কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় কয়েকটি মাজারে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় দুই হাজার দুইশ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হোমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাপস কুমার সরকার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার সকালে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পুরো এলাকায় এখন উত্তেজনা বিরাজ করছে, নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি ফেসবুক আইডি থেকে ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। পোস্টটি ঘিরে বিক্ষুব্ধ লোকজন থানার সামনে জড়ো হয়ে অভিযুক্ত যুবকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তোলে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার পর ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়া হয়। পরে বাংলাদেশ ইসলামী যুব সেনা হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
কিন্তু একই দিন সকালে ক্ষুব্ধ জনতা মাইকে ঘোষণা দিয়ে আসাদপুর গ্রামের কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে অগ্নিসংযোগ করে। পাশাপাশি কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে ভাঙচুর চালানো হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মামলায় জড়ানোর আতঙ্কে এলাকা প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া যুবকের মা মিনুয়ারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমরা তো ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। তারপরও মাজার আর ঘরে আগুন দেওয়া হলো কেন? কোনো নিরাপত্তা পেলাম না। এক কাপড়ে প্রাণটা বাঁচিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছি। টাকা-পয়সা, গয়না কিছুই নিতে পারিনি।”
এর আগে বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল ঘুরে কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরপরই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে যারা মাজারে হামলা চালিয়েছে, তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। আইনের মাধ্যমে তাদেরও জবাবদিহি করতে হবে।