শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ সারাদেশ

রাজশাহীতে বাড়ছে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা, ঝুঁকিতে তরুণরাই বেশি


প্রকাশ :

রাজশাহীতে বাড়ছে এইচআইভি (এইডস) সংক্রমণ। চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে নতুন করে ২৮ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে একজন আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, আক্রান্তদের বেশির ভাগই তরুণ, এবং অরক্ষিত যৌনসম্পর্ক ও সচেতনতার ঘাটতিই এই সংক্রমণ বৃদ্ধির মূল কারণ।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের এইচআইভি টেস্টিং অ্যান্ড কাউন্সেলিং (এইচটিসি) সেন্টারের তথ্য বলছে, ২০১৯ সাল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৩ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের বয়স মূলত ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। এই সময়ে মৃত্যুবরণ করেছেন আটজন।

২০২৪ সালে শনাক্ত ২৭ জনের মধ্যে ১৬ জন এবং ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত শনাক্ত ২৮ জনের মধ্যে ১৭ জন সমকামী সম্পর্কের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া যৌনকর্মীর মাধ্যমে ১০ জন এবং রক্তের মাধ্যমে একজন সংক্রমিত হয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আক্রান্ত বলেন, “রোগটি ধরা পড়ার পর মনে হয়েছিল জীবন শেষ। কিন্তু রামেকে কাউন্সেলিংয়ের পর বুঝলাম, নিয়মিত চিকিৎসা ও ওষুধে ভালো থাকা যায়। তবে রাজশাহীতে চিকিৎসা না থাকায় বগুড়ায় যেতে হয়, যা বেশ কষ্টকর।”

বর্তমানে রামেকে শুধুমাত্র এইচআইভি টেস্ট ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। আক্রান্তদের চিকিৎসা নিতে যেতে হয় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক)। এ অবস্থায় রাজশাহীর রোগীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে রামেক হাসপাতালে নতুন ট্রিটমেন্ট সেন্টার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম শামীম আহাম্মদ বলেন, “এইচআইভি রোগীদের চিকিৎসার জন্য আমরা একটি আলাদা ট্রিটমেন্ট সেন্টার চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। রুম সংস্কারের কাজ চলছে, শিগগিরই চালু হলে রোগীদের আর বগুড়ায় যেতে হবে না।”

রামেক এইচটিসি সেন্টারের ফোকাল পারসন ডা. ইবরাহীম মো. শরফ বলেন, “অরক্ষিত যৌনমিলন—নারী-পুরুষে হোক বা পুরুষ-পুরুষে—এইচআইভি সংক্রমণের প্রধান কারণ। এছাড়া মা থেকে শিশুর দেহেও ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। প্রতিরোধে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।”