লালমনিরহাট বার্তা
তেল-বেগুনের উচ্চ মুল্যে আবারো জ্বলে উঠেছে
রংপুর অফিসঃ | ২৮ এপ্রি, ২০২২, ১১:১৫ AM
তেল-বেগুনের উচ্চ মুল্যে আবারো জ্বলে উঠেছে
রংপুর বিভাগের আটজেলার হাট বাজারে ক্ষাণিকটা বিরতি দিয়ে আবার বাড়তে শুরু করেছে খোলা সয়াবিনের দাম। সেই সঙ্গে পল্লাদিয়ে বেড়েছে বেগুনের দাম।সব মিলে এখন তেলে-বেগুনের উচ্চ মুল্যে আবারো জ্বলে উঠেছে রংপুর বিভাগের আটজেলার হাট বাজার।মাহে রমজানের শুরু থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম নিয়ে যেন অস্বস্তি কাটছে না ক্রেতাদের। আলু ও শশাসহ কিছু সবজির দাম কমলেও মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে।অপরিবর্তীত রয়েছে চাল ওবিভিন্ন জাতের মাছের বাজার দাম।
বুধবার দিনভর রংপুর বিভাগের বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল গত সপ্তাহের মতো ১৬০ টাকা ও পাঁচ লিটার তেল ৭৬০ টাকায় বিক্রি হলেও খোলা সয়াবিন গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন ১৯০-১৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন।
রংপুর নগরীর সিটি বাজারের তেল বিক্রেতা রিপন মিয়া বলেন, কী কারণে খোলা সয়াবিনের দাম বাড়ছে তা বলতে পারছি না। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে তাই খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে।
বিভাগের বিভিন্ন বাজারে খোঁজ খবর নিয়ে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগি ৫-১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে খুচরা বাজারে ১৫৫-১৬০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ২০ টাকা বেড়ে ২৮০-২৯০ টাকা, দেশি মুরগি ১০-২০ টাকা বেড়ে ৪৫০-৪৬০ টাকা এবং এবং পাকিস্তানি লেয়ার আগের মতোই ২৪০-২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসে তেমন কোনো হেরফের নেই। ৬০০-৬৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮৫০-৯০০ টাকায় কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
লালমনির হাটজেলার তিস্তা বাজারে বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী স্বপন বলেন, ঈদ ঘিরে বাজারে মুরগির চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। সে অনুয়ায়ী সরবরাহ কম থাকায় দামও বাড়ছে। ঈদের আগ মুহূর্তে দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়াও বিভাগের বিভিন্ন হাট বাজারে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে কেজি প্রতি টমেটো ৫ টাকা বেড়ে ২৫-৩০ টাকা, গাজর ৫৫-৬০ টাকা, করলা ৫৫-৬০ টাকা, উস্তে ৬০ টাকা, চিকন বেগুন ৩৫-৪০ টাকা থেকে লাফিয়ে ৫৫-৬০ টাকা, গোল বেগুন ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ টাকা, শিম ৩৫-৪০টাকা, শসা আগের মতোই ১৫-২০টাকা, পেঁপে ২৫টাকা, লেবু প্রতিহালি ২০-২৫ টাকা, কাঁচামরিচ ১০ টাকা বেড়ে ৫০-৬০ টাকা, শুকনা মরিচ ৩৫০ টাকা, লাউ প্রতিপিস ৪০-৪৫ টাকা, কাঁচকলা হালি ২০-২৫ টাকা, ঢেড়স ৩৫-৪০ টাকা, বরবটি ৫ টাকা কমে ৩৫-৪০ টাকা, দুধকুষি ৫০-৫৫ টাকা, পটল ১০ টাকা কমে ৩৫-৪০ টাকা, সজনে ১০ টাকা কমে ৩৫-৪০ টাকা, প্রতিকেজি মিষ্টি কুমড়া ১৮-২০ টাকা, চালকুমড়া আকারভেদে ৩৫-৪০ টাকা, ঝিংগে গত সপ্তাহের তুলনায় ১০-১৫ টাকা কমে ৪০-৫০ টাকা, সবধরনের শাক ১০টাকা আঁটি এবং দেশি পেঁয়াজ ১০-১৫ ও ভারতীয় পেঁয়াজ ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আদা ৭০-৮০ টাকা, রসুন ৫০-৬০ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগির ডিমের হালি দুই টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে ৩৩-৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বাজারে কার্ডিনাল আলু গত সপ্তাহের তুলনায় ১ থেকে ২ টাকা কমে ১২-১৩ টাকা এবং শিল বিলাতি আলু ২৫-২৬ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ বাজারের সবজি বিক্রেতা আতিকুল ইসলাম বলেন, রমজানে সাধারণত বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়। মাঝখানে কয়েকদিন দাম স্থিতিশীল থাকলেও অতি বৃষ্টিতে বেগুনের গাছ মরে যাওয়ায় এখন আবার তা বাড়তে শুরু করেছে। চাহিদার তুলানায় আমদানি কম থাকায় এমনটা হচ্ছে। তবে রোজা শেষ হলে এর দাম অনেকটাই কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে খোলা চিনি ৮০ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ৮৫ টাকা, ছোলা ৮০ টাকা, মসুর ডাল মাঝারি ১০০ টাকা, চিকন ১৩০ টাকা, আটা প্যাকেট ৪০ টাকা ও খোলা ৩৬-৩৮ টাকা এবং ময়দা ৫৫-৬০ টাকা প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে।সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে চালের দামে তেমন একটা হেরফের নেই। আগের মতোই স্বর্ণা (মোটা) ৪৬-৪৮ টাকা, বিআর২৯-৫৮-৫৯ টাকা, বিআর-২৮-৫৮-৬০ টাকা, মিনিকেট ৬৮ টাকা এবং নাজিরশাইল ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ আসিফ আহসান বলেছেন, ব্যবসায়ীদের পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কেনার রশিদ প্রদর্শন করে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করতে হবে।আমরা মজুদদার সহ কেউ যাতে মুল্য তালিকার বেশি দামে তেল বিক্রি না করে এ ব্যাপারে মনিটংি করার জন্য নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের কয়েকটি টিম মাঠে পর্যবেক্ষন করছে।
এই বিভাগের আরও খবর