যশোরে ছুরিকাঘাতে জামায়াত নেতা আমিনুল ইসলাম সজলকে ঘটনায় জড়িত দুই আসামিসহ কিশোর গ্যাংয়ের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে যশোর ডিবি পুলিশ। যশোর ডিবি কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মফিজুল ইসলাম।
এর আগে, বুধবার (০৬ নভেম্বর) ও বৃহস্পতিবার শহরতলীর খোলাডাঙা গাজিরহাট বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে হত্যা এবং বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত অস্ত্র ও চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিবির এসআই মফিজুল ইসলাম জানান, জামায়াত নেতা আমিনুল ইসলাম সজলকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা তদন্ত শুরু করে যশোর ডিবি পুলিশের একটি টিম। তদন্ত চলাকালে খোলাভাঙ্গা গাজিরহাট বাজার থেকে তদন্তে প্রাপ্ত দুই আসামি সাদমান রহমান সাকিন (১৯) ও আল-আমিন হোসেনকে (১৮) গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের নাম প্রকাশ করেন। পরে প্রযুক্তির সাহায্যে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের পূর্বে ধারণকৃত একটি ভিডিও ফুটেজ হাতে পায় পুলিশ। ফুটেজটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি লাবিব, সাকিনসহ ৪-৫ জন একটি মাদক সেবনের আসরে চাকু ও রিভলভার নিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। উক্ত ভিডিওর সূত্র ধরে ও সাকিনের দেওয়া তথ্য মোতাবেক অভিযান চালিয়ে ভিডিওতে প্রাপ্ত কিশোর গ্যাংয়ের আরও তিন সদস্য রায়হান আহমেদ (২১), আব্দুর রহমান সাগর (২১) ও রিয়াদ হাসানকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিরা সবাই যশোর শহরতলি ও শহরের খোলাডাঙা ও খড়কি এলাকার বাসিন্দা।
এরপর গ্রেপ্তার করে আসামিদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক রায়হানের বাড়ির সিঁড়ির নিচ থেকে বুধবার দিনগত রাত দেড়টার সময় দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এছাড়া গ্রেপ্তার আসামিদের নিয়ে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি লাবিবের বাসায় অভিযান চালিয়ে তার শয়ন কক্ষে তল্লাশি করে হত্যা কাজে ব্যবহৃত একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়।
ডিবি পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল-আমিন ও সাকিন নিজেরাসহ এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও ১৩-১৪ জনের নাম প্রকাশ করেন। তারা জানান যে, ঘটনার ১৫-২০ দিন আগে এলাকার ফখরুল ইসলামের এক স্বজনকে আসামি স্বরন ও রবিন পথরোধ করে ব্যাগ তল্লাশি করেন। এ ঘটনায় সজলকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টির প্রতিবাদ করেন ফখরুল ইসলাম। এ সময় আসামি স্মরণ, লাবিব ও রবিনকে চড়-থাপ্পড় মারেন সজল।
সে ঘটনার আক্রোশে স্মরণ, লাবিব ও রবিন জামায়াত নেতা সজলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারা আরও ১০-১২ জনের সহযোগিতায় গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে নামাজে যাওয়ার সময় পথে সজলকে গতিরোধ করে এলোপাতাড়িভাবে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করেন। পরে রক্তাক্ত সজলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সেই ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে এসআই মফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে এজাহার করেছেন বলেও জানানো হয়।