ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আইয়াল জামির ঘোষণা দিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত নিহত সব ইসরায়েলি বন্দির দেহ দেশে ফিরিয়ে আনা না হবে, ততক্ষণ গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে আইডিএফের যুদ্ধ শেষ হবে না। তিনি এই মন্তব্য করেন ২৭ অক্টোবর সোমবার আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের সামরিক সম্মেলনে, যেখানে লেফটেন্যান্ট কর্নেল স্তর থেকে শুরু করে সব অপারেশনাল ইউনিট কমান্ডার উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনটিকে আইডিএফ কর্তৃপক্ষ ‘ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও অভিজ্ঞতা মূল্যায়নের অংশ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে—এক ধরনের নতুন শিক্ষা প্রক্রিয়া, যেখানে সামরিক অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের প্রস্তুতির নির্দেশনা নির্ধারণ করা হচ্ছে। জামির জানান, আগামী সপ্তাহে রিজার্ভ বাহিনীর কমান্ডারদের নিয়ে একই ধরনের সভা অনুষ্ঠিত হবে।
জামির বলেন, আইডিএফ ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে, তবে অতীতের শিক্ষাগুলো কাঁধে নিয়ে যাবে। শিক্ষা গ্রহণ এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করা আমাদের নৈতিক ও পেশাগত দায়িত্ব — এটি আমরা সাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে করব। তিনি আরও যোগ করেন, এখন প্রধান দায়িত্ব হলো সৈন্যদের ও তাদের পরিবারের প্রতি যত্নবোধ জোরদার করা, সংগঠনগত শৃঙ্খলা কায়েম রাখা এবং সব সীমান্তে সামনে আসা নতুন চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলার প্রস্তুতি নিশ্চিত করা।
জামির স্পষ্টভাবে বলেন, যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি; নিহত বন্দিদের দেহ ফিরিয়ে আনার এই ‘পবিত্র মিশন’ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আইডিএফের অভিযান চলবে এবং হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত থাকবে।
সম্মেলনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যুদ্ধসংক্রান্ত অপারেশনাল ও গোয়েন্দা তথ্য উপস্থাপন করেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজও উপস্থিত কমান্ডারদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। সেশনটির অন্যতম অংশ ছিল একটি প্যানেল আলোচনা, যাতে অংশ নেন মুক্তিপ্রাপ্ত দুই বন্দি এমিলি দামারি ও লিরি আলবাগ, নিহত সৈনিক তাল হাইমির স্ত্রী এলা হাইমি এবং নিহত ক্যাপ্টেন ড্যানিয়েল পেরেজের বাবা রাব্বি দোরন পেরেজ।
তাল হাইমি এবং ড্যানিয়েল পেরেজ—দুজনেই ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর নিহত হন; তাদের দেহ তখন হামাস গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই মাসের শুরুতে আইডিএফ ওই দেহ উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনে, যা সম্মেলনে আবেগ-সংবেদনায় স্মরণ করা হয়।
আইডিএফের মতে, সম্মেলনটি গাজা যুদ্ধের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ, ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণ এবং সৈন্যদের মানসিক ও কাঠামোগত প্রস্তুতি জোরদার করার উদ্দেশ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইহার মাধ্যমে তারা নৈতিক দিক, অপারেশনাল শিক্ষা এবং পরবর্তী পরিকল্পনার রূপরেখা নির্ধারণে কাজ করবে—এটাই মূল কথা।