শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ শিক্ষা

শিহাব আহমেদ শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, আপ্লুত শিক্ষার্থী ও অভিভাবক


প্রকাশ :

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে ‘শিহাব আহমেদ শিক্ষাবৃত্তি-২০২৫’ ১৮ জন দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীকে তুলে দেওয়া হয়েছে।

তুরস্ক প্রবাসী সমাজসেবক শিহাব আহমেদ নিজ উদ্যোগে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা- পাটগ্রাম উপজেলার অসচ্ছল পরিবারের মেধাবী গরীব, অসহায় এবং সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীদের এ শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করেন। 

শনিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পাটগ্রাম মহিলা ডিগ্রি কলেজের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে শিহাব আহমেদ শিক্ষাবৃত্তি-২০০৫ ও সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিন পাটগ্রাম উপজেলার ১৮ জন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষায় অধ্যায়রত শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষাবৃত্তির চেক, ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়। 


অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- শিহাব গ্রুপ অব কোম্পানির পরিচালক নুর নবী। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষাবৃত্তির চেক, ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন তুরষ্ক প্রবাসী, আন্তর্জাতিক তরুণ উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, সমাজসেবক ও শিহাব আহমেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যপ্রার্থী শিহাব আহমেদ। 

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন- হাফেজ রফিকুল ইসলাম, নর্থবেঙ্গল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের প্রভাষক আতিক হোসেন, শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থী লালমনিরহাট সরকারি কলেজের অনার্স প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী বিজয় আলম, সরকারি আলীমুদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থী পপি রানী ও শিহাব মার্টের পক্ষে আরিফুজ্জামান প্রমুখ। 

বক্তারা শিহাব আহমেদের নানামুখী ঊন্নয়নমূলক কাজের প্রসঙ্গ তুলে করে বলেন, ‌‘ব্যক্তি শিহাব আহমেদ জিরো থেকে হিরো হয়েছেন। তার লেখাপড়া চালাতে বাজারে সব্জি বিক্রি করেছেন। খেয়ে না খেয়ে লেখাপড়া করেছেন। তুরষ্ক সরকারের শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে তুরষ্কে গিয়ে মুচি, হোটেল বয়, রাজমিস্ত্রির কাজ করেছেন। অনেক পরিশ্রমের পর এখন তিনি প্রতিষ্ঠিত একজন সফল নাগরিক। তিনি শিক্ষা-দীক্ষা বৃদ্ধিতে মানুষের জন্য নিরলস কাজ করে চলেছেন। 

এ সময় শিহাব আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, অনেকে মনে করেন শিহাব আহমেদ একদিনে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে- কিন্তু বাস্তবতা অনেক কঠিন। আমার বয়স যখন ১০ বছর। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি তখন থেকে আমার জীবনের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। আমি বড়খাতা বাজারে সব্জি বিক্রি করতাম। আমার জীবিকিা ও লেখাপড়ার খরচ নির্বাহের জন্য। কখনও ভ্যান চালিয়েছি। যখন কাজ পাইনি তখন ঢাকায় গিয়ে রিক্সা চালিয়েছি। গামের্ন্টে চাকুরি করেছি। আমি থেমে থাকিনি। আমি এসএসসিতে গোল্ডেন ৫ পাই। এ সময় সারাদেশের পত্রিকায়, অনলাইনে, টিভিতে সাংবাদিকেরা সংবাদ প্রকাশ করে যে শিহাব আহমেদ সব্জি বিক্রি করে এসএসসিতে গোল্ডেন ৫ পেয়েছে। আমার চেষ্টার কোনো কমতি ছিলনা। রংপুর কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হয়ে এইচএসসি সম্পন্ন করে তখন তুরষ্ক সরকারের শিক্ষাবৃত্তির জন্য আবেদন করি। বৃত্তি পেয়ে ২০১৬ সালে তুরুষ্কে যাই। সেখানে হারভাঙ্গা পরিশ্রম করি। আজ আমি প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যক্তি। 

তুরষ্কের পাসপোর্ট ফেলে দিয়ে আমি শিহাব আহমেদ হাতীবান্ধা- পাটগ্রাম উপজেলার মানুষদের পাশে নি:স্বার্থভাবে দাড়াতে এসেছি। সমাজ ও রাষ্ট্রকে বিনিমার্ণের জন্য মাঠে নেমেছি। আমার স্বপ্ন একটা প্রজন্মকে আমি তৈরি করে দিতে চাই। যারা আগামীর হাতীবান্ধা ও পাটগ্রামকে নের্তৃত্ব দিবে। এজন্য আমার কষ্ঠের, মেহনতের টাকা, রেমিটেন্সের টাকা দিয়ে স্কুলসহ নানান প্রতিষ্ঠান করে দিচ্ছি। 

তিনি শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন- আজ যে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হলো- তার শর্ত একটা তা হলো, আমি আপনার নি:স্বার্থভাবে হাত ধরতেছি। আমার কষ্টের, মেহনতের টাকা তুলে দিচ্ছি। আপনি শিক্ষা জীবন শেষ করে ও কর্মজীবনে গেলে আপনিও হাতীবান্ধা- পাটগ্রামের একজন গরীব, অসহায় পরিবারের সন্তানের হাত ধরবেন।

আমি আপনাদেরকে আমার স্বার্থের জন্য শিক্ষাবৃত্তি দিচ্ছিনা। আপনি শিক্ষা অর্জন করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এই এলাকার একজনের হাত ধরেন। - এসবের জন্য মাঠে নেমেছি।

‘’আমার মেয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। শিহাব আহমেদ শিক্ষাবৃত্তি পেল। এখন থেকে আমার মেয়ের লেখাপড়া করা সহজ হল। আমি উনার কাছে গর্বিত। উনি (শিহাব আহমেদ) পাশে থাকায় আমরা আনন্দিত’’- এভাবেই অনুভূতি জানাচ্ছিলেন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও মা মমেনা খাতুন। তিনি পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দা। 

শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া লালমনিরহাট সরকারি কলেজের অনার্স প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী বিজয় আলম অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন- শিহাব আহমেদ স্যারের শিক্ষাবৃদ্ধি পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। তিনি খুব ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। গরীব, অসহায় ও মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছে; তাদের মধ্যে এ শিক্ষাবৃত্তি তুলে দেওয়া খুব সুন্দর উদ্যোগ। আমরা খুব গরীব পরিবার থেকে উঠে এসছি। লেখাপড়া করতে অর্থের প্রয়োজন হয়, শিহাব আহমেদ স্যারের শিক্ষাবৃত্তি আমাদের অনেক উপকার করবে। যারা শিক্ষাবৃত্তি পেয়েছেন তাদের সবার উপকার হবে।