বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ জাতীয়

চীনের সমর্থন খুব দরকার ছিল


প্রকাশ :

চীন বাংলাদেশকে সমর্থন ও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের বড় রকমের সংস্কার দরকার। চীন সরকার, চীনা ব্যবসায়ী ও জনগণ সবার কাছ থেকে বড় ধরনের সমর্থন পাওয়া গেছে। এই সমর্থন খুবই দরকারি। এটা আনন্দেরও।’ 


সব মিলিয়ে সাম্প্রতিক চীন সফর সুন্দর ও সফল হয়েছে বলে মনে করেন ড. ইউনূস।

সম্প্রতি চীন সফরে বেইজিংয়ে চায়না মিডিয়া গ্রুপকে (সিএমজি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সিএমজি বাংলা বিভাগের পরিচালক ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী।

প্রায় এক দশকেরও আগে চীন সফরে গিয়ে দেশটির গ্রামাঞ্চলের নারীদের দরিদ্রতা দেখেছিলেন ইউনূস। সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, ‘পৃথিবীর সব জায়গায় দারিদ্র্যের চেহারা একই রকম। এটি জয়ের সমাধান হলো মানুষের সৃজনশীলতাকে স্বীকৃতি দিয়ে তাকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সহযোগিতা করা।’

ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই অর্থ তাদের কাছে একটা শক্তি, এই শক্তি ব্যবহার করে জীবন বদলে ফেলা সম্ভব।’

নিজের তিন শূন্য তত্ত্ব ও প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের নতুন শৈলীর আধুনিকায়ণ তত্ত্বের মিল প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘বিষয়গুলো একই। অনেক সামঞ্জস্য রয়েছে, যা আমরা বিভিন্ন ভাবে বলার চেষ্টা করছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘নতুন এক পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে। পুরনো পৃথিবীকে যতই টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হোক না কেন, এই পরিশ্রম সফল হবে না। বরং সুন্দন নতুন এক পৃথিবীর জন্য যে কাঠামো ও তত্ত্ব প্রয়োজন তার আলোকে নতুন চিন্তার কাঠামো গড়ে নতুন এক পৃথিবী গড়ে তোলা উচিৎ।’

চীন-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে তার সফল আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের এই পরিস্থিতিতে সহায়তা ও সমর্থন দরকার। চীন তাতে আগ্রহী এবং প্রেসিডেন্ট সি চেষ্টা করবেন তা বাংলাদেশকে যথাসময়ে পৌঁছে দিতে।’

তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি ও বাণিজ্যে অগ্রগতির সম্ভাবনা রয়েছে। আজকে সবার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, চীনা বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে আসবে, নতুন করে কী করা যায় তা পর্যবেক্ষণ করবেন।’


ড. ইউনূস আরো বলেন, ‘চীনে আমরা অনেক বন্ধু পেয়েছি। নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে এই বন্ধুত্ব কাজে লাগাব।’

দুই দেশের সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করবে কিভাবে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরো গভীর ও ঘনিষ্ঠ করা যায়।

তিনি জানান, এবারের সফরের উদ্দেশ্য ছিল সম্পর্ক আরো মজবুত করা। সেজন্য রাষ্ট্রপ্রধান ও বিভিন্ন পেশাজীবী নেতাদের সঙ্গেও তার বৈঠক হয়েছে। চীন যেকোনো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সমর্থন করতে চায় বলে জানান অধ্যাপক ইউনূস।

এই সাক্ষাৎকারের সময় ড. ইউনূসের সঙ্গে ছিলেন চাইনিজ একাডেমি অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের অধ্যাপক দু। তিনি চীনের গ্রামীণ নারীদের জীবনমানের উন্নয়নে ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন।

সাক্ষাৎকারের সময় অধ্যাপক দুর কাছে ড. ইউনূস প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূস কেবল নোবেল শান্তি পুরস্কারই জেতেননি, বরং আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য বিমোচনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও সংগঠনগুলো তার ভূয়সী প্রশংসা করছে।’

অধ্যাপক দু আরো জানান, দারিদ্র্য বিমোচন অভিজ্ঞতা শিখতে ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। ড. ইউনূসের সঙ্গে তখন তার যোগাযোগ শুরু হয়। এরপর কাজের সুবাদে তাকে বহুবার বাংলাদেশ ও চীন যাতায়াত করতে হয়। ড. ইউনূস অনেক বিদেশি প্রকল্পের সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।

দু বলেন, ‘ড. ইউনূস এখন বাংলাদেশের জন্য অপরিচিতে ক্ষেত্রে নতুন পথ সুগমের কাজ করছেন।’