জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করেছে ২৫টি রাজনৈতিক দল। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ সনদে স্বাক্ষর করেন বিভিন্ন দলের নেতারা। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে দেশের ছোট-বড় রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্যবৃন্দ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথিরা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, এদিন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বিএনপি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি, গণসংহতি আন্দোলন, জেএসডি, গণ অধিকার পরিষদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২–দলীয় জোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, জাকের পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট এবং আমজনতার দলসহ মোট ২৫টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তবে অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) এবং বাংলাদেশ জাসদ। এদের কেউই জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানায়, জুলাই সনদ প্রণয়নের আগে তারা দুই ধাপে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে। প্রথম পর্বে ৩৩টি এবং দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়। তবে জাতীয় পার্টিকে এ আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫২টি। এর মধ্যে বর্তমানে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবারের সদস্যরাও। শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান এবং শহীদ তাহির জামান প্রিয়র মা শামসী আরা বেগম মঞ্চে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দর্শকদের করতালি পান।
বক্তারা বলেন, জুলাই সনদ শুধু রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল নয়, এটি দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নতুন অধ্যায়ের সূচনা। সনদে স্বাক্ষর করা দলগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা ভবিষ্যতের রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জবাবদিহি, স্বচ্ছতা এবং নাগরিক অধিকারের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।