রংপুরে মৎস ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, প্রাণি থেকে মানুষের দেহে রোগ ছড়ানো মারাত্মক হতে পারে। তাই প্রাণি’র রোগ নিয়ন্ত্রণকরা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। আমরা বিশেষ কোন রোগ জানামাত্রই তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। সকল প্রাণিকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে সরকার ভ্যাকসিন উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু করবে। আমরা প্রাণি থেকে মানুষের দেহে রোগ ছড়ানোর চান্স দিতে চাই না।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর আরডিআরএস বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে লাইভস্টক এন্ড ডেইরী ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আয়োজনে প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিভাগীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, নিরাপদ মাংস, দুধ, ডিম পেতে হলে প্রাণিকে নিরাপদ ও রোগ মুক্ত করতে হবে। আমরা যেহেতু ভ্যাকসিন আমদানী করি, তাই দাম বেশি হওয়ায় খামারীরা প্রাণিদের ঠিকমত ভ্যাকসিন দিতে পারে না। আমরা সকল প্রাণিকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়ান হেলথ কনসেপ্টের আওতায় মানুষ ও প্রাণি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মৎস ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুতাহের মুহাম্মদ জাবের, যুগ্ম সচিব মোসাম্মৎ জোহরা খাতুন, বিভাগীয় প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের পরিচালক ডাঃ আব্দুল হাই সরকারসহ রংপুর বিভাগের ৮ জেলা মৎস ও প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
মাল্টিমিডিয়া প্রজেন্টেশনে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি প্রদর্শন নিয়ে উত্তেজনাঃ-- রংপুরে উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের উপস্থিতেই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার প্রেজেন্টেশনে এলইডি স্ক্রিনে ভেসে উঠলো শেখ মুজিবুর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি।এ ঘটনায় অনুষ্ঠানে হৈচৈ পড়ে গেলে প্রেজেন্টেশন শেষ করে দ্রুত সটকে পড়েন ওই কর্মকর্তা। এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন স্বয়ং উপদেষ্টা। কর্মশালায় শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি প্রদর্শিত হওয়ায় উত্তেজনা দেখা দেয়। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর আরডিআরএস বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে লাইভ স্টক এন্ড ডেইরী ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আয়োজনে প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিভাগীয় কর্মশালায় মাল্টিমিডিয়া প্রজেন্টেশন দেন, প্রকল্প সমন্বয়কারী গোলাম রব্বানী। প্রকল্পের তথ্য-চিত্র প্রদর্শনের সময় একটি স্লাইডে প্রশিক্ষণ কর্মশালার ছবিতে হলরুমে অতিথিদের মাথার উপর শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি দেখা যায়। চব্বিশের গণঅভ্যূত্থান পরবর্তী পতিত সরকার প্রধানের ছবি প্রদর্শন নিয়ে অংশ গ্রহণ কারীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করতে থাকে। বিষয়টি জানাজানি হলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানান। সেই সাথে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবী করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা ফরিদা আখতার উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, এত মানুষের রক্তের পরও এদের ছবি থাকা কোন মতে গ্রহণযোগ্য নয়। ফ্যাসিবাদের অনেক রকম রূপ থাকে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিবাদ চলে যায়নি, যার কিছু কিছু প্রতিফলন এখনো আমরা দেখতে পাই। এসবের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান। এটি ইচ্ছাকৃত ভাবে হতে পারে না। যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে হয় তবে সেটি চরম অবমাননা কর। এত মানুষের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া অন্তবর্তীকালীন সরকারে আমলে এটি কোনভাবে গ্রহণ যোগ্য নয়। তবে যিনি মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপন করেছেন, তিনি বলেছেন এটি ভূল ক্রমে হয়েছে। উনি ক্ষমাও চেয়েছেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা মনেকরছি ফ্যাসিবাদ জাস্ট চলে গেছে। ফ্যাসিবাদ অনেক রকম রুপে রয়েছে, তার প্রতিফলন নানা ভাবে ঘটছে। আমরা যখন বিষয়গুলো জানতে পারছি, তাক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছি।