কৃষি মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এখনও আন্তঃবৈষম্য বিদ্যমান রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, এ বৈষম্যের কারণে প্রান্তিক কৃষক, ছোট খামারি ও জেলেরা এখনও ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সরকার আন্তরিকভাবে এই বৈষম্য দূর করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, “দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে মাছ, দুধ, ডিম ও মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন জরুরি। আর তা সম্ভব হবে তখনই, যখন আমরা প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক ও জেলেদের যথাযথ সহায়তা দিতে পারব।”
পরিদর্শন শেষে তিনি ঈশ্বরদীর বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএসআরআই) এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। সেখানে উপস্থিত বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও স্থানীয় জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “লবণ, সাদা চিনি ও ধবধবে সাদা পালিশ করা চাল—এই তিনটি উপাদান মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। সুস্থ থাকতে হলে আমাদের ঢেঁকি ছাঁটা চাল খাওয়া, অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ থেকে বিরত থাকা এবং আমদানি করা সাদা চিনির পরিবর্তে লাল চিনি ব্যবহার করতে হবে।”
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে সরকার বন্ধ হয়ে যাওয়া চিনিকলগুলো পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে লাল চিনির উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়ানো যায়। অচিরেই পাবনা চিনিকলসহ বন্ধ থাকা ছয়টি চিনিকল চালু করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
বিএসআরআই মিলনায়তনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ড. কবির উদ্দিন আহমেদ। বক্তব্য দেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ কে এম রাশেদুল ইসলাম, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মনির হোসেন মিতুল এবং রাষ্ট্রীয় স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত কৃষক সাজাহান আলী।
মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারে আয়োজিত অন্য এক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা দীপক কুমার পাল। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঈশ্বরদী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহাদাত হোসেন খান, জেলা মৎস্য খামার ব্যবস্থাপক ড. মোনাশিষ চৌধুরী, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুর রহমান খান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আকলিমা খাতুন ও উপজেলা মৎস্য খামার ব্যবস্থাপক রেজাউল ইসলাম প্রমুখ।