লালমনিরহাট বার্তা
রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পানির দামে চামড়া কিনছেন
রংপুর অফিসঃ | ১৩ জুল, ২০২২, ১০:১০ AM
রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পানির দামে চামড়া কিনছেন
রংপুর বিভাগের ৮ জেলার কোরবানীর পশুর চামড়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করার কারনে ৩ থেকে ৫শ টাকা দরে চামড়া কিনছে ব্যবসায়ীরা।বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের বেঁধে দেয়া দর মানছেন না। সরকারী মুল্য যেখানে প্রতি বর্গফুট ৪০ টাকা দরে কেনার কথা থাকলেও অনেক কম দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য করছেন তারা। ফলে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা পশু চামড়া বিক্রি করতে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রংপুর বিভাগের নগরীর শাপলা চত্বর সংলগ্ন চামড়া পট্টি হচ্ছে অন্যতম চামড়ার ব্যবসা কেন্দ্র। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে চামড়া কিনে এনে চামড়া আড়তদারদের সিন্ডিকেট এর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। প্রতিটি চামড়া ৬ থেকে ৮শ টাকা দিয়ে কিনে আনার পর আড়তদার ব্যবসায়ীরা ৪ থেকে ৫শ টাকার বেশি দাম বলছেন না। ফলে মৌসুমী ব্যবসায়ীসহ সাধারন ব্যবসায়ীরা পুজি হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন।গতকাল মঙ্গলবার সকালে সরজমিন চামড়া পট্টি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন আড়তের সামনে শত শত পশুর চামড়া ফেলে রাখা হয়েছে।
চামড়া আড়ত মালিক মমতাজ উদ্দিন বলেন, চামড়ার দাম সরকারের বেঁধে দেয়া মুল্যে কিনতে হলে প্রতিটি চামড়া ৯শ থেকে এক হাজার টাকার বেশি দামে কিনতে হবে। কিন্তু লবন কেনা, শ্রমিক খরচসহ অন্যান্য খরচ করতেই ৪শ টাকার বেশি খরচ হয়ে যায়। সে কারনে নাকি সর্ব্বচ্য ৫শ টাকার বেশি দামে চামড়া কেনা সম্ভব নয়।
চামড়া ব্যবসায়ী সোলেমান বলেন, লবন দিয়ে চামড়া তাদের গোডাউনে অন্তত ২/৩ মাস সংরক্ষন করে রাখার পর তারা ট্যানারীতে চামড়া পাঠান ফলে এই দীর্ঘ সময় সংরক্ষন করতে হলে পরিমান লবন দিতেই হয়। রক্ষনা বেক্ষন খরচ শ্রমিকের মজুরী সব মিলিয়ে একদিকে যেমন খরচ বেড়েছে অন্যদিকে বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের বেঁধে দেয়া দরে চামড়া কিনতে গেলে তাদের চরম ভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে বলে আশংকা এ ব্যবসায়ীর।
মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বেশী দামে চামড়া কিনে আড়তে এনে ভোর থেকে অপেক্ষা করলেও দাম বেশী না বলায় তারা চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে। কয়েকজন মৌসুমী ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন তারা ৭/৮শ টাকা দরে মাঝারী সাইজের গরুর চামড়া কিনেছেন। আড়ত ব্যবসায়ীরা পাঁচশ টাকার বেশী দাম দিতে রাজি হচ্ছেন না ফলে তারা বেশী দামে চামড়া কিনে এখন বিপাকে পড়েছেন। তাদের অনেক টাকা লোকসান হবে বলে জানান।
রংপুরের কাউনিয়া থেকে দেড়শ পশুর চামড়া কিনে আড়তে বিক্রি করতে এনেছেন মৌসুমী ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন। তিনি জানান সরকার এবার আগেই দাম নির্ধারন করে দিয়েছে। প্রতি বর্গফুট চামড়ার মুল্য ৪০ টাকা সে হিসেবে আমরা ২৫ থেকে ৩০ টাকা বর্গফুট দরে চামড়া কিনে এনেছি। কিন্তু আড়তদাররা ২০ টাকা ফুটেও দাম বলছেনা। তারা বর্গফুটের দামে না কিনে হাওয়াই ৫শ টাকা দাম বলছেন তাহলে সরকারের নির্দ্দেশ দিয়ে কি লাভ।
মিঠাপুকুর থেকে তিন‘শ চামড়া কিনে নিয়ে আসা মৌসুমী ব্যবসায়ী মানিক মিয়া জানান,নগরীর শাপলা এলাকার চামড়া আড়তে হাতে গোনা কয়েকজন চামড়া আড়তদার সিন্ডিকেট করে তাদের জিম্মি করে ফেলেছেন। হয় তাদের দরে চামড়া দিতে হবে না হলে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের কোন নজরদারি নেই। তাহলে আমরা পুজি হারিয়ে পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা ।
রংপুর চামড়া ব্যবসায়ী সমিসতির সহসভাপতি সানোয়ার হোসেন বলেন, আমরা সিন্ডিকেট করে দাম নির্ধারন করিনি। আমাদের সমস্যাটাও বুঝতে হবে।
এদিকে মৌসুমী ব্যবসায়িসহ সাধারন ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে সাধারন ব্যবসায়ীদের জিম্মিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন সরকারের প্রতি।
এই বিভাগের আরও খবর