ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন যে, জাতীয় লিগের পঞ্চম রাউন্ড খেলে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ও আন্তর্জাতিক টেস্ট ফরম্যাটকে বিদায় জানাবেন ইমরুল কায়েস সাগর। সেই অনুযায়ী এই ফরম্যাটে নিজের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলতে খুলনা ডিভিশনের হয়ে 'হোম অব ক্রিকেট' খ্যাত মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ঢাকার বিপক্ষে খেলতে নেমেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
গতকাল বিদায়ি ম্যাচ খেলতে নেমে সতীর্থদের কাছ থেকে পেয়েছেন সংবর্ধনা। এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক দুই অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ আশরাফুল এছাড়া সাবেক টাইগার নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও এই সংবর্ধনায় হাজির হয়েছিলেন।
গেল বুধবার হঠাৎ নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তা দেন ইমরুল সেখানেই সাদা পোশাকে বিদায়ের ঘোষণা দেন তিনি। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখেন, 'বিদায় টেস্ট ক্রিকেট। আপনাদের ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞ।' এরপর গতপরশু সমর্থকদের উদ্দেশ্যে আরও একটি আবেগঘন বার্তা দেন তিনি। সেখানে জাতীয় দলের এই সাবেক ওপেনার দেশের ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানান। এ সময় নিজের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট এবং টেস্ট ক্রিকেটের ক্যারিয়ারের সমাপ্তির ম্যাচটি দেখতে সবাইকে আমন্ত্রণ জানান। সেই অনুযায়ী ইমরুলকে শনিবার বিদায়ি সংবর্ধনা দেওয়া হবে বিষয়টা জানাই ছিল। শনিবার দুপুরে লাঞ্চ বিরতিতে সম্মাননা দেওয়া হয় তাকে। দলের পক্ষ হতেও ইমরুলকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন নুরুল হাসান সোহান-মোহাম্মদ মিঠুনরা। পরে দলীয় ফটোসেশনেও দেখা যায় তাদের।
এর আগে ২০০৮ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ফরম্যাট দিয়ে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপান ইমরুল কায়েস। পরের মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে রুমফন্টেইন টেস্ট দিয়ে এই সংস্করণের ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন। অবশ্য মেহেরপুর থেকে উঠে আসা এই বাঁহাতি ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা শুরু করেন তারও আগে থেকে। ২০০৭ সালে খুলনায় ঢাকা বিভাগ বনাম খুলনা বিভাগ ম্যাচ দিয়ে এফসিতে অভিষেক হয় তার।
সব মিলিয়ে জাতীয় দলের হয়ে ৩৯ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন ইমরুল এর মধ্যে ৩ সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটিতে রান ১৭৯৭ সবশেষ ২০১৯ সালের নভেম্বরে ইডেন গার্ডেনে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সাদা পোশাকে টাইগারদের একাদশে দেখা গিয়েছিলো তাকে। এছাড়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩৭ ম্যাচে ২০ সেঞ্চুরি ও ২৭ ফিফটিতে মোট ৭৯৩০ রান করেছেন। এদিকে লাল বলকে বিদায় জানালেও আরো কয়েক বছর সাদা বলের ক্রিকেট চালিয়ে যাবেন বলে বাহাতি এই ওপেনার।
অন্যদিকে বিদায় ম্যাচটি সুখকর হয়নি ইমরুলের জন্য। এ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন খুলনার অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুন। আগে ব্যাট করতে নেমে ঢাকার বোলারদের তোপের মুখে পরে খুলনার ব্যাটাররা। ইনিংসে নামে বিপর্যয়, তাতে বাদ পরেননি ইমরুলও। প্রথম ইনিংসে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ রান। আর তার দল প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় মাত্র ১৭২ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৯ রানের ইনিংস খেলেছেন অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ মিথুন। ঢাকার বোলারদের মধ্যে সুমন সর্বোচ্চ ৬টি উইকেট নিয়েছেন। দুটি উইকেট নেন সালাউদ্দিন শাকিল। বাকি দুটি উইকেট ভাগাভাগি করে নেন এনামুল হক ও মাহফুজুর রহমান রাব্বি। যদিও ব্যাটিংয়ে নেমে খুব বেশি সুখকর অবস্থানে নেই ঢাকাও। মাত্র ৫৮ রান তুলতেই তিন উইকেট হারিয়ে দিন প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছেন তারা।