বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এটি ভারতের পূর্ব উপকূলে ব্যাপক তাণ্ডব চালাতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত হানার আগেই সোমবার (২৭ অক্টোবর) সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়েছে ভারত।
দেশটির জরুরি সেবার কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশ ও ওড়িশা উপকূলীয় অঞ্চলে সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গলবারের মধ্যে ‘মোন্থা’ আরও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। দিনের শেষ দিকে এটি অন্ধ্র প্রদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্ধ্র প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, কাকিনাড়া জেলার উপকূলবর্তী এলাকাগুলো থেকে মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের হিসাবে, নিম্নাঞ্চলগুলোতে বসবাসরত প্রায় ৩৯ লাখ মানুষ এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশার জেলেদেরও সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে প্রায়ই এমন ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়। ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে ওড়িশায় আঘাত হানা এক সুপার সাইক্লোনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ মারা যান—যা এখনো ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে স্মরণীয়।
এদিকে, তামিলনাড়ুর কিছু জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়ায় জনগণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। রাজধানী চেন্নাইও বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে।
অন্যদিকে, পার্বত্য দেশ নেপালের দুর্যোগ কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সম্ভাব্য বৃষ্টিপাত ও তুষারপাতের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে। চলতি মাসেই দেশটিতে ভারী বৃষ্টিপাতজনিত বন্যা ও ভূমিধসে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।