শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ সারাদেশ

রাজারহাটে ডিপিএস এর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ


প্রকাশ :

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য জমানো ডিপিএস এর সমূদয় টাকা ফেরত না পাওয়ার অভিযোগ আমানতকারীদের। তাদের গচ্ছিত টাকা আত্মসাত করতে সমবায় সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক কৌশলে দু'জনই দুজনের বিরুদ্ধে তুলেছেন টাকা আত্মসাতের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। অভিযোগ কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার কুড়ার পাড় আর্দশ বনিক সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে।  

অপরদিকে ডিপিএস এর মেয়াদপূর্তির ৪ মাস পড়েও সমুদায় টাকা না পেয়ে কুড়ারপাড় আদর্শ বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি মো: বাদল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন এক আমানতকারী জামাল উদ্দিন। কুড়ারপাড় আদর্শ বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেড কার্যালয়টি উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাব খাঁ গ্রামের কুড়ারপাড় বাজারে অবস্থিত। 

অভিযোগকারি জামাল উদ্দিন (৬৪) বলেন, আমি আমার ছেলে রুবেল হোসেনের নামে ৫ বছর মেয়াদি একটি ডিপিএস করি। মেয়াদপূর্তির পড়ে বইটি সমিতির কার্যালয়ে জমা করি। ডিপিএস বইটি জমা করার ৪ মাস অতিক্রম হলেও সভাপতি সম্পাদক আমার ৫২ হাজার টাকা ফেরত না দিয়ে টালবাহানা শুরু করে। পরে আমি রাজারহাট থানায় অভিযোগ করি। সেখানে সমাধান না হওয়ায় সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ দেই এবং সর্বশেষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করি। 

একই ঘটনার শিকার সমিতির আর এক সদস্য চেতনা গ্রামের বাসিন্দা রাজু আহমেদ জানান, আমার পরিবারের তিন সদস্যের নামে দুটি দৈনিক ১শত টাকা ও মাসিক ১৫শ টাকা দুইবছর মেয়াদি ডিপিএস করি। তারমধ্যে একটি বইয়ের মেয়াদপূর্ণ হয়েছে। অপরদুটি বইয়ে জমা চলমান ছিলো। তিন বইয়ে ৬৬হাজার তিনশ টাকা জমা আছে। একটি বইয়ের উপরে ৪৫ হাজার টাকা ঋন দেয় সমিতি। এখন কিস্তি ও ডিপিএস এর সঞ্চয় নিতে মাঠকর্মী আসেনা। একই গ্রামের বাসিন্দা রইচ উদ্দিন বলেন, আমি পাঁচ বছর মেয়াদি একটি ডিপিএস করি। তিনবছর পুর্ণ হয়েছে। প্রায় ৮ মাস থেকে মাঠকর্মী কিস্তি নিতে আসেনা। পরবর্তীতে আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অফিসে যোগাযোগ করে বই জমা নিয়ে ১৭ হাজার ৭ শত ৪০ টাকা ফেরত দিবার কথা বললেও এখন পর্যন্ত সঞ্চয় ফেরত পাইনি। সমিতির কার্যক্রম ও কার্যালয় বন্ধ এখন। আরেক সদস্য মজিদ মিয়া বলেন, আমি দুইবছর মেয়াদি ডিপিএস করি, আমার ১৪ হাজার ৬শ টাকা জমা হয়েছে, বই জমা নিয়ে এখন টাকা ফেরত দিচ্ছেনা তারা। কুড়ারপাড় বাজারের প্রবীণ ঔষধ বিক্রেতা ও পল্লী চিকিৎসক আব্দুল আজিজ বলেন, আমার নাতি ফরিদুল ইসলামের নামে ৫ বছর মেয়াদি দৈনিক ১শত টাকা জমার ডিপিএস করি। সেই ডিপিএস পাস বইয়ে প্রায় ২৬মাস টাকা জমা করি, হঠাৎ করে মাঠকর্মী সঞ্চয় নিতে আসা বন্ধ করে, প্রায় ৪ মাস ধরে অফিস খুলছে না। যে এলাকায় ডিপিএস এর মেয়াদপূর্তির সদস্য রয়েছে সেই এলাকায় কিস্তি নিচ্ছে সমিতির সাধারণ সম্পাদক মালেক।

মেয়াদপূর্তির কয়টি বই জমা দিয়েছে সদস্য জানতে চাইলে কুড়ারপাড় আদর্শ বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি বাদল মিয়া বলেন, সেটি মালেক ভালো বলতে পারবে। আমি সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। ওই সময় উপজেলা সমবায় অফিস থেকে প্রায় পাঁচ মাস পুর্বে অডিটের কাগজ চেয়েছিলো, সেটা মুল্যায়ন না করায় আমি ইস্তফা দেই। এছাড়াও আমার একটা বইয়ের মেয়াদপূর্তির পড়ে সমিতি থেকে টাকা ফেরত পাবো। সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক বলেন, জামাল কোথায় কোথায় অভিযোগ করার শখ করুক। অফিস বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিস খোলা হয়না, কালেকশন আমি করতেছি। সভাপতির পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, তাহলে বাদল ভাইয়ের টাকাগুলা কে দিবে ? সে মাঠকর্মী মতিয়ারের কাছে যে টাকা গুলো নিয়েছে সেটি কে দিবে ? মাঠকর্মী মতিয়ার অনেক টাকা আটকিয়েছে। সেই টাকাগুলো রাতারাতি সভাপতি বাদল ও সহ-সভাপতি হুমায়ুন নিয়ে নেয়। তাদেরকে আমি বলেছি, ‘‘তোমরায় যদি টাকা তুলি নেন তাহলে তাদের টাকা ফেরত দিবে কে? বাদল আমার দুটি চেক আটকিয়ে রেখেছে। জামাল-চা আমার কাছে আসছিলো, আমি কইছি টাকা দিতে পারবো না, তখন তিনি পাস বই চেয়েছেন তখন আমি বই ফেরত দেই। তবে আমরাও ঋন গৃহীতার টাকা পাব, সেগুলো মাঠে রয়েছে।” 

এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা সমবায়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম রাসেল বলেন, আমানতকারী ক্ষতিগ্রস্থ হলে থানায় অভিযোগ করতে বলেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন জেলা অফিস রেজিষ্ট্রেশন দিয়ে থাকেন সেখানে কথা বলেন।