শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ সারাদেশ

লালমনিরহাটে অতিরিক্ত টাকা না দেওয়ায় দলিল লেখকের হামলা, জোর করে জমি রেজিস্ট্রির অভিযোগ


প্রকাশ :

লালমনিরহাট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখকের মারপিটে জখম হয়েছেন এক জমি ক্রেতা। অভিযোগ, নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত অর্থ দাবি প্রত্যাখ্যান করায় ওই ক্রেতা ও তার স্বজনদের ওপর হামলা চালানো হয়। পরে জোরপূর্বক অতিরিক্ত ৬০ হাজার টাকা নিয়ে রেজিস্ট্রির কাজ সম্পন্ন করা হয়। এ ঘটনায় বুধবার (৪ নভেম্বর) আহত ক্রেতা মো. সিরাজুল ইসলাম (৫৮) বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ আরও ১৫-২০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে লালমনিরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মো. সিরাজুল ইসলাম তার ভায়রাদের জন্য জমি কেনার প্রক্রিয়ায় স্থানীয় দলিল লেখক মোকছেদুল ইসলাম মোস্তফার (৪৮) সঙ্গে চুক্তি করেন। রেজিস্ট্রির যাবতীয় খরচ বাবদ আগেই ৩৫ হাজার টাকা এবং খাজনা হিসেবে ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়। পরবর্তীতে আরও ৩০ হাজার টাকা প্রদানের কথা ছিল রেজিস্ট্রির দিন।

কিন্তু নির্ধারিত দিনে সিরাজুল ইসলাম, তার শ্যালক শাবলু মিয়া ও আত্মীয় মোছাঃ ছায়রা বেগম লালমনিরহাট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গেলে দলিল লেখক মোকছেদুল ইসলাম মোস্তফা হঠাৎ অতিরিক্ত ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। তারা অস্বীকৃতি জানালে মোকছেদুল, সহযোগী আনোয়ার হোসেন (৫০), বায়জীদ (৩৫) ও আরও কয়েকজন দলিল লেখক ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ওপর চড়াও হন।

একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি কিলঘুষিতে তিনজনই আহত হন। ভুক্তভোগীর পাঞ্জাবির পকেটে থাকা ১৩ হাজার ৬০০ টাকা পড়ে যায় এবং চশমা ভেঙে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

পরে দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম এগিয়ে এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ভুক্তভোগীর দাবি, সমিতির সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক উপস্থিত থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ৬০ হাজার টাকা আদায় করে রেজিস্ট্রির কাজ সম্পন্ন করান।

সিরাজুল ইসলাম এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সরকারি দপ্তরের ভেতরেই এমন চাঁদাবাজি ও হামলা হলে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার কোথায় পাবে?” তিনি দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে জমি রেজিস্ট্রির মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি ও মারপিটের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুন্নবী বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”