লালমনিরহাট বার্তা
লালমনিরহাটে নীতিমালা লঙ্ঘন করে পুষ্টির চাল সরবরাহ
জে আই সমাপ্ত ॥ | ২৮ এপ্রি, ২০২২, ৬:৪৩ AM
লালমনিরহাটে নীতিমালা লঙ্ঘন করে পুষ্টির চাল সরবরাহ
নীতিমালা লঙ্ঘন করে চুক্তি বহিরভূত ভাবে খাদ্য বিভাগের সহযোগিতায় মেসার্স জোবেদা অটো রাইস মিলে (মিশ্রণ মিল) পুষ্টির চাল সরবরাহ করা হয়েছে। ফলে গত মার্চ মাসে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলাররা চালের বস্তা খুলে চাল মেপে দিতে পরেছেন নানা সমস্যায়। আর পুষ্টির চাল নিতে এসে নানা হয়রানির স্বীকার হয়েছেন কার্ডধারী ব্যক্তিরা।
জানা যায়, গত ২০২১ সালের ১৩ এপ্রিল খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে বিলি-বিতরনের জন্য এলএসডি হতে উত্তোলিত সাধারণ চাল ও প্রিমিক্স কার্ণেল নির্ধারিত অনুপাতে মিশ্রণ এবং মিশ্রিত পুষ্টি চাল নেট ৩০ কেজি ৩০০ গ্রাম ক্ষমতাসম্পন্ন চটের ব্যাগে বিতরণ কেন্দ্রে সরবরাহের চুক্তিপত্র হয় মেসার্স জোবেদা অটো রাইস মিলের সাথে লালমনিরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রফিকুল ইসলামের। কিন্তু সে চুক্তি অনুযায়ী ৩০ কেজির বস্তায় চাল সরবরাহ করার কথা থাকলেও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সাথে যোগসাজস করে আদিতমারী উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে ৫০ কেজির বস্তায় চাল উত্তোলন করেন মেসার্স জোবেদা অটো রাইস মিল। অবৈধ পন্থায় খাদ্য গুদাম থেকে ৫০ কেজির বস্তায় চাল সরবরাহের সময় এ বিষয়টি নিয়ে আদিতমারী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাসনা আক্তার বাধা দিলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নির্দেশের কারণে আর কিছুই করতে পারেন নি।
এর ফলে ৫০ কেজির বস্তায় সঠিক পরিমানে পুষ্টি মিশ্রিত না করে মেসার্স জোবেদা অটো রাইস মিল ডিলারদের কাছে পুষ্টি চাল সরবরাহ করেন। আর এ চাল উত্তোলন করতে গিয়ে নানা হয়রানির স্বীকার হয়েছেন কার্ডধারী ব্যক্তিরা।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারী ব্যক্তিরা জানান, প্রতিবার আমাদেরকে বস্তায় ৩০ কেজি ৩০০ গ্রাম চাল দেয়া হলেও মার্চ মাসে বস্তায় চাল দেয়নি। এতে আমরা সঠিক পরিমানে পুষ্টি মিশ্রিত চাল পাইনি। আর বস্তার মুখ খুলে চাল ওজন করে মেপে দেয়ায় অনেকেই চাল কম পেয়েছি।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের ডিলার হাসান আলী জানান, ৩০ কেজি ৩০০ গ্রাম ক্ষমতাসম্পন্ন চটের বস্তায় তাকে পুষ্টিচাল দেয়ার কথা থাকলেও তাকে ৫০ কেজি ক্ষমতাসম্পন্ন চটের বস্তায় দেয়া হয়েছে। এতে হতদরিদ্র ব্যক্তিদের চাল দিতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাকে।
মেসার্স জোবেদা অটো রাইস মিলের (মিশ্রণ মিল) স্বত্ত্বাধিকারী ওয়াহেদ আলী বলেন, খাদ্যগুদাম থেকে আমাকে যে ভাবে চাল সরবরাহ করা হয়েছে আমি সে ভাবেই চাল নিয়েছি। নিয়মানুযায়ী পুষ্টি মিশ্রণ করে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারদের কাছে তা সরবরাহ করেছি।
আদিতমারী উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুল হক জানান, মেসার্স জোবেদা অটো রাইস মিলকে গত মার্চ মাসে ৩৪৬ মে:টন চাল দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কিছু বস্তা ৩০ কেজি আর কিছু বস্তা ৫০ কেজি ওজনের। তবে চুক্তিপত্রে শুধুমাত্র ৩০ কেজি ওজনের বস্তার কথা উল্লেখ থাকলেও ৫০ কেজি ওজনের চালের বস্তা দেয়া যাবে, এটা কোন অপরাধ নয়।
আদিতমারী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাসনা আক্তার বলেন, চুক্তিপত্র অনুযায়ী খাদ্যগুদাম থেকে ৩০ কেজি ক্ষমতাসম্পন্ন চটের বস্তায় চাল দেয়ার কথা থাকলেও খাদ্য গুদাম থেকে ৫০ কেজি ক্ষমতাসম্পন্ন চটের বস্তায় চাল দেয়ায় বিষয়টি আমি ধরে ছিলাম। কিন্তু পরে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক স্যারের নির্দেশে ৫০ কেজি ওজনের চালের বস্তা দেয়া হয়েছে। এখানে আমার কিছুই করার ছিলো না।
লালমনিরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রফিকুল ইসলাম বলেন, চুক্তিপত্রে যাই থাক মেসার্স জোবেদা অটো রাইস মিলকে সঠিক পরিমানে চাল সরবরাহ করা হয়েছে কি না সেটা দেখেন। খাদ্যগুদাম থেকে ৩০ কেজি ওজনের চালের বস্তা দিতে গেলে নতুন খামাল ভাঙ্গতে হতো তাই ৫০ কেজি ওজনের চালের বস্তা দেয়া হয়েছে বলে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছে।
এই বিভাগের আরও খবর