লালমনিরহাট বার্তা
প্রবল বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পানির ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
রংপুর অফিস | ২ জুল, ২০২৪, ৭:৪৫ AM
প্রবল বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পানির ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

রংপুরে প্রবল বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পানির ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার অতিক্রম করছে।নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কাউনিয়া ও ডালিয়া পয়েন্টে ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রংপুর।

পাউবোর বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সোমবার (১ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার এবং সকাল ৬টায় ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা ২৮ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার ধরা হয়।

নদীর পানি বাড়ার সাথে জেলার কাউনিয়া, পীরগাছা ও গংগাচড়া উপজেলার তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপ চরের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তিস্তা নদীতে পানি বাড়া-কমায় ভাঙনের মুখে পড়েছে বিভিন্ন এলাকা। বেশকিছু চরাঞ্চলের বাড়িঘরের চারপাশে পানি প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে।পানিতে ডুবে গেছে বন্যা কবলিত এলাকার সব্জি ক্ষেত।

কাউনিয়ার গদাই গ্রামের নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা বাসীরা জানান,পাউবো কোনো প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ভাঙন কবলিত পরিবারের অনেকে নিরুপায় হয়ে বসতি সরিয়ে নিচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তারা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়বে।

জানা গেছে, গংগাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল সূর্যমূখী ক্বারী মাদরাসা,চিলাখাল মধ্যপাড়া জামে মসজিদ, উত্তর চিলাখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। কোলকোন্দ ও লক্ষীটারী ইউনিয়নের ৫ শতাধিক ঘরবাড়িতে নদীর পানি ঢুকে পড়েছে।

গংগাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না বলেন, তিস্তা নদী এলাকায় বন্যা ও ভাঙনের বিষয়ে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্র সহ বৃষ্টি পাত হতে পারে।কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।সারা দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) রংপুর বিভাগের আট জেলায় ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিনের তুলনায় সোমবার কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ডালিয়া ব্যারাজের সব জলকপাট গেট খুলে রাখা হয়েছে।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মো.মোবাশে^র হাসান বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতে পানির ঢল আসার কারণে তিস্তা, ধরলা, ঘাঘট, করতোয়া,ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।এখন পর্যন্ত বন্যার আভাস পাওয়া যায়নি। সরকারিভাবে সব ধরনের আগাম প্রস্তুতি নেয়া আছে যাতে বন্যায় কেউ ক্ষতি গ্রস্থ না হয়।

এই বিভাগের আরও খবর