রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে দর্শকদের উপস্থিতিতে চ্যানেল আই’তে দৈনিক প্রচারিত টকশো ‘তৃতীয়মাত্রা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) অনুষ্ঠিত টকশোতে রংপুর অঞ্চলের ব্যবসায়িক অবস্থা, আঞ্চলিক অর্থনীতি, বেসরকারি খাত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, নারী অধিকার, তরুণদের উন্নয়ন ও রাজনীতি সহ নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মোঃ মসিউর রহমান রাঙ্গা, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সাহিদা রহমান জোছনা এবং রংপুর জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ।
অনুষ্ঠানে মশিউর রহমান রাঙ্গা এমপি বলেন, তিনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন তিনি রাস্তা উন্নয়নের জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন এবং সবসময়ই তাঁর বিশেষ দৃষ্টি ছিলো রাস্তা সম্প্রসারণের উপর। এছাড়াও তিনি যানজটের বিষয়ে জানান “মেয়র সাহেব চেষ্টা করলে রংপুরের অভ্যন্তরীণ যানজট কমানো সম্ভব”।এ অঞ্চলে শিল্প নগরী গড়ে না ওঠার কারন হিসেবে তিনি বলেন, “প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ এর ব্যবহার বাড়ছে, ফলে খরচও বেড়ে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত গ্যাসের জোগান না থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে এবং বিদ্যুৎ স্বল্পতার জন্য রংপুরে শিল্পনগরী গড়ে উঠছেনা”।এছাড়াও, কয়লা উত্তোলনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য এই এলাকাকে প্রাধান্য দেয়া উচিৎ বলে জানান তিনি। এছাড়াও তিনি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আরো স¤প্রসারণ করার কথা বলেছেন। দুর্নীতির কারনে এখানে শ্যামাসুন্দরী খাল ঠিক করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন। তিস্তা খনন করার কথা উল্লেখ করে বলেন, “কম গভীরতা থাকার কারণে এখানে একট ুপানি আসলেই এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়” এবং চায়নার অর্থায়নে তিস্তার সমস্যা সমাধান করা দরকার বলে জানান। ক্ষমতায় যারাই থাকে তাঁরাই বিরোধী দলের উপর অত্যাচার করে বলে তিনি তাঁর অভিমত ব্যক্ত করেন।
অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম শিল্পকারখানা মালিকদের এখানে কারখানা তৈরির জন্য আহবান জানান, নীলফামারি ইপিজেডে গ্যাসের জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে আশ্বাস দেন। ব্যাংক ঋণ নিয়ে বিভিন্ন হয়রানীর কথা তিনি স্বীকার করেন এবং বলেন তাঁর দল এই বিষয়ে ভাবছেন। ডেঙ্গুর বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন “ডেঙ্গু অবস্থায় অন্যান্য অঞ্চলের থেকে এখানে ভালো আছে” এবং এজন্য তিনি বিরোধী দলীয় মেয়রকে ধন্যবাদ জানান।
সাহিদা রহমান জোছনা বলেন, নারী উদ্যোক্তারা বিভিন্ন হয়রানীর শিকার হন, এবং রাজনীতিবিদরা এই বিষয়ে মনযোগ দেন না। চেষ্টা করলে রংপুরের গ্যাসের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব বলে জানান, কিন্তু বলেন “গরীব দুখীদের দিকে কেউ তাকাচ্ছেন না, যে রিকশাওয়ালা খাবার কিনতে পারেন না সে গ্যাস দিয়ে কী করবে?” এমন প্রশ্ন করেন। এছাড়াও তিনি খাল খননের মাধ্যমে রংপুরের খাল ও নদী উন্নয়নের উপর জোর দেন, শ্যামা সুন্দরী খাল তাঁর (বিএনপি) সরকারের সময় খনন করা হয়েছে বলেছেন, কিন্তু পরে সেটার চলমান রাখা হয়নি বলে অভিযোগ করেন। “আমাদের আন্দোলন করার কোনো সুযোগ দেয়া হয়না, আমার একার জন্য ১০জন মহিলা পুলিশ দাড় করিয়ে রাখা হয়” এমন অভিযোগ করেন।
সাব্বির আহমেদ হাড়িভাঙ্গা আমের ব্যাপারে বলেন যে এবিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ দরকার। তিস্তাবাঁচাও নদী বাঁচাও প্রতিটি ঘরের একটি দাবী বলে জানান তিনি।আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে শ্যামা সুন্দরি খালসহঅন্যান্য খাল নিয়ে কিছু করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে দর্শকরা সরাসরি আলোচকদের আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন এবং আলোচকরা তার উত্তর দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন তৃতীয় মাত্রা’র পরিচালক ও নিয়মিত উপস্থাপক জিল্লুর রহমান।