মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ জাতীয়

চামড়া বিক্রিতে সিন্ডিকেট মানা হয়নি সরকার নির্ধারিত দাম


প্রকাশ :

রংপুরে কোরবানির পশুর চামড়া কেনা-বেচায় দির্ঘদিন যাবৎ চলছে ভয়াবহ সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য।সরকার নির্ধারিত দাম থাকলেও তা মানছেন না আড়তদাররা। মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পুরো রংপুর অঞ্চলের চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে দির্ঘদিন যাবৎ আড়তদার সিন্ডিকেট গড়ে তুলার মাধ্যমে।এই কোরবানীর  ঈদে চামড়ার ন্যয্য মূল্য না পেয়ে লোকসানের মুখে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। সরকার প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে ঢাকায় লবণ দেওয়া গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫৫  থেকে ৬০ টাকা নির্ধারণ করলেও রংপুরের বাস্তব পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। সরকারী দর মানেনি  চামড়া ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট।

রংপুর নগরীর শাপলাচত্বরের ঈদের দিন শনিবার (৭ জুন) বিকালে চামড়া পট্টিতে গিয়ে দেখা গেছে, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ট্রাক, রিকশা ও অটো ভ্যানে করে চামড়া নিয়ে এসেছেন।আড়তদাররা ৪‘শ থেকে সর্বোচ্চ ৫৫০ টাকায় প্রতিটি গরুর চামড়া কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

রংপুর সদর উপজেলার মৌসুমি ব্যবসায়ী মন্টু মিয়া বলেন, প্রতিটি মাঝারি গরুর চামড়া ১হাজার থেকে ১২‘শত টাকা ও বড় গরুর চামড়া দেড় থেকে ২ হাজার টাকা দরে কেনা উচিত। আমি গড়ে ৮‘শ টাকায় প্রতিটি চামড়া কিনেছি। পরিবহন ও আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে খরচ দাঁড়িয়েছে ৮৫০-৮৭০ টাকা। শাপলা এলাকার আড়তদাররা বলছেন, ৫‘শ টাকার বেশি দরে চামড়া কিনবেন না।

নগরীর মর্ডান মোড়ের ব্যবসায়ী আঞ্জু মিয়া ,বাস টার্মিনাল এলাকার রোস্তম আলী ও পালিচড়ার মমতাজ একই অভিযোগ করেন,চামড়ার আকার ও গুণমান বিবেচনায় না নিয়ে মাঝারি চামড়া ৩‘শ থেকে ৪‘শ এবং বড় চামড়া ৫‘শ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বলছেন আড়তদাররা।  তারা রংপুরের চামড়া বাজার নিয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ,রংপুরের চামড়া বাজারের এই নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষে  কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এবারে রংপুর মহানগরী ও জেলায় প্রায় ২ লাখ গরু ও  এক লাখ খাসি কোরবানি দেওয়া হয়েছে।

রংপুরের চামড়া আড়তদার মকবুল হোসেন বলেন, চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণ ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রতিটি চামড়ায় ৪‘শ থেকে ৫‘শ টাকা খরচ পড়ে। এ কারনে সরকারের নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

রংপুর চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মোঃ সালাম বলেন, একটি সিন্ডিকেট তাদের মনোপলি দিয়ে ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করছে। সরকারের নির্ধারিত মূল্য কার্যকর করা যাচ্ছে না। অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।

রংপুর চেম্বার অবকমার্সের প্রেসিডেন্ট মোঃ আকবার আলী ইত্তেফাককে বলেন, আমি শুনেছি রংপুরের চামড়া ব্যবসায়ীরা তাদের বকেয়া টাকা না পওয়ার কারনে চামড়া বাজারে ধস নেমেছে । বর্তমানে লবনের দাম ৭‘শ টাকার স্থলে ১১‘শ থেকে ১২‘শত টাকায় বাজারে বিক্রি হয়েছে।