রেলযাত্রায় রংপুরবাসী দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির শিকার। অনলাইন ও কাউন্টার—দুই পথেই চলছে টিকিটের লড়াই। ঢাকাগামী মাত্র দুইটি আন্তঃনগর ট্রেনে যাত্রী চাহিদার ২০ শতাংশ টিকিটও দিতে পারছে না রেল কর্তৃপক্ষ। অনলাইন ও কাউন্টার—দুই মাধ্যমেই টিকিট পেতে যাত্রীদের রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে।
জানা গেছে, রংপুর থেকে ঢাকাগামী ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ও ‘কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস’ ট্রেন দুটি রংপুর রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়। প্রতিদিন বিপুল যাত্রীর চাহিদার তুলনায় টিকিট পাওয়া সেখানে ভাগ্যের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনলাইনে দ্রুত টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ায় কাউন্টারে গিয়ে টিকিট মেলে না।
যাত্রীরা বলছেন, রেল কর্তৃপক্ষ চাহিদার মাত্র ২০ শতাংশ টিকিট দিতে পারছে। এতে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। তাদের দাবি—ট্রেনের সংখ্যা ও বগি বাড়িয়ে এই সমস্যা সমাধান করা জরুরি।
রংপুর থেকে ঢাকাগামী যাত্রী সামসুন নাহার বলেন, “সাধারণ মানুষ তো অনলাইনে টিকিট কাটতে পারে না। আমরা অনেক সময় সরাসরি স্টেশনে আসি, কিন্তু কাউন্টারে গিয়ে বলা হয় টিকিট নেই, অনলাইনে কাটতে হবে। আমরা এখন যাব কোথায়? বিভাগীয় স্টেশন হয়েও এখানে কোনো কার্যক্রম নেই। যদি আরেকটি ট্রেন বাড়ানো হয় এবং কাউন্টারে টিকিট বিক্রি শুরু করা যায়, তাহলে রংপুরের যাত্রীরা কিছুটা স্বস্তি পাবে। নাহলে এই ভোগান্তি থেকেই যাবে।”
উল্লেখ্য, প্রতিদিন রংপুর এক্সপ্রেস ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস মিলে গড়ে সাড়ে ৬০০ যাত্রী বহন করে। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসে রংপুরের জন্য বরাদ্দ আসন সংখ্যা মাত্র ১৫৪টি, আর রংপুর এক্সপ্রেসে ১৯৯টি।
রংপুর মহানগর নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব পলাশ কান্তি নাগ বলেন, “রংপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি থাকা সত্ত্বেও রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা অত্যন্ত হতাশাজনক। রেল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত সবার মধ্যেই উদাসীনতা দেখা যায়। দেশের যোগাযোগব্যবস্থা যখন মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করেছে, তখন উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বড় শহর রংপুরে রেলযাত্রা রয়ে গেছে সীমাহীন দুর্ভোগের প্রতীক। ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো নিয়েও রেল কর্তৃপক্ষ বরাবরের মতোই উদাসীন।”
রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “ঢাকাগামী ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয় ১০ দিন আগে থেকে। বর্তমানে শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে। তাই রংপুরবাসীর জন্য আলাদা কিছু করার সুযোগ আমাদের হাতে নেই। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”