আজ রাতের আকাশে দেখা যাবে এক বিরল মহাজাগতিক দৃশ্য পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। এ সময় চাঁদ গাঢ় লাল রঙ ধারণ করবে, যা ‘ব্লাড মুন’ নামে পরিচিত। বাংলাদেশ থেকেও আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে সহজেই দেখা যাবে এই চমকপ্রদ ঘটনা।
চন্দ্রগ্রহণ ঘটে যখন সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ একই সরলরেখায় আসে। পৃথিবীর ছায়া চাঁদের ওপর পড়লে সরাসরি সূর্যের আলো চাঁদে পৌঁছাতে পারে না। তবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল দিয়ে প্রতিসৃত হয়ে সূর্যের লালচে আলো চাঁদে পৌঁছে যায়। নীল আলো সহজেই বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে যায়, কিন্তু লাল তরঙ্গদৈর্ঘ্য চাঁদে প্রতিফলিত হয়। সেই কারণে গ্রহণের সময় চাঁদকে রক্তাভ বা লালচে দেখা যায়।
বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী রাত ১১টা ৩০ মিনিটে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে এবং শেষ হবে রাত ১২টা ৫২ মিনিটে। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলবে এই দৃশ্য। এশিয়ার অনেক দেশ, বিশেষ করে ভারত ও চীন থেকে এটি সবচেয়ে স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। বাংলাদেশ ছাড়াও ইউরোপ, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চল থেকেও গ্রহণ পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।
সূর্যগ্রহণ দেখার জন্য বিশেষ চশমা প্রয়োজন হয়, কিন্তু চন্দ্রগ্রহণের ক্ষেত্রে খালি চোখেই দেখা যায়। কেবল পরিষ্কার আকাশ থাকলেই যথেষ্ট। শহরের কোলাহল এড়িয়ে খোলা মাঠ বা ছাদের মতো উন্মুক্ত জায়গা থেকে দেখলে সবচেয়ে ভালোভাবে উপভোগ করা যাবে।
উত্তর আয়ারল্যান্ডের কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের জ্যোতির্বিজ্ঞানী রায়ান মিলিগান বলেন, “চন্দ্রগ্রহণের সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভেতর দিয়ে ছড়িয়ে যাওয়া সূর্যের আলোই চাঁদকে লাল রঙে রাঙিয়ে তোলে।” এই দৃশ্য কেবল আকাশপ্রেমীদেরই নয়, বরং জ্যোতির্বিজ্ঞানীদেরও গভীরভাবে আকৃষ্ট করে।
প্রাচীনকাল থেকেই চন্দ্রগ্রহণ মানুষকে রহস্যে মোড়া এক অভিজ্ঞতা দিয়েছে। অনেক সংস্কৃতিতে এটি অশুভ প্রতীক হিসেবে ধরা হলেও আধুনিক বিজ্ঞানে এটি একেবারেই স্বাভাবিক জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া।
এর আগে সর্বশেষ পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ হয়েছিল চলতি বছরের মার্চ মাসে। তার আগেরটি হয়েছিল ২০২২ সালে। তবে আজ রাতের গ্রহণ বিশেষ কারণ এটি দীর্ঘ সময় ধরে দৃশ্যমান থাকবে এবং বাংলাদেশ থেকেও স্পষ্টভাবে দেখা যাবে।