মনোবিজ্ঞানী ও সমাজবিশ্লেষকদের মতে, অল্প বয়সে বিয়ে অনেক সময়েই জীবনে বাড়তি চাপ তৈরি করে। কারণ তখন না থাকে জীবনের অভিজ্ঞতা, না থাকে আর্থিক বা মানসিক স্থিতি। ফল—অসন্তোষ, ভুল বোঝাবুঝি আর সম্পর্ক ভাঙনের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২৫ থেকে ৩২ বছর বয়স হলো বিয়ের সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ সময়। এই সময় মানুষ সাধারণত শিক্ষাজীবন শেষ করে, কর্মজীবনে স্থির হয়, নিজের সিদ্ধান্ত নিতে পারে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে।
মনোবিজ্ঞানী মরগান পেকের ভাষায়, “দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর বিয়ে করলে সেই সম্পর্ক টিকে থাকে দীর্ঘদিন।” কারণ পরিপক্ব মানুষ জানে কবে নীরব থাকতে হয়, কবে সঙ্গীকে বুঝতে হয়, আর কবে নিজের সীমা মেনে নিতে হয়।
এবার দেখে নেওয়া যাক—একটি সম্পর্ক সুখী ও টেকসই রাখার ২০টি সহজ নিয়ম:
১. প্রেমে অন্ধ হয়ে নয়, মানুষটি আসলে কে তা বুঝে বিয়ে করুন।
২. মতবিরোধ বা তর্ক মানেই সম্পর্ক খারাপ নয়, যতক্ষণ না সেটা অপমান বা আঘাতে গড়ায়।
৩. কে কতটা দিলেন বা পেলেন—এই হিসাব রাখবেন না। সম্পর্ক সমান ভাগে চলে না, বোঝাপড়ায় চলে।
৪. সঙ্গীর মনোযোগ পেতে নিজেকে গুছিয়ে রাখুন—মনেও, শরীরেও।
৫. অর্থনৈতিক স্থিতি সম্পর্কের মূলভিত্তি। অভাব সহজেই ভালোবাসাকে ক্লান্ত করে তোলে।
৬. নিজের হতাশা বা রাগ সঙ্গীর ওপর চাপিয়ে দেবেন না; সহমর্মিতা দেখান, বোঝার চেষ্টা করুন।
৭. ভালোবাসার সঙ্গে সম্মান না থাকলে সম্পর্ক বেশিদিন টেকে না।
৮. সম্পর্ক যত পুরোনো হোক, একে অপরকে নতুন করে “ডেট” করুন—ভালোবাসার সময় নিন।
৯. সব লড়াই লড়ার মতো নয়; কখন ছাড় দিতে হয়, সেটা জানাটাও প্রজ্ঞা।
১০. ব্যক্তিগত সম্পর্ক বাইরের কাউকে ব্যাখ্যা করা বন্ধ করুন।
১১. ক্ষমা ও সহানুভূতি—এই দুই শব্দই দাম্পত্যের রক্ষাকবচ।
১২. দুজনে একসঙ্গে বেড়ে উঠুন; কেউ পিছিয়ে থাকলে দূরত্ব বাড়ে।
১৩. প্রতারণার চেয়ে ইগো বা আত্মসম্মানের লড়াই সম্পর্ক নষ্ট করে বেশি।
১৪. সন্তান আসার পরও দুজনের জন্য আলাদা সময় রাখুন।
১৫. কাউকে কখনও অবহেলা করবেন না; প্রতিদিন সঙ্গীকে গুরুত্বপূর্ণ অনুভব করান।
১৬. বাইরে একে অপরের পাশে থাকুন, ভিতরে গোপনে সংশোধন করুন।
১৭. শারীরিক ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কের প্রাণ—এটাকে অবহেলা করবেন না।
১৮. প্রশংসা করুন, ভালো লাগার কথাগুলো বলুন।
১৯. হাসুন, একসঙ্গে সময় কাটান—এটাই সম্পর্কের সেরা থেরাপি।
২০. রাগের মাথায় বিচ্ছেদের হুমকি দেবেন না; কথার দাম অনেক।
বিয়ে মানে শুধু দুজনের একসঙ্গে থাকা নয়—এটা একসঙ্গে বেড়ে ওঠা, ভুল থেকে শেখা, এবং প্রতিদিন নতুন করে ভালোবাসা শেখা।