মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহবায় কমান্ডের আহবায়ক নঈম জাহাঙ্গীর ও সদস্য সচিব সাদেক আহমেদ খান এর যৌথ স্বাক্ষরে গত ১ সেপ্টেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা লিডার শফিকুল ইসলাম কানুকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট লালমনিরহাট জেলা ইউনিট কমান্ড অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
গত ২৬ শে জুলাই যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা ফিরোজুর রহমানকে জেলা ইউনিটের কমান্ডের আহ্বায়ক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। অনিবার্য কারণবশত: উক্ত কমিটি বাতিল করা হয়। অত:পর গত ২৩ আগস্ট বীরমুক্তিযোদ্ধা এস এম শফিকুল ইসলাম কানুকে আহবায়ক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা ইউনিট কমান্ড অনুমোদন দেয়া হয়। উক্ত কমিটির কয়েকজন সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল কর্তৃক প্রদত্ত অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে তাদের নাম পরিবর্তন করে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষরকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলে দাখিল করা হয়। তৎপ্রেক্ষিতে গত ১ সেপ্টেম্বর পুর্নগঠিত লালমনিরহাট জেলা ইউনিট কমান্ডের অনুমোদন দেওয়া হয়।
অনুমোদিত কমিটিতে আছেন, যুগ্ন আহবায়ক: বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক, সদস্য সচিব: বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কাশেম। সদস্য: বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেহেরুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম (পাটগ্রাম), বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদুল হক (হাতীবান্ধা), বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বকর সিদ্দিক (কালিগঞ্জ), বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের আদিতমারি, বীরমুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ বজলুর রশিদ (লালমনিরহাট সদর)।
উল্লেখ্য, অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, আহবায়ক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাকে প্রথমত প্রশিক্ষণ নিয়ে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার প্রমাণিক কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। দ্বিতীয়তঃ বিগত বছরগুলোতে উক্ত মুক্তিযোদ্ধা কোন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরিতে সহায়তা করেননি কিংবা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরি করেননি। তৃতীয়তঃ উক্ত মুক্তিযোদ্ধা রাজনৈতিক দলের কিংবা কোন অঙ্গ সংগঠনের পথধারী ব্যক্তি নহেন। উপরোক্ত অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর না করলে সেই মুক্তিযোদ্ধা জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের কোন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারবেন না। যদি কেউ উক্ত অঙ্গীকারের স্বাক্ষর করতে মিথ্যা বা প্রতারণা আশ্রয় নেয় তবে তদন্ত সাপেক্ষে তার নাম কমিটি থেকে প্রত্যাহার সহ অঙ্গিকারভঙ্গের জন্য তার ভাতা প্রাপ্তিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বন্ধে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) লিখিত ভাবে অবহিত করা হবে। সর্বোপরি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যে সকল মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরি করেছেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরিতে সহায়তা করেছে। অর্থাৎ ফ্যাসিস্ট সরকারের পদলেহি দলদাস ছিলেন, তারা কোন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না।
যে কোনো কারণে কিংবা ভুলবশত কোন অঙ্গীকার ভঙ্গকারী মুক্তিযোদ্ধা নাম আহবায়ক কমিটির অন্তর্ভুক্ত হয়, এতদবিষয়ে তদন্ত করে তার নাম প্রত্যাহার পূর্বক জামুকায় পত্র দেওয়া হবে। তাকে কমিটি থেকে বাদ দিয়ে তদস্থলে নতুন কেউকে আন্তভুক্ত করা হবে।
আহবায়ক কমিটির মেয়াদ কয়েক মাস। পরবর্তিতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচিত ব্যক্তিরাই মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পরিচালনা করবেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের গঠনতন্ত্রে উল্লেখ রয়েছে, এটি একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন। বিগত ৫৪ বছরে রাজনীতি বাজি অথাৎ দলীয় করন, আত্মীয়করণ ও অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে লক্ষাধিক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরি করা হয়েছে। এতে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। যে কোন ব্যক্তি বা দলের প্রভাব মুক্ত থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন আহবায়ক কমিটির কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল নির্দেশনা দিয়েছেন।