গত ৩ এপ্রিল লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বারঘরিয়া গ্রামে শাপলা বেগম (৪০) নামে এক নারী ভাতিজার কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হত্যাচেষ্টার শিকার হন। এ ঘটনায় একই দিন তার স্বামী এরশাদুল ইসলাম বাদী হয়ে আদিতমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে এরশাদুল ইসলাম উল্লেখ করেন, আসামিরা হলেন— ১. মাইদুল ইসলাম (২৮), পিতা: ইউনুস আলী ২. ইমরান মিয়া (২৬), পিতা: মৃত মামুন ইসলাম ৩. ইউনুস মিয়া (৫৮), পিতা: মৃত ফজলে রহমান ৪. ময়না বেগম (৫০), স্বামী: ইউনুস মিয়া ৫. ফারজানা বেগম (৪০), স্বামী: মৃত মামুন মিয়া সবাই একই গ্রামের এবং তার আত্মীয় গোষ্ঠীভুক্ত। তারা পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করেন।
এরশাদুল পেশায় একজন মুদির দোকানি। নিঃসন্তান হওয়ায় এবং অধিকাংশ সময় দোকানে অবস্থান করায় তার স্ত্রী শাপলা বেগম সাধারণত বাড়িতে একা থাকেন। এই সুযোগে ১ নম্বর আসামি মাইদুল ইসলাম বারবার তাকে কু-প্রস্তাব দিয়ে এবং বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। বিষয়টি স্ত্রী জানালে তিনি পারিবারিকভাবে ভাতিজা মাইদুলকে সতর্ক করেন।
এরপর মাইদুল ক্ষিপ্ত হয়ে শাপলা বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে। গত ৩১ মার্চ রাত ১১টার দিকে এরশাদুল দোকানে অবস্থানকালে মাইদুল বাড়ির পশ্চিম দিকের শয়নকক্ষে প্রবেশ করে শাপলা বেগমকে জাপটে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। শাপলা বেগম চিৎকার করে ও ধস্তাধস্তি করে নিজেকে রক্ষা করেন। একপর্যায়ে গলা টিপে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। কৌশলে পালিয়ে গিয়ে তিনি চিৎকার করলে মাইদুল পালিয়ে যায়।
পরদিন সকালে বিষয়টি স্বামী ও ভাবি আলুমান আরা বেগমকে জানালে বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ২ এপ্রিল সকলে মিলে পুনরায় পরিকল্পিতভাবে শাপলার ঘরে প্রবেশ করে হামলা চালায়। ৩ নম্বর আসামির নির্দেশে মাইদুল ধারালো ছোরা দিয়ে শাপলার মাথার বাম পাশে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। ৪ ও ৫ নম্বর আসামি বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এ সময় ইমরান মিয়া তার শাড়ি টেনে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এ সময় চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ আলী আকবর লালমনিরহাট বার্তাকে জানান, থানায় মামলা রেকর্ড হয়েছে (মামলা নম্বর: ০৩/৯৫)। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।