীয় পার্টি - খন্দকার দেলোয়ার জালালী।
বার্তা ডেস্কঃ | ১ জানু, ২০২২, ৮:১১ AM
জনবন্ধুর নেতৃত্বে উজ্জীবিত জাতীয় পার্টি - খন্দকার দেলোয়ার জালালী।
পয়লা জানুয়ারি। দেশের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির শুভ জন্মদিন। ১৯৮৬ সালের এই দিনেসাবেক রাষ্ট্রপতি, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এক ঐতিহাসিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠা করেন জাতীয় পার্টি। সেদিনের রাজনৈতিক বাস্তবতায় দেশের গণতন্ত্র সুসংহত করতে জাতীয় পার্টির জন্ম ছিলো অনিবার্য। দেশের উন্নয়ণ, সুশাসন, আর্থ-সামাজিক মুক্তি আর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় পার্টির রয়েছে গৌরবোজ্জল ঐতিহ্য।
বর্তমান একাদশ সংসদে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে জাতীয় পার্টি। দশম জাতীয় সংসদেও প্রধান বিরোধী দল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে রাজনৈকি ঐহিত্য সম্বৃদ্ধ দলটি। ১৯৮৬ সালের পর থেকে প্রতিটি সংসদেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে জাতীয় পার্টি। এছাড়া ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকার গঠনে জাতীয় পার্টি সব সময় নিয়ামক শক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হয়েছে।
দেশের ইতিহাসে সব চেয়ে বেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে জাতীয় পার্টি। প্রায় তিন যুগে জাতীয় পার্টিকে নিঃশ্চিহ্ন করতে দেশী-বিদেশী অনেক চক্রান্ত হয়েছে। সেই চক্রান্তে কয়েক বারভাঙনের শিকারও হয়েছে গণমানুষের ভালোবাসায় সিক্ত দলটি। কিন্তু, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতি সাধারণ মানুষের অনুরাগ আর লাঙলের ওপর দেশবাসীর আস্থায় জাতীয় পার্টি এখনো রাজনীতির মাঠে ঐতিহ্য নিয়ে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে গৌরবোজ্জল ইতিহাস সৃষ্টি করেছে জাতীয় পার্টি।
গেলো ৩ যুগে যারা ক্ষমতার লোভ আর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে জাতীয় পার্টি ভেঙে ব্রাকেটবন্দি জাতীয় পার্টি সৃষ্টি করেছিলেন। তারাই বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। হতাশাগ্রস্থ সেই সব নেতারা অনেকেই এখন জাতীয় পার্টিতে ফিরে আসতে যোগাযোগ করছেন। এছাড়া অনেক বরেণ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই যোগাযোগ করছেন গোলাম মোহাম্মদ কাদের এর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির পতাকাতলে সামলি হতে।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পায়নি কোন রাজনৈতিক শক্তি বা জোট। জাতীয় পার্টির সমর্থন না পেলে কেউ সরকার গঠন করতে পারছিলেন না। আওয়ামী লীগ বা বিএনপি যে দলকেই জাতীয় পার্টি সমর্থন করেবে তারাই সরকার গঠন করবে। এমন বাস্তবতায় জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শর্তহীন সমর্থন দেয় আওয়ামী লীগকে। আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ২১ বছর পর আবারো সরকার গঠন করে। সেদিন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত হতে সহায়তা করেছিলেন।
১৯৯৬ সালে নির্বাচনের আগে দেশের অনেক রাজনৈকি বিশ্লেষকই মনে করেছিলেন ২১ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকে সে সময় দূর্বল হয়ে পড়েছিলো আওয়ামী লীগ। তারা মনে করেছিলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে না পারলে অনিশ্চিত হয়ে যেতো ভবিষ্যত। বর্তমান বাস্তবতায় এক যুগ রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকে অনেকটাই দূর্বল হয়ে পড়েছে বিএনপি। এক যুগেই রাজপথে দাড়াতে পারছে না দলটি। নেতা-কর্মীদের মাঝে এক ধরনের হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু ত্রিশ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকেও জাতীয় পার্টি বর্তমানে অনেক সুসংহত। ছোট্ট ছোট্ট হলেও তৃণমূল পর্যায়ে একটি কর্মী বাহিনী আছে। আছে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। প্রতিনিয়ত সম্মেলন বা কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠিত হচ্ছে দলটি। ঐক্য আর নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্থাই জাতীয় পার্টির প্রধান শক্তি।
২০১৯ সালের ৪ মে জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের-কে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ দেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। শারিরিক অসুস্থ্যতায় পল্লীবন্ধুজাতীয় পার্টি পরিচালনার দায়িত্ব দেন ¯েœহের ছোট ভাইকে। বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে অত্যান্ত মেধাবী ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচিত গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি। সজ্জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম মোহাম্মদ কাদেরবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয় বুয়েট থেকেপাশ করা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। দেশ ও বিদেশে প্রশাসন পরিচালনায় ২৫ বছরের দক্ষতা রয়েছে তাঁর। আর সুদীর্ঘ ৩০ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে রয়েছে চড়াই উৎরাই পেরোনের শানিত অভিজ্ঞতা। এর মাঝে ৫ বছর অত্যান্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন গোলাম মোহাম্মদ কাদের। মন্ত্রনালয় পরিচালনায় কোন দুর্নাম বা কালিমা স্পর্শ করতে পারেনি তাকে। প্রশাসন পরিচালনায় দীর্ঘ ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা, ৩০ বছরের বিরোধী শিবিরে রাজনীতি এবংমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার এমন গৌরবময় সম্বৃদ্ধ ক্যারিয়ার বাংলাদেশের রাজনীতিতে নেই বললেই চলে।
২০১৯ সালের ১৪ জুলাই জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যু বরণ করেন।গোলাম মোহাম্মদ কাদের অত্যান্ত বলিষ্ঠ ভাবেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। দেশের অনেকেই বলেছিলেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টি অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। কিন্তু জাতীয় পার্টি এখন আরো বেশি সুসংহত।
২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর ৯ম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় পার্টির। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউশন চত্বরে বিশাল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে দলটির। সম্মেলনে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উচ্ছসিত শ্লোগান আর মুহুর্মুহু করোতালির মধ্যে কন্ঠভোটে তিন বছরের জন্য পার্টির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়াম্যান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ¯েœহের ছোট ভাই ও একাদশ সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতাএবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক হিসেবেই সমাদৃত জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি।
জাতীয় পার্টিতে গুণগত পরির্বতন আনতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন গোলাম মোহাম্মদ কাদের। জাতীয় সম্মেলনের পরের দিন ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর দলের নেতৃত্ব আরো গতিশীল করতে ৭জন কো-চেয়ারম্যান নিয়োগ করেছেন নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান। সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, প্রয়াত জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, মুজিবুল হক চুন্নু এমপি (বর্তমান মহাসচিব) এবং অ্যাডভোকেট সালমা ইমলাম এমপি।
২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর দেশের ৮টি বিভাগের সাংগঠনিক নেতৃত্ব আরো শক্তিশালী করতে ৮ জন অতিরিক্ত মহাসচিব নিয়োগ দিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।বর্তমানেমেজর (অবঃ) রানা মোহাম্মদ সোহেল এমপি (বরিশাল), সাহিদুর রহমান টেপা (খুলনা), অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম (রাজশাহী), ফখরুল ইমাম এমপি (ময়মনসিংহ), এটিইউ তাজ রহমান (সিলেট), ব্যরিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী (রংপুর), অ্যাডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূইয়া (চট্টগ্রাম) এবং লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি (ঢাকা) অতিরিক্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ইতোমধ্যেই জাতীয় পার্টিতে একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ইউনিট কাজ শুরু করেছে। জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহবায়ক ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর উপদেষ্টা শেরীফা কাদের এমপির নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক স্কোয়ার্ড তৃণমূল পর্যায়ে পরিকল্পিত ভাবে প্রসারিত করছে তাদের কর্মকান্ড।
শুধু দল গোছাতেই নয়, দেশের চলমান সকল ইস্যুতেই জাতীয় পার্টির সক্রিয় ভূমিকা আছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে। সিন্ডিকেটের কারনে ২০১৯ সালে কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য পায়নি, কৃষকরা ধান ক্ষেতে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কোরবানীতে চামড়ার মূল্য পায়নি খুচরা ব্যবসায়ীরা, প্রতিবাদে মাটিতে পুঁতেছিলেন চামড়া। তখন জাতীয় পার্টি মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আবার দেশের চাল রফতানীর বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় পার্টি। এছাড়া জীবন ঘনিষ্ঠ সকল ইস্যুতে সক্রিয় ছিলো জাতীয় পার্টি। ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে। পাশাপাশি দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সহ প্রতিটি গণমাধ্যমের সুখে দুঃখে পাশে থাককে চেষ্টা করেছে জাতীয় পার্টি।
করোনাকালে জাতীয় পার্টি সব চেয়ে সক্রিয় রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে মাঠে থেকেছে। শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের পক্ষ থেকে। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর নির্দেশে সারাদেশে নেতা-কর্মীরা সাধ্যমত ত্রাণ বিতরণ করেছেন। করোনার দুঃসহ ছোবলের সময়ে রাজধানীর গণমাধ্যম কর্মীদের মাঝে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর উপহার মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানটাইজার বিতরণ প্রশংসিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে ত্রাণ বিষয়ক কমিটি গঠন করেছে জাতীয় পার্টি। এছাড়া করোনাকালে যখন সাধারণ রোগিরা স্বাভাবিক চিকিৎসা পাচ্ছিলো না, তখন জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দেশবাসীর জন্য টেলিমেডিসি সেবা নিশ্চিত করা হয়েছিলো। করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এবং মৃতদের দাফন-কাফনের জন্যও প্রস্তুতি ছিলো জাতীয় পার্টির। আবার দেশবাসীর জন্য বিনামূল্যে করোনা ভ্যাকসিন সরবরাহের দাবিও সর্ব প্রথম করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান। এছাড়া ধর্ষণ রোধে মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে আইন করতে সবার আগে সরকারের প্রতি আহবান জানান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
এছাড়া করোনাকালে সারাদেশের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ণে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেজাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান। দুর্নীতি, দুঃশাসন, স্বজনপ্রতি, টেন্ডারবাজী ও দলবাজীর বিরুদ্ধে রাজনীতির মাঠে সোচ্চার আছে জাতীয় পার্টি।
সাধারণ মানুষের সামনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির বিপরীতে জাতীয় পার্টির রাজনীতি হচ্ছে অহিংস। সন্ত্রাস আর সহিংস রাজনীতির বিপরীতে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতেউন্নয়ণ ও সহনশীলতার ঐতিহ্য রয়েছে।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি এবং মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টিকে সংগঠিত করছেন। নিস্কৃয় এবং ঝিমিয়ে পড়া কর্মী ও সমর্থকদের উজ্জীবিত করতে নিচ্ছেন নানা উদ্যোগ। সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের দলে ভিড়িয়ে জাতীয় পার্টিকে আরো শক্তিশালী করছেন। আগামী নির্বাচনে চমক দেখাতে চায় জাতীয় পার্টি।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, জাতীয় পার্টি কোন জোটে নেই, কোন জোটে যাবে তাও নিশ্চিত নয়। তাই তিনশো আসনেই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৃণমূলে দলকে সংগঠিত করছেন। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যেজাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেছেন দেশ ও মানুষের কল্যানের রাজনীতিতে যে কোন ত্যাগ স্বীকার করবে। তিনি বলেন গণমানুষের মুক্তির আন্দোলন হয়তো অনেক কঠিন হবে। কিন্তু জাতীয় পার্টি দেশ ও মানুষের সাথে কোন আপোষ করবে না। অপরদিকে, জাতীয় পার্টি মহাসচিব পরিস্কার ঘোষণা করেছেন আওয়ামী লীগের সাথে আর জাতীয় পার্টির কোন প্রেম নেই। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাথে প্রেম করে জাতীয় পার্টির অনেক ক্ষতি হয়েছে। এই ঘোষণায় জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা সংগঠিত হচ্ছেন নতুন এক স্বপ্ন সামনে রেখে।
১৯৯০ সালে ক্ষমতা হস্থান্তর থেকে শুরু করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পরেও দেশের অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই বলেছেন, এরশাদের মৃত্যুর পরে জাতীয় পার্টি বিলিন হয়ে যাবে। অনেকেই বলেছেন ভেঙে চুর্ন-বিচুর্ন হয়ে যাবে জাতীয় পার্টি। তাদের মন্তব্য ছিলো, জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা হতাশাগ্রস্থ হয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে যোগ দেবেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পরে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে জাতীয় পার্টি।
কিন্তু,পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পরে প্রমান হয়েছে জীবিত এরশাদের চেয়ে মৃত এরশাদ অনেক বেশি শক্তিশালী এবং জনপ্রীয়। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অবর্তমানে জাতীয় পার্টি আরো বেশি শক্তিশালী, সুসংহত এবং ঐক্যবদ্ধ। এরশাদের অনুপস্থিতি কোন প্রভাব ফেলেনি জাতীয় পার্টির অগ্রযাত্রায়। বরং আরো শক্ত হাতে জাতীয় পার্টির হাল ধরেছেন জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
যারা ভেবেছিলেন, জাতীয় পার্টি খন্ড-বিখন্ড হয়ে যাচ্ছে। তাদের ধারনা ভূল প্রমানিত হয়েছে। নেতিবাচক ধারনার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আরো হতাশ করে ঐক্য দেখিয়েছে জাতীয় পার্টি। প্রমান দিয়েছে জাতীয় পার্টি, লাঙল আর এরশাদের প্রশ্নে সবাই এক এবং ঐক্যবদ্ধ। নির্দিধায় বলা যায় আগামী দিনের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক শক্তি।

লেখক - খন্দকার দেলোয়ার জালালী। সাংবাদিক ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর প্রেস সেক্রেটারি।
এই বিভাগের আরও খবর