শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিনে ফিরল ৪৫ মরদেহ, তবুও থামছে না ইসরায়েলি আগ্রাসন


প্রকাশ :

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও ইসরায়েল বারবার তা লঙ্ঘন করছে। যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে দেশটি ৫ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে এবং আরও ৪৫ জনের মরদেহ হস্তান্তর করেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, সোমবার (৩ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিদের দেইর আল-বালাহর আল-আকসা হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়।

গাজায় আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি জানান, যুদ্ধবিরতির পর এই প্রথমবার অজানা ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। তার ভাষায়, ‘ইসরায়েলে এখনো হাজারো ফিলিস্তিনি বন্দী রয়েছেন, যাদের অনেককে কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক রাখা হয়েছে—যা মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে স্বেচ্ছাচারী আটক।’

একই দিনে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) মাধ্যমে ইসরায়েল আরও ৪৫টি ফিলিস্তিনি মরদেহ ফেরত দিয়েছে। এ নিয়ে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ২৭০টি মরদেহ গাজায় ফিরেছে। ফরেনসিক টিম এখন পর্যন্ত ৭৮টি মরদেহ শনাক্ত করেছে। চিকিৎসা প্রটোকল মেনে শনাক্ত মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানায় মন্ত্রণালয়।

কর্মকর্তারা জানান, ফেরত পাওয়া অনেক মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল—কারও হাত-পা বাঁধা, চোখ ও মুখ বেঁধে রাখা, বিকৃত দেহাবশেষ। মরদেহগুলোর সঙ্গে কোনো শনাক্তকরণ ট্যাগও ছিল না। এই বন্দি ও মরদেহ বিনিময় প্রক্রিয়া তুরস্ক, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের অংশ, যাতে যুক্তরাষ্ট্রও সম্পৃক্ত ছিল।

দেইর আল-বালাহ থেকে খুদারি আরও বলেন, নিখোঁজ ফিলিস্তিনিদের পরিবারগুলো মরদেহগুলোর মধ্যে স্বজনদের খুঁজে ফিরছেন। যেসব মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব নয়, সেগুলো গণকবরে দাফন করা হবে।

অন্যদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের একটি সূত্র জানায়, সোমবার রাফাহর উত্তরে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে তিন ফিলিস্তিনি নিহত হন। ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করে, তারা দক্ষিণ গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে কারণ কিছু ব্যক্তি ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করেছিল—যা ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত এলাকা।

গাজা শহর থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজযুম বলেন, ইসরায়েল এখনো কোয়াডকপ্টার ড্রোন দিয়ে আংশিক ধসে যাওয়া ভবনের ওপর গ্রেনেড নিক্ষেপ করছে, যা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যুদ্ধবিরতির সরাসরি লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে।

গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় অভিযোগ করেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল অন্তত ১২৫ বার চুক্তি ভেঙেছে। তারা সতর্ক করেছে—এই হামলা চলতে থাকলে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ আবার শুরু হতে পারে।

সূত্র: আল জাজিরা