শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ সারাদেশ

অনলাইন জুয়া ঠেকাতে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরুরি পদক্ষেপের নির্দেশ


প্রকাশ :

বাংলাদেশ ব্যাংক সব মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছে, অবৈধ অনলাইন জুয়ার লেনদেন প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপ নেবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, এমএফএস প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিদেশে অর্থ পাচার হতে পারে।

অপারেটররা জানিয়েছেন, পার্সন-টু-পার্সন লেনদেনের প্রকৃত উদ্দেশ্য শনাক্ত করা কঠিন। অনেক এজেন্ট বা মার্চেন্ট একাধিক স্তরের স্থানান্তরের মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা জুয়ার সাইটে পাঠায়, যা ট্র্যাক করা আরও কঠিন।

চিঠিতে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোকে সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টের তালিকা তৈরি, টাস্কফোর্স গঠন এবং এআই-ভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় মনিটরিং ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, জুয়া-সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য পাবলিক রিপোর্টিং পোর্টাল ও হেল্পলাইন চালুর কথাও বলা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, ৬ নভেম্বর সাতটি এমএফএস অপারেটরের সঙ্গে বৈঠক করে নেওয়া পদক্ষেপ পর্যালোচনা করা হবে। অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে দেশ থেকে কত অর্থ পাচার হচ্ছে, তার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই, তবে এক কর্মকর্তা অনুমান করেছেন, অঙ্ক প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা হতে পারে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ইতোমধ্যেই সব জুয়ার ওয়েবসাইট বন্ধ করেছে। তবে ভিপিএন ব্যবহার করে জুয়া খেলা অব্যাহত রয়েছে। ব্যাংক ও এমএফএস প্ল্যাটফর্মের লেনদেন মনিটরিংয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর অবস্থান নেবে।

অনলাইন বেটিং অ্যাপ থেকে এমএফএসের বিজনেস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টাকা স্থানান্তর করা হয়। জুয়ারি অন্য একটি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠায় এবং জিতে গেলে তা উত্তোলন করে। হেরে গেলে টাকা সহজেই দেশ থেকে পাচার হয়।

সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তানভীর হাসান জোহা বলেছেন, ‘অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যে জুয়া সংঘটিত হয়েছে, তা এমএফএসের মাধ্যমে হয়েছে। সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টগুলো অনুসন্ধান করা উচিত। টাস্কফোর্স গঠন ব্যর্থ হবে যদি প্রযুক্তি ব্যবহার না করা হয়।’

এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নগদ এবং বিকাশ কোনো অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত নয়। সন্দেহভাজন লেনদেন হলে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাকে অবহিত করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একা বাংলাদেশ ব্যাংক অনলাইন জুয়া বন্ধ করতে পারবে না। ব্যাংক ও এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোকে ট্রানজেকশন মনিটরিং টিম গঠন করা উচিত।

অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে বিটিআরসিতে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ডাক মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার, এনএসআই, ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি, সিআইডি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।